কোনও প্রত্যাশার চাপ শুভমিন গিলের উপর চাপিয়ে দেয়নি ভারতীয় বোর্ড। এমন কী অধিনায়ক করার আগে তঁাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেটুকু করা সম্ভব তাই যেন করতে পারেন গিল। বেশি কিছু ভাবতে গিয়ে যেন নিজের উপর অগাধ চাপ না নিয়ে ফেলেন।
দলের নেতা হিসেবে যখন গিলকে পছন্দরের তালিকায় এক নম্বরে রাখা হয়, তখন তঁার সঙ্গে বসেছিলেন কোচ গৌতম গম্ভীর ও নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান অজিত আগরকর। দুজনেই গিলের কঁাধে নেতৃত্বের ভার তুলে দেওয়ার আগে জানিয়ে দেন, তঁার কাছে তঁারা বিশাল কিছু প্রত্যাশা করছেন না। গিল সেই মুহূর্তের কথা বলতে গিয়ে জানান,“তঁারা আমার কাছে এসে প্রথমে জানিয়ে ছিলেন, একজন নেতা হিসেবে যেন নিজেকে তুলে ধরতে পারি। এর বেশি কিছু নয়। তঁারা আমাকে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, আমার কাছে তঁাদের বিশাল কোনও প্রত্যাশা নেই। সেভাবে আশাও করছেন না। শুধু বলা হয়েছে, আমি যা করতে সক্ষম সেটাই যেন ঠিকমতো করতে পারি।” ভারতের নুতন অধিনায়ক দুজনের বক্তব্যকে শ্রদ্ধা জানিয়েও বলে দেন, “মানছি, তঁারা আমার কাছে বিশাল কিছু চাইছেন না। কিন্তু নিজের কাছে নিজে তো কিছু চাইতেই পারি। সেই প্রত্যাশাকে নিশ্চয় দূরে সরিয়ে রাখতে পারিনা। নিজের কাছে চাওয়া তাই থেকে গিয়েছে।”
টেস্ট দলের অধিনায়ক যে তিনি একদিন হতে পারেন তা কখনও স্বপ্নেও ভাবেননি। এমন কী তঁার বাবাও তেমন আশা করতেন না। তাই তঁাকে নিয়ে য়খন মিডিয়ায় জোর আলোচনা চলছে তখনও তিনি পরিবারের কাউকে জানাননি। বাবাকে সেইদিন জানিয়ে ছিলেন যেদিন সরকারীভাবে তঁার নাম অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা হল। “শুধু আমি কেন, বাবাও কোনওদিন স্বপ্ন দেখেননি আমি ভারতীয় টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দেব। আমি বরাবর একটাই স্বপ্ন দেখতাম, ভারতের হয়ে খেলব। ম্যাচ জেতানোর একজন ভাগীদার হব। এর বেশি কিছু নয়। আমি জানলেও বাবাকে কোনওদিন বলিনি যে আমার হাতে নেতৃত্বের ভার তুলে দেওয়া হতে পারে। ঠিক করেছিলাম, সরকারীভাবে ঘোষণা হলে তবেই বাবাকে বলব। কিন্তু বাবা যখন জানতে পারেন, আমাকে ভারতের অধিনায়ক করা হয়েছে তখন দুজনের মধ্যে খুব আন্তরিক কথাবার্তা হয়েছিল।” স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে একথা বলেন শুভমন গিল।
আগামী সপ্তাহে গিল নেতা হিসেবে পরীক্ষায় বসবেন।
ভারতীয় অধিনায়ক আগামী সপ্তাহে ৫ টেস্টের নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করবেন। একজন নেতা হিসবে তিনি দলের কাছ থেকে কী চান জানতে চাইলে গিল বুঝিয়ে দিয়েছেন, দলগত সংস্কৃতি গড়ে তোলাই হবে তঁার একমাত্র লক্ষ্য। সেই সংস্কৃতির প্রধান উদ্দেশ্য হবে, প্রত্যেকে যেন খোলা মনে বিরাজ করে। “দেখুন আমার যেখানে অধিনায়ক হব বলে ভাবিনি তাই কী ট্রফি পেলাম বা পুরস্কার পেলাম কিনা তা কখনও বড় হয়ে দেখব না। আমার একটাই লক্ষ্য থাকবে দলের মধ্যে একটা সংস্কৃতি গড়ে তোলা। যেখানে সকলে যেন ভাবতে পারে, আমি দলের একজন নির্ভরযোগ্য সদস্য। তাছাড়া সকলে যেন খুশি মনে থাকে। মনের মধ্যে কেউ যেন অন্যকিছু পুষে না রাখে।” জানিয়েছেন গিল।
গিল দলের নেতা হিসেবে আরও চান, সকলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জন্মানো। সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের মনের মধ্যে তার নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করানো। “জানি, কঠিন পরিবেশের মধ্যে নিজেকে নিয়ে আসতে হবে। সামনে প্রচুর প্রতিযোগিতা আসবে। প্রচুর সংখ্যক ম্যাচ খেলতে হবে আমাদের। একই দল থাকবে না। দলও পাল্টাবে। আমি আমার লক্ষ্যে অবিচল থাকতে চাই। সবসময় চাইবো নিরাপদ পরিবেশ একটা তুলে ধরা। প্রতিটি ক্রিকেটারকে তার ক্ষমতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করার চেষ্টা চালাব। বোঝাব তার ক্ষমতার উপর যেন অগাধ অাস্থা থাকে। আত্মবিশ্বাসী করার চেষ্টা থাকবে। একজন দলের নেতা হিসেবে যদি এইসব কাজ ঠিকমতো করতে পারি তাহলে ভাববো আমার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলির মধ্যে অনেক কিছু করে ফেলেছি।” বলেন গিল।