ক্লাব বিশ্বকাপে জয় দিয়ে শুরু করল চেলসি। লস অ্যাঞ্জেলস এফসি-কে ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে। প্রথমার্ধে ৩৪ মিনিটে প্রথম গোলটি করেন পেদ্রো নেটো। দ্বিতীয় গোলটি করেন এঞ্জো ফার্নান্ডেজ। বিরতির পর। চেলসির জয়ের চেয়ে আলোচনায় বেশি উঠে এলো মার্সিডিজ বেঞ্চ স্টেডিয়াম ফঁাকা অবস্থায় পড়ে থাকা নিয়ে। ৭১ হাজার আসন বিশিষ্ট এই স্টেডিয়াম। অথচ সরকারীভাবে ঘোষণা হয়েছে ২২ হাজার ১৩৭জন স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেছেন। পুরো স্টেডিয়াম বলতে গেলে ফঁাকাই পড়ে ছিল। ফলে ম্যাচের চেয়ে স্টেডিয়াম ফঁাকা পডে় থাকা নিয়েই জোর আলোচনা চলছে। যথারীতি শুরু হয়ে গিয়েছে তীব্র সমালোচনা।
প্রশ্ন হল, এমন ফঁাকা স্টেডিয়াম থাকলো কেন? তাহলে কি ধরে নিতে হবে ফুটবলের প্রতি সেই আকর্ষণ নেই আমেরিকানদের? নাহলে তঁারা মাঠে খেলা দেখতে আসবেন না কেন? কিন্তু এ কথাও খাটে না। যেহেতু অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ বনাম পিএসজি ম্যাচে দেখা গিয়েছে প্রায় ৮০ হাজার দর্শক এসেছিলেন খেলা দেখতে। আবার স্থানীয় দল এই মাঠে খেলেছে? সুতরাং স্থানীয় দলকে সমর্থন জানাতে অনেকে মাঠে আসেন। প্রশ্নের উত্তর ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। ফঁাকা মাঠে খেলা নিয়ে চেলসি কোচ এনজো মারসেকা জানিয়ে দিয়েছেন, ফঁাকা স্টেডিয়ামে খেলতে হয়েছে বলে, তঁাদের মনে কোনও প্রভাব পড়েনি। “দিনের শেষে আমরা একজন পেশাদার। তাই ফঁাকা না ভর্তি মাঠে খেলা হল তাই নিয়ে দলের কেউ মাথা ঘামাতে চায়না। আমার মনে হয় একটা উদ্ভট পরিবেশের মধ্যে খেলা হচ্ছে। ফলে দর্শকরা খেলা দেখতে সেভাবে মাঠে ভিড় জমাচ্ছেন না।” বলেছেন মারসেকা।
খেলার আগে টিকিটের দাম ধরা হয়েছিল অনেক বেশি। ম্যাচের আগে সেই টিকিটের দাম কমিয়ে করা হয় ৩৭ পাউন্ড। আবার খেলা চলাকালীন সেই টিকিটের দাম অনলাইনে কমিয়ে নিয়ে আসা হয় ২৬ পাউন্ডে। তবে স্টেডিয়ামে দর্শকদের নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। এমনিতেই ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে দর্শকরা আগ্রহী নয় বলে প্রচার করা হচ্ছিল। চেলসি ম্যাচের পর নিশ্চয় সেই মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যেতে বাধ্য।
চেলসি ম্যাচ। অথচ স্টেডিয়াম ফঁাকা।
এই মাঠে যে দর্শকরা খেলা দেখতে তেমন আগ্রহী নয়, তাও বলা যাবে না। যেহেতু দু-বছর আগে প্রিমিয়ার লিগ সামার সিরিজ নামে একটা প্রতিযোগিতা আমেরিকায় হয়েছিল। সেই টুর্নামেন্টে চেলসি বনাম নিউক্যাসেলের ম্যাচ এই মাঠে হয়। প্রায় ৭০ হাজার দর্শক এই মাঠে খেলা দেখতে এসেছিলেন। আসলে দর্শক সংখ্যা কমে যাওয়ায় উত্্কন্ঠা বাড়ছে অন্য জায়গায়। সামনের বছর বিশ্বকাপ। এখানেই খেলা বেশি হবে। তাহলে কি বিশ্বকাপ আমেরিকানদের হৃদয়ে তেমন সাড়া ফেলতে পারবে না? দর্শক সংখ্যা কমার পেছনে কারণ হিসেবে যা উঠে আসছে তার প্রধান ও মূল বিষয় হলো, সময় একটা ফ্যাক্টর হয়ে দঁাড়াচ্ছে। প্রচুর গরম এখন আমেরিকায়। তারউপর খেলা ছিল স্থানীয় সময় বিকেল ৩টেয়। তাই ২২ হাজার দর্শকের উপস্থিতি দেখে অনেকে চমকে উঠছেন। তাছাড়া নতুন ধরনের টুর্নামেন্ট। সামনে আছে বিশ্বকাপ। তাই অর্থ খরচ করে ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে কেউ তেমন আগ্রহী নন। বরং পয়সা জমিয়ে আগামী বছরের বিশ্বকাপকে ভালমতো উপভোগ করতে আগ্রহী আমেরিকানরা। এছাড়া টিকিটের দামও একটা ফ্যাক্টর হয়ে দঁাড়াচ্ছে। তাছাড়া নতুন ধরনের টুর্নামেন্ট হওয়া সত্ত্বেও তেমন প্রচার করেনি ফিফা। গ্রুপ পর্বের খেলা বলে অনেকে এই ম্যাচে থাকতে খুব একটা আগ্রহী নয়। যাইহোক না কেন, এই নিয়ে এখনই আলোচনা অনেকে চাইছেন না। তঁাদের মতে, প্রতিযোগিতা শেষ না হওয়া অব্দি এখনই এই নিয়ে সমালোচনা করা ঠিক হবে না।