যশপ্রীত বুমরা যদি সব ম্যাচ না খেলেন তাহলে ভারতের মস্তবড় ক্ষতি হবে। এমন কথা সরাসরি জানিয়ে দিলেন, ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক গ্রাহাম গুচ। ২০ জুন থেকে লিডসে শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ড-ভারত প্রথম টেস্ট। ভারতীয় দল ইংল্যান্ডের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য প্রায় দু-সপ্তাহ ধরে সেখানে প্র্যাকটিশ করছে। এমন কী নিজেদের মধ্যে একটা প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছে। সব মিলিয়ে ভারতীয় দল প্রস্তুত। কিন্তু গুচ মনে করছেন, যশপ্রীত বুমরার উপর ভারতীয় দলের সাফল্য পাওয়া না পাওয়া অনেকটা নির্ভর করছে।
রোহিত শর্মা নেই। নেই বিরাট কোহলি। দুই সিনিয়রকে বাদ দিয়ে ভারতের পক্ষে কি ঘুরে দঁাড়ানো সম্ভব হবে? দলকে নেতৃত্ব দেবেন এমন একজন যিনি ভারতীয় দলের হয়ে খুব বেশিদিন খেলেননি। এমন কী দলে প্রচুর অনভিজ্ঞ ক্রিকেটারে ভরা। সেই জায়গায় দঁাড়িয়ে ভারতের পক্ষে ভাল কিছু করা সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে গুচ জানিয়ে দিলেন, “একটা কথা স্পষ্ট বলি, একটা দরজা বন্ধ হলে আর একটা দরজা খুলে বেরিয়ে যেতে হয়। এখন তরুনদের ভাল কিছু করার জন্য নিজেদের উজাড় করে দিতে হবে। রোহিত, বিরাটদের অভাব পূরণ করা খুব একটা সহজ নয়। তাদের অভাব পূরণ করতে হবে তরুন-তুর্কিদের। তবে ভারতীয় দলের কাছে বুমরা একটা বড় ফ্যাক্টর। যদি বুমরা না খেলে তাহলে ভারতের পক্ষে ম্যাচ বের করানো সহজ হবে না। বড় ক্ষতি হয়ে যাবে ভারতের। বিশ্বমানের বোলার। তবে চাপ কাটানোর জন্য তরুণদের বাড়তি দায়িত্ব নিতেই হবে।” অধিনায়ক গিল সম্পর্কে তঁার জবাব হল, ঠিক নিজেকে তুলে ধরবেন গিল। নেতা হিসেবে তিনি যে সব সামলে নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন, তাও জানিয়ে দিলেন গুচ।
খেলতে নামার আগে গিলকে কি পরামর্শ দেবেন জানতে চাইলে গুচ বললেন,“আমি জানি ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব তার হাতেই তুলে দেওয়া হয় যিনি ভাল পারফর্ম করছেন। তাই তাকে সম্মান দেওয়ার জন্য তঁার হাতে নেতৃত্বের ভার তুলে দেওয়া হয়। ভারতে যেহেতু ক্রিকেট হল প্রধান খেলা তাই দলের ১০জনকে তিনি নেতৃত্ব িদচ্ছেন না। মাথায় রাখতে হবে, এই খেলার আপনি অধিনায়ক। তাই দেশের একজন রোল মডেল হিসেবে নিজেকে তুলে ধরা খুব প্রয়োজন। দেশের সব শ্রেণীর কাছে আপনাকে রোল মডেল হিসেবে তুলে ধরার দরকার আছে।” ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়কের মতে, গিল যেন কখনও চাপ অনুভব না করে। তঁার মতে, নিজের মতো করে সবকিছু ভাবতে হবে। কাউকে অনুসরণ করা উচিত হবে না। “সেই অধিনায়ক সফল বলে বিবেচিত হয় যে ভাল পারফর্ম করতে পারে। যদি ভাল খেলতে পার তাহলে তোমার কাজ অনেকটা হাসিল হয়ে গেল। পারফর্ম করলে তোমার অধিনায়কত্ব সেখানে গৌণ হয়ে যায়। তোমার কথাগুলো তখন বাকিদের অনুপ্রাণিত করতে বাধ্য।” বক্তা গুচ।
ভারতীয় দল নিয়ে এই মুহূর্তে সকলে বলছেন। ভুলে গেলে চলবে না, ইংল্যান্ডের কাছেও এই টেস্ট সিরিজ প্রচন্ড চাপের। শেষ দু-দলের সাক্ষাতে দেখা গিয়েছে, ইংল্যান্ড মোটেই সুবিধে করতে পারেনি। বাজবল ক্রিকেট এখন ইংল্যান্ডের প্রধান অস্ত্র। যেখানে আক্রমণের ঢেউ তুলে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করা যায়। গুচ মনে করছেন, এই খেলা পরিস্থিতি বুঝে হওয়া উচিত। খেলতে হয় বলে খেলতে হবে, তার কোনও মানে নেই। গুচ বলছিলেন, “আমি যে ধরনের ক্রিকেট খেলতে ভালবাসতাম সেই ধরনের খেলা বর্তমান দল খেলছে। যেমন উত্তেজনা থাকছে, আবেগপূর্ন হয়ে উঠছে, সব ঠিক আছে। বর্তমান ইংল্যান্ড দলের যদি রেকর্ড দেখেন তাহলে বলব বেশ কিছু সিরিজে ভাল খেলেছে ইংরেজরা। আবার কিছু সিরিজে মোটেই সুবিধে করতে পারেনি। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, আক্রমণাত্মক খেলতে হচ্ছে বলে সবসময় সেই নিয়মের পথে হঁাটবো তার কোনও মানে নেই। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে হবে। তবে ইংল্যান্ড যেভাবে টেস্ট ম্যাচ খেলছে তাতে আমার সায় আছে। মাথায় রাখতে হবে, টেস্ট ক্রিকেট এখন ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সামনে প্রচন্ড চাপে।”
বাজবল ক্রিকেট ভারতীয় দলকে সুবিধে করে দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে গুচ জানিয়ে দিলেন, “বেন স্টোকস সবসময় চেয়ে এসেছে টেস্ট ম্যাচ ফয়সালা হোক। জেতার জন্য ঝঁাপাবে প্রথমে। যদি জেতার বদলে হারতে বসে তাহলেও পিছু হঠে না। পঁাচ দিনের খেলায় বড় ব্যাপার হল, জয়ের পথ তৈরি করা। প্রথম দিন থেকে যে জিততে পারবে তার কোনও মানে নেই। দুই-তিন এমন কী চার দিনের পর দেখা গেল ম্যাচের গতিপ্রকৃতি ঘুরে গিয়ে তুমি হয়তো জয়ের দোরগড়ায় পৌছে গেলে। সুতরাং অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার পথ বেছে নিলে ভাল করবে।”