মঙ্গলবার ক্লাব বিশ্বকাপে বুড়োদের ভেল্কি দেখল বিশ্ব ফুটবল। একদিকে থিয়েগো সিলভা, ফাবিও। অন্যদিকে মস্তবড় খেল দেখালেন সের্জিও রামোস। সব মিলিয়ে দিনটা ছিল যেন বুড়োদের।
বরুসিয়া ডর্টমুন্ড মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিলের ফ্লুমিনেস-এর। সকলে ধরেই নিয়েছিলেন ডর্টমুন্ড জিতবে। জেতারও কথা। ব্রাজিলের দলটায় ছিল বুড়োদের নিয়ে ঠাসা। অথচ পুরোন চাল ভাতে বাড়ে-প্রচলিত কথার মতোই বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটালেন ফ্লুমি্নেজের বয়স্করা। কোনও সন্দেহ নেই, বল দখলে অনেক বেশি এগিয়ে ছিল ডর্টমুন্ড। কিন্তু সহজ সুযোগ নষ্ট করেছে বেশি ফ্লুমিনেজ। তবে এসব ঘটনা কেউ মনে রাখেনি। বরং ম্যাচের শেষে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন দুজন। একজন হলেন সেন্টার ব্যাক থিয়াগো সিলভা, গোলকিপার ফাবিও হলেন অপরজন। এই দুজনের বয়সের যোগফল করলে দঁাড়াচ্ছে ৮৪ বছর। ফাবিওর বয়স হল ৪৪। সিলভার ৪০। অথচ দুজন কী দাপটের সঙ্গে ৯০ মিনিট লড়াই চালিয়ে গেলেন। মনে হচ্ছিল, দুই স্তম্ভ যেন দঁাড়িয়ে আছেন ফ্লুমিনেজের রক্ষণ সীমানায়। ম্যাচে যদি সিলভার খেলার পরিসংখ্যান দেখেন তাহলে না চমকে পারবেন না। বল দখলের লড়াইতে অর্থারত্্ ডুয়েলে সিলভা ৯বার জিতেছেন। বল ক্লিয়ার করেছেন ৭বার। শূন্যে বল দখলের লড়াইতে আটবার জিতেছেন তিনি। তারমানে ডর্টমুন্ড যতবার আক্রমণে এগিয়ে এসে গোল করার চেষ্টা চালিয়েছে ততবারই বাধা পেয়েছে সিলভার কাছে। তবু ডর্টমুন্ডের ফরোয়ার্ডরা সিলভাকে অতিক্রম করে গোলের কাছাকাছি যাননি তাতো নয়। বহুবার গিয়েছেন। শেষ প্রহরী হয়ে ফ্লুমিনেজকে বঁাচিয়ে দিয়েছেন গোলকিপার ফাবিও। বারবার সেখানে এসেই ধাক্কা খেয়েছে ডর্টমু্ন্ডের ফরোয়ার্ডরা। তিনটে নিশ্চিত পতন তিনি রুখে দিয়েছেন। একবার বয়সের কথা ভাবুন। ৪৪ বছর বয়সে কিনা গোলপোস্টের নিচে দঁাড়িয়ে প্রতিপক্ষের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন। মেটলাইফ স্টেডিয়াম মঙ্গলবার দেখল, বয়স একটা সংখ্যামাত্র। ম্যাচের শেষে গোলশূন্য ড্র থাকায় হতাশ হয়েছে ডর্টমুন্ডের ফুটবলাররা।
থিয়াগো সিলভা দেখালেন এখনও তিনি বুড়ো হাড়ে ভেল্কি দেখানোর ক্ষমতা রাখেন
ক্লাব বিশ্বকাপে অপর ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল মন্তেরেই-ইন্টার মিলান। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে হারার পর এই প্রথম কোনও প্রতিযোগিতা মূলক খেলায় নামলো মিলান। অথচ খেলায় ঘুরে দঁাড়ানোর তেমন ছাপ দেখা গেল না। ঘুরিয়ে বলা উচিত, মন্তেরই বয়স্ক সেন্টার ব্যাক রামোস যাবতীয় প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখে দিলেন একলাই। তবে শুধু রক্ষণে প্রতিপক্ষ দলকে রুখে দিয়েছেন তাই নয়, ফরোয়ার্ডেও অসাধারণ পারফর্ম করেছেন। মেক্সিকান ক্লাবটি একটা সময় বরং চাপে পড়ে গিয়েছিল মিলানকা। ইতালি ক্লাবকে খেলা শুরুর ২৫ মিনিটের মাথায় কর্ণার থেকে গোল করে প্রচন্ড চাপে ফেলে দেন রামোস। যতক্ষণ এগিয়ে ছিল সেই সময়টা চাপে পড়ে যায় ইন্টার মিলান। অবশেষে বিরতির কয়েক মুহূর্ত আগে (৪২ মিনিট) গোল করে মিলানকে সমতায় ফেরান লাওতারো মার্টিনেজ। তাই ম্যাচ শেষের বঁাশি যখন বাজে তখন খেলা ১-১ গোলে শেষ হয়।