সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় হারিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটারকে। জসপ্রীত বুমরাকে নিয়ে বাজিতে সম্ভবত জিতে গেলেন সৌরভ। ভারতের হেডিংলে টেস্টে বুমরাকে দলে রেখেছিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক। কিন্তু ব্রায়ান হজের মনে হয়েছিল, বুমরাকে প্রথম টেস্টে বাইরে রেখে এজবাস্টনে মাঠে নামাতে। কিন্তু ভারতীয় দলের প্র্যাকটিসে বুমরাকে দেখে একটা ছবি পরিস্কার যে নতুন সিরিজে বুমরা শুরু করছেন। পরের ঘটনা পরে দেখা যাবে। বুমরার সঙ্গে কে খেলবেন! সিরাজের টিকিট কনফার্ম। তৃতীয় পেসারের জায়গায় অর্শদীপের সঙ্গে প্রসিদ্ধ কৃষের একটা লড়াই হবে। আবহাওয়া দেখে ভারতীয় দল সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে প্রসিদ্ধর খেলার সম্ভাবনা বেশি।
এটা নিয়ে আলোচনা খুব বেশি নেই। আসল লড়াই ভারতীয় দলের সাত নম্বর জায়গা নিয়ে। সেখানে কাকে রাখা হবে। গম্ভীর জমানায় ভারতীয় দল আটজন ব্যাটসম্যান নিয়ে মাঠে নামার পক্ষে। সেক্ষেত্রে দুজন অলরাউন্ডার হতে পারে। একজনকে নিয়ে কথা নেই। আট নম্বরে জাদেজা থাকবেন। সঙ্গে তিনজন পেসার দলে ঢুকে পড়বেন। কিন্তু সাত নম্বরে একজন পেসার অলরাউন্ডারকে চাইছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তিনি কে হবেন! এখানে দুজন ক্রিকেটারের নাম উঠে আসছে। একজন নীতিশ কুমার রেড্ডি। আর একজন শার্দুল ঠাকুর। এঁদের মধ্যে থেকে একজন দলে ঢুকবেন। সেই একজন কে হবেন, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা।
গতবছর বক্সিং ডে টেস্টে মেলবোর্নে চমক দিয়েছিলেন নীতিশ রেড্ডি। তাঁর ব্যাটিং দাপটে ভারতীয় দল একটু ভদ্রস্থ জায়গায় নিজেদের দাঁড় করাতে পেরেছিল। নীতিশের সেঞ্চুরি স্বপ্ন দেখিয়েছিল আর একজন ইরফান পাঠানকে বুঝি ভারত পেয়ে গেল। ইরফান জাতীয় দলের বাইরে যাওয়ার পর একজন পেসার অলরাউন্ডারের খোঁজে নেমে কিছু করতে পারেনি ভারত। তাই নীতিশ আসার পর স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছিল। কিন্তু বল হাতে তেমন কিছুই তিনি করে দেখাতে পারেননি। তাই অলরাউন্ডারের তকমা বলতে তাঁর থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। সেই নীতিশের উপর গম্ভীররা এখনও ভরসা করছেন। ব্যাটিং হয়তো ঠিকঠাক করে দেবেন তিনি। কিন্তু বল হাতে কতটা সফল হতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কদিন আগে রবি শাস্ত্রী বলছিলেন, নীতিশ কি সারাদিনে ১২-১৪ ওভার বল করতে পারবে! যদি পারে তা হলে তাকে প্রথম টেস্টে দলে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু আমার তো তেমন কিছু মনে হয় না। নীতিশ একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে খেলে দিতে পারে। এর বাইরে আর কিছু নয়। আর নীতিশ বল করতে না পারলে ভারতকে চার বোলারে খেলতে হবে। যা সমস্যায় ফেলে দেবে গিলকে। রবির ভোট নীতিশের দিকে না থাকলেও গাভাসকর চাইছেন নীতিশ দলে থাকুক। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংও ভাল নীতিশের। কিন্তু এতে কি সমস্যা মিটবে!
এবার লর্ডের দিকে তাকানো যাক। যিনি সাত নম্বর জায়গার জন্য লড়াই করছেন। লর্ড বলতে শার্দুল ঠাকুরের কথা হচ্ছে। ভারতীয় দলের হয়ে খুব একট খারাপ খেলেননি শার্দুল। সেখান থেকে তাঁকে লর্ড বলে ডাকা হয়। তাঁর বোলিং নিয়ে কথা হবে না। হাতে ভাল সুইং আছে। যা ইংল্যান্ডের আবহাওয়ায় কাজে দেবে। আর ব্যাটের হাত খারাপ নয়। গত মরশুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে ভাল পারফরম্যান্স করেছেন শার্দুল। সেই কারনে তাঁকে জাতীয় দলে নিয়ে আসা হয়। এই তো কদিন আগে বুমরাদের বিরুদ্ধে দাপটে ব্যাট করে ১২২ রান করলেন। এই পারফরম্যান্স করে শার্দুল কি বোঝাতে চাইলেন, তাঁর উপর ভরসা করা যায়। তাই তিনিও দলে ঢুকে পড়ার ব্যাপারে অন্যতম দাবিদার।
সাত নম্বর জায়গার জন্য পাল্লা কার দিকে ভারি। উত্তরে বলা যায় যে কিছুটা হলেও এগিয়ে নীতিশ। তাঁর বোলিংয়ে খুশি মর্কেল। ভারতের বোলিং কোচ বলছেন, নীতিশের ম্যাজিক বল ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলবে। এ কথা শোনার পর গম্ভীর কি অন্যদিকে হাঁটতে পারবেন! এই একটা জায়গা নিয়েই এখন দলে আলোচনা চলছে। শেষ পর্যন্ত শিঁকে কার কপালে খোলে। সেটাই দেখার।