ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কথা মনে আছে তো ভারত অধিনায়ক শুভমান গিলের। ভারতীয় দল ইংল্যান্ড উড়ে যাওয়ার আগে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে তিন টেস্টের বেশি খেলতে পারবেন না বুমরা। সঙ্গে ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের দিকে নজর দিতে হবে। সেটা কি শুরু হয়ে গিয়েছে! প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের ইনিংস শুরু হওয়ার পর গিল বাধ্য হয়ে বুমরাকে যেভাবে ব্যবহার করছেন, তারপর একথা না উঠে পারছে না। এমন চললে বুমরা তিন টেস্ট খেলতে পারবেন তো! পাশে কাউকে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে দেখা না গেলে তিনি আবার চোটে কাহিল হবেন।
টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষে স্কাই স্পোর্টসে কথা বলতে গিয়ে জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী বলছিলেন, বুমরার পাশে কাউকে দেখতে পেলাম না। কেউ একজন বলল না যে আমি আছি। তুমি যতটা পার, চেষ্টা কর। বাকিটা আমরা সামলে দেব। কোথায় কি! একজনও এগিয়ে এল না। উল্টে রান দিয়ে ইংল্যান্ডকে ইনিংসকে সুবিধা করে দিল। বুমরা ১৩ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট পেল। বাকি চার বোলার দিল ১৫৪ রান। কোনও উইকেট নেই। তা হলে কি দাঁড়াল! ভারতীয় দলকে ম্যাচে চালকের আসনে বসাতে গেলে সেই বুমরাকে ছুটতে হবে। না হলে ব্যাটসম্যানরা যত রানই করুক না কেন, ভারত সুবিধা করতে পারবে না।
ভারতের ৪৭১ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিনের শেষে ইংংল্যান্ড ৩ উইকেটে ২০৯। এটা ৪ উইকেট হতে পারত। শেষ ওভারে বুমরার একটি শর্ট বল পুল মারার চেষ্টা করেন হ্যারি ব্রুক। বল ব্যাটের উপরের দিকের কানায় লেগে মিডঅনের দিকে যায়। সিরাজ পিছনের দিকে ছুটে সামনে ঝাঁপিয়ে ক্যাচটি ধরেন। ভারতীয় দলের উল্লাস থেমে যেতে বেশি সময় লাগল না। সেই ওভারে দুটি নো বল করেছিলেন বুমরা। আম্পায়ার নিশ্চিত হতে ব্রুককে থামিয়ে তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নেন। দেখা যায়, বলটি নো ছিল। সে যাত্রা বেঁচে যান ব্রুক। তারপরই খেলা শেষ হয়ে যায়।
তা হলে কি দাঁড়াল। উইকেট নিতে হলে গিলকে তাকিয়ে থাকতে হবে বুমরার দিকে। যা করার তিনি করবেন। বাকিরা আসবেন। মেডেন নেবেন বা রান দিয়ে ওভার শেষ রবেন। এভাবে একটা দল কতটা সামনের দিকে যেতে পারে। ইংল্যান্ডের মার্ক উড চোট থেকে সবে উঠে এসেছেন। তাঁকে এই সিরিজে নিয়ে আসা হলেও হেডিংলেতে তিনি নেই। খেলার শেষে বলছিলেন, বুমরা এখন বিশ্বের একনম্বর বোলার। ওর সামনে দাঁড়ালে ব্যাটসম্যানরা কেঁপে যায়। এটা ঘটনা, তার প্রমান দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের ইনিংসে দেখা গেল।
শুধু উড নন, দুদিন আদে প্রাক্তন অধিনায়ক ডেভিড গাওয়ার বলছিলেন, বুমরাকে মাঠের বাইরে রাখলে ব্যাটসম্যানরা খুশি হবে। আমি আজকের ইংল্যান্ড দলে থাকলে বুমরাকে খেলতে চাইতাম না। মনে হত কখন বুমরা বিশ্রামে যাবে। শুনছি বুমরা পুরো সিরিজ খেলতে পারবে না। তা হলে ইংল্যান্ড মানসিক দিক থেকে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে মাঠে নামতে পারবে। তাই ভারতীয় দলের উচিত, বুমরাকে ঠিকঠাক রেখে পুরো সিরিজ খেলানো। সেটাই ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে মঙ্গল হবে।
দ্বিতীয় দিনের খেলার মাঝে বুমরা মাঠ ছেড়ে বাইরে যান। ড্রেসিংরুমে গিয়ে সোজা কোচ গম্ভীরের পাশে বসে পড়েন। কি কথা হয়েছে তা কেউ জানেন না। তবে সতীর্থদের কথা নিশ্চয় তিনি বলেছেন। তাদের প্রত্যাশার কথা উঠতে বুমরা একরাশ হতাশা ছাড়া আর কিছু মেলে ধরতে পারেননি। এর বাইরে আর কি কথা থাকতে পারে!