চলে গেলেন দিলীপ দোশি। কদিন আগেও লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁকে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। সেদিন বোঝা যায়নি যে কদিন পর তিনি পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যাবেন। কিন্তু বাস্তবে সেটাই হল। হঠাৎ করে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সব শেষ হয়ে গেল।
আশির দশকের একেবারে গোড়ায় ভারতীয় ক্রিকেটে দেখা যায় দিলীপ দোশিকে। আম্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩২ বছর বয়সে প্রথমবার তাঁকে দেখা যায় ১৯৭৯ সালে। আসলে বিষেন সিং বেদির ছায়ায় তিনি ঢাকা পড়ে গিয়েছিলেন। যেমন ঢাকা পড়ে গিয়েচিলেন রাজিন্দর সিং ও পদ্মকর শিভালকরও। ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ভারতীয় দলের হয়ে দোশি খেলেন। এই সময়ে ৩৩টি টেস্টে ও ১৫টি ওয়ান ডে ম্যাচে তাঁকে খেলতে দেখা গিয়েছে।
ভারতের হয়ে দেরিতে অভিষেক হলেও তিনি অনেক উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছেন। সকলে তাঁকে একজন ম্যাচ উইনার হিসেবে চিনতেন। ২৮টি টেস্টে ১০০ উইকেটের ক্লাবের সদস্য হয়েছিলেন দিলীপ। ৩৩ টেস্ট খেলে পেয়েছিলেন ১১৪টি উইকেট। যার মধ্যে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন ছয়বার। ২৩৮টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ৮৯৮টি উইকেট পেয়েছিলেন। যার মধ্যে ৪৩বার পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন। ১০ উইকেট পেয়েছিলেন ছয়বার। আর ওয়ান ডে ক্রিকেটে ১৫টি ম্যাচে পেয়েছিলেন ২২টি উইকেট। তাঁর ক্রিকেট কেরিয়রে সব থেকে বড় সাফল্য ১৯৮১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মেলবোর্ন টেস্টে। ক্রিকেট কেরিয়রে সেরা পারফরম্যান্স বললেও ভুল হয় না। কপিল দেবের থাই মাসলে চোট ছিল। ইনজেকশন দিয়ে তিনি মাঠে নেমেছিলেন। আর দিলীপের পায়ের আঙ্গুলের হাড় ভাঙ্গার কারনে তীব্র ব্যথা অনুভব করেও মাঠে নেমেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেছিলেন, এই ম্যাচ ভারতীয় দল জিততে পারে। সেটাই শেষপর্যন্ত দেখতে পাওয়া য়ায়। কপিল ও দিলীপের বোলিং দাপটে অস্ট্রেলিয়া মুখ থুবড়ে পড়ে। ভারতও ম্যাচ জেতে।
দোশির মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন বোর্ডের প্রাক্তন সচির নিরজ্ঞন শাহ। বলেন, এই আমার জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ব্যক্তিগত ক্ষতিও বলা যেতে পারে। দিলীপ শুধু কিংবদন্তী ক্রিকেটারদের একজন ছিল না, আমার পরিচিত সেরা মানুষদের মধ্যে একজন ছিল। ওর মহৎ হৃদয়, সততা এবং খেলার প্রতি নিষ্টা একটা আলাদা জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল। দোশি যে শূন্যতা রেখে গিয়েছে তা ভাষায় প্রকাশের বাইরে।