কোনও বাধাই সৃষ্টি করতে পারল না অস্ট্রিয়ান ক্লাব সালজবুর্গ। একপ্রকার প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে শেষ ষোলোর ঠিকানা খঁুজে পেল রিয়াল মাদ্রিদ। ৩-০ গোলে জিতেছে রিয়াল। গোলগুলি করলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র, ফেদেরিকো ভালভের্দে ও গঞ্জালো গার্সিয়া। ভিনিসিয়াস শুধু গোল করলেন তাই নয়, করালেন ভালভের্দেকে দিয়ে। এইচ গ্রুপের অন্য খেলায় আল হিলাল ২-০ গোলে হারাল পাচুকাকে। ফলে রিয়ালের সঙ্গে পরবর্তী পর্যায়ে পৌছে গেল সৌদির ক্লাব।
রিয়ালের জয়ের নেপথ্যের নায়ক হয়ে রইলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। অসাধারণ খেলেছেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, বহুদিন পর তঁার পা থেকে গোল এলো। ৪০ মিনিটের মাথায় অসাধারণ ডিফেন্স ভেদ করা পাশ বাড়িয়ে ছিলেন জুড বেলিংহাম। দু-পাশে দুজন ডিফেন্স গায়ের সঙ্গে লেগে থাকলেও বাঁ পায়ের দুরন্ত শটে গোল করে যান তিনি। তখনই ম্যাচের ভাগ্য বলতে গেলে লেখা হয়ে যায়। তারপর বিরতির ঠিক আগে অতিরিক্ত সময়ের খেলায় গোল করে যান ভালভের্দে। দুরন্ত ব্যাকহিল পাশ দিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। সেই পাশ থেকে উরুগুয়ের তারকার গোল করতে কোনও সমস্যা হয়নি। ভিনিসিয়াসের এমন ব্যাকপাশ দেখে অনেকে স্মরণ করতে শুরু করেছেন গুতি রদ্রিগেজকে। এমন চোখ ধঁাধানো ব্যাকপাশ থেকে রিয়ালকে অনেক গোল এনে দিয়েছেন তিনি। যদিও তঁার নাম গোলদাতার তালিকায় থাকতো না। কিন্তু তঁার ব্যাকহিলের পাশ এখনও মনে অনেকে গেঁথে রেখে দিয়েছেন। ৮২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় রিয়াল। পরবর্তী সময়ে ফের একটি গোল করে স্প্যানিশ ক্লাব। এবার গোলটি করেন গঞ্জালো গার্সিয়া। খেলার বয়স তখন হয়ে গিয়েছিল ৮৪ মিনিট। বিরতির পর আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে রিয়াল। এক ডিফেন্ডারের ভুল থেকে বলটা পেয়ে যান গার্সিয়া। সেই বল থেকে গোল করতে কোনও সমস্যা হয়নি।
জুনিয়র গোল করতেই উদযাপনে নেমে পড়লেন রিয়ালের সতীর্থরা।
দল জিতছে, প্রি-কোয়ার্টারে পৌছে গিয়েছে দল। তবু এমবাপে বিহীন রিয়ালকে যেন নুন বিহীন তরকারির মতো মনে হচ্ছে। তিনি খেললে গোলের স্বাদ এবার পেয়েছেন সমর্থকরা। গ্রুপ পর্বের তিনটে ম্যাচ হয়ে গেল। কোনও ম্যাচে তঁার নামা সম্ভব হয়নি। এখন দেখার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ জুভেন্তাসের বিরুদ্ধে নামতে পারেন কিনা রিয়াল। মঙ্গলবার খেলা। অন্যদিকে আল হিলাল খেলবে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির বিরুদ্ধে। আগামী সোমবার খেলা।
বহুদিন পর রিয়ালের হয়ে গোল করলেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। শেষবার গোল করেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। ১৬ এপ্রিল আর্সেনালের বিপক্ষে। তারপর আর গোল করতে পারেননি জুনিয়র। ৮ ম্যাচ পর গোল পাওয়ায় যথারীতি উচ্ছ্বসিত ব্রাজিলিয়ান তারকা। সেই কারণে তিনি বলেই দিলেন, “গোল করে নিশ্চয় ভাললাগছে। আরও খুশি হয়েছি গোল করিয়ে। গোল করানোর পাশ বাড়াতে আমার পছন্দের তালিকায় এক নম্বরে থাকবে। সকলে ভেবেছিল সরাসরি শট নেব। কেউ ভাবেনি ফেদেকে পাশ বাড়াতে পারি। পেছন থেকে ফেদে বল বাড়ানোর জন্য চেঁচাতেই আর শট নেওয়ার ঝঁুকি নিইনি। সত্যি বলতে কী, আজকের খেলায় আমি দারুন সন্তুষ্ট।” ভিনিসিয়াস জুনিয়রও স্বীকার করে নিচ্ছেন, এই ধরনের ব্যাকহিল পাশ গুতি নামে ট্রেডমার্ক হয়ে রয়েছে। তাই ভিনিসিয়াসকে বলতে শোনা যায়, “আমার ব্যাকহিল পাশ থেকে ফেদের গোল করার মুহূর্ত ভিডিওতে দেখিনি। তবে ব্যাকহিল থেকে ফেদে গোল করার পর গুতির কথা মনে পড়ছিল। রিয়াল সমর্থকদের কাছে তিনি একজন কিংবদন্তী হয়ে রয়েছেন। তবে আমার ক্যারিয়ারে এমন সুন্দর মুহূর্ত খুব কম এসেছে। বিশেষ করে এমন অসাধারণ পাশ বাড়িয়ে গোল করানোর ভূমিকা এর আগে কখনও নিইনি।”