বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দক্ষিন আফ্রিকার কাছে হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে ঝামেলায় পড়েছে অস্ট্রেলিয়া। ঝামেলা বলতে ব্রিজটাউনে প্রথম টেস্টে তৃতীয় আম্পায়রের ভুল সিদ্ধান্তের শিকার তারা। শুধু তাদের কথাই বা বলা হবে কেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজও ভুল আম্পায়ারিংয়ের শিকার। টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষে প্রাক্তন ক্রিকেটার, বর্তমানে টিভি ভাষ্যকার ইয়ান বিশপ খোলাখুলিভাবে আম্পায়ারের কাজের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি জানি টিভিতে কমেন্ট্রি করতে গিয়ে এধরনের কথা বলা ঠিক নয়। তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ারের ভুলগুলি চোখে দেখ যায় না। একটা টেস্টে এত ভুল হলে কি বলার থাকতে পারে।
এর থেকেও ভয়ঙ্কর কান্ড ঘটালেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের কোচ ড্যারেন স্যামি। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি সরাসরি তৃতীয় আম্পায়ারের অ্যাড্রিয়ান হোল্ডস্টকের কাজের সমালোচনা করেছেন। তাঁর কর্মক্ষমতা, নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন, টেস্টের দুদিনে তিনি পাঁচটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা জানি যে এই নিয়ে কথা বলতে গেলে হয়তো জরিমানা বা তার থেকে কঠিন কোনও শাস্তি হতে পারে। আমার তো মনে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে কিছু একটা কি রয়েছে। না হলে এমন সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কেন। জানি না কর্তারা এ নিয়ে আলাদা করে কোনও কথা বলবেন কিনা। আমার চেষ্টা করছি, একটা জায়গায় উঠে আসতে। বোঝার চেষ্টা করছি কীভাবে সেটা সম্ভব। সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চলার মাঝে এমন সব উদ্ভট সিদ্ধান্ত এলে কি করার থাকতে পারে। আসলে আম্পায়রদের বিশ্বাস না থাকলে খোলা মনে কী করে খেলবে। সব সময় ভয় থাকে এই বুঝি আউট হয়ে যাবে। যেমন আমাদের চেজকে আউট দেওয়া হল। বল ব্যাটে লাগার পর কী করে এলবিডব্লু দেওয়া হল। না, এর কোনও ব্যাখ্যা আমাদের কাছে নেই।
তৃতীয় আম্পায়ারের তিনটি সিদ্ধান্ত ভীষণভাবে চোখে পড়ছে। যার মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুটি সিদ্ধান্ত আছে। শুরু থেকে বলা যেতে পারে। টেস্টের প্রথমদিন হোল্ডস্টক আউট দেননি ট্রাভিস হেডকে। যোশেফের বল হেডের ব্যাটে লেগে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। ফিল্ড আম্পায়ার বুঝতে পারেননি বলটি ঠিকভাবে ধরা হয়েছে কিনা। তিনি তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নেন। দেখা যায়, বল ঠিকভাবে ধরেছেন উইকেটরক্ষক সাই হোপ। কিন্তু হোলস্টক আউট দেননি। দ্বিতীয় সিদ্ধান্তটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে যায়। হ্যাজেলউডের বল চেজের প্যাডে লাগে। আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় অস্ট্রেলিয়া রিভিউ নেয়। স্নিকো মিটারে দেখা যায় চেজ আউট। কিন্তু হোল্ডস্টক আউট দেননি। পরেরটির কথা আগেই বলা হয়েছে। চেজকে যেভাবে তিনি আউট দিয়েছেন তা সত্যিই মেনে নেওয়া যায় না। এত ভুল! অবাক করার মতো ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন তৃতীয় আম্পায়ার হোল্ডস্টক। এবার কি তাঁর কোনও শাস্তি হতে পারে। ক্রিকেটাররা ভুল করলে শাস্তি হয়। এবার আইসিসির দেখা উচিত হলস্টক নিজের কাজে ভুল করেছেন কিনা। সেটা প্রমান হলে তাঁর শাস্তি কে দেবে! খেলার শেষে ম্যাচ রেফারি জাভাগাল শ্রীনাথের কাছে ছোটেন স্যামি। তাঁর সঙ্গে কি কথা হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে শ্রীনাথের ঘর থেকে বেরিয়ে আসার পর স্যামিকে প্রশ্ন করা হয় আপনারা কি সরকারিভাবে প্রতিবাদপত্র জমা দিচ্ছেন! না, স্যামি এর উত্তর দেননি। বলেছেন, আপনারা অপেক্ষা করুন। সব জানতে পারবেন। এখন কিছু বলা সম্ভব নয়।
এই বিতর্কিত ঘটনা বাদ দিয়ে টেস্ট কিন্তু জমে উঠেছে। অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে ১৮০ রানে অলআউট হয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে তারা ৪ উইকেটে ৯২ রান করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে করে ১৯০ রান। আপাতত ৬ উইকেট হাতে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ৮২ রানে এগিয়ে।