শুরুতেই বিধ্বংসী মেজাজে ইস্টবেঙ্গল। ঘরোয়া লিগের আত্মপ্রকাশেই প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করে দিল লাল-হলুদ শিবির। জিতে গেল ৭-১ গোলে। জোড়া গোল করেন জেসন টিকে। বাকি গোলদাতারা হলেন মনতোষ মাজি, সায়ন বন্দে্যাপাধ্যায়, ভানলালপেকা গুইতে, তন্ময় দাস, সুমন দে।
গতবছর কলকাতা লিগের ফয়সালা আদালত থেকে শোনার অপেক্ষায় ইস্টবেঙ্গল। আইএফএ আগেই ঘোষণা করেছে, ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু ডায়মন্ড হারবার রানার্স হওয়ার তালিকায় ঢুকে পড়াকে মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। তাই চলে গিয়েছে আদালতে। অথচ ঘরোয়া লিগের খেলা ফের শুরু হয়ে গিয়েছে। আইএসএলে বিধ্বস্ত হতে পারে, কিন্তু ঘরোয়া লিগে লাল-হলুদ শিবির ভিন্ন ভূমিকায়। যেখানে তারা প্রতিপক্ষ মোহনবাগানকে শক্ত চ্যালেঞ্জ ছঁুড়ে দিতে সক্ষম। কতৃত্ব জারি করে সবুজ-মেরুন শিবিরের উপর। লিগের চাকা ভালোমতো গড়িয়ে দিল রথযাত্রার দিন ইস্টবেঙ্গল। শুক্রবার নৈহাটি স্টেডিয়ামে উপস্থিত সমর্থকরা দেখলেন জেসন টিকে, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়রা মশাল জ্বালিয়ে দিলেন দাউদাউ করে।
গতবার প্রিমিয়ার ডিভিসনে উত্তীর্ণ হওয়া মেসারার্স এমনিতেই দুর্বল দল। তারা যে লাল-হলুদকে শক্ত চ্যালেঞ্জ ছঁুড়ে দেবে, অনেকে তা আশা করেননি। বাস্তবে ঘটে গেল তাই। ৯০ মিনিটের খেলায় মেসারার্স দু-তিনবার গোল করার জায়গায় চলে গিয়েছিল ঠিকই। বাকি সময়টা আধিপত্য বজায় রাখে ইস্টবেঙ্গল। শুরুতেই গোল করে দিয়েছিল কোচ বিনো জর্জের দল। অফসাইডের কারণে রেফারি বাতিল করে দেন। আরও একটা গোল করেছিল মেসারার্স। কিন্তু সেই গোলও অফসাইডের জন্য ন্যায্য বলে মানেননি রেফারি। পরবর্তীকালে মেসারার্সের সুরচন্দ্র সিংহের শট ক্রসবারে লাগে। ইস্টবেঙ্গল খেলার শুরুতেই গোল পেয়ে যায়। ভানলালপেকা গুইতের পাশ থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মনোতোষ মাজি। ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে দ্বিতীয় গোলটি দেন সায়ন বন্দে্যাপাধ্যায়। ভানলালপেকা গুইতে তৃতীয় গোলটি করেন। প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে এগিয়ে ছিল লাল-হলুদ শিবির। বিরতির ঠিক আগে সায়নের শট পোস্টে না লাগলে ব্যবধান আরও বাড়তো।
বিরতির পর বাকি চারটে গোল করে ইস্টবেঙ্গল। প্রথম গোলটি করেন তন্ময় দাস। পরিবর্ত হিসেবে নামা জেসন টিকে দলের হয়ে পঞ্চম গোলটি করেন। তার ঠিক দু-মিনিট পরেই ফের গোল করেন জেসন। পুরো গ্যালারি তখন জেসনের হ্যাটট্রিক দেখার অপেক্ষায় প্রহর গোনা শুরু করে দিয়েছিল। সেই আশা পূরণ করতে পারেননি জেসন। পরবর্তীকালে জেসন না পেলেও ্দলের হয়ে শেষ গোলটি করেন সুমন দে। দৃষ্টিনন্দন গোল করে যান সুমন। মেসারার্সের একমাত্র গোলদাতা অ্যান্ডি জাখারি। খেলার শেষে ইস্টবেঙ্গল কোচ বিনো জর্জ বলে গেলেন, জেসনকে জাতীয় দলে ডাকা উচিত। সেই সঙ্গে তিনি এও জানালেন, ৭-১ গোলে দল জিতলেও খেলায় বেশ কিছু ভুল-ত্রুটি থেকে গিয়েছে। আশা করছেন, সেই ভুলগুলো শুধরে দিলে দলের খেলা আরও ভাল হবে।
লিগের অন্য খেলায় কালিঘাট এসএলএ-পুলিশ এসি-র মধ্যে খেলা গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয়েছে। পাঠচক্র অনায়াসে ৩-০ গোলে হারিয়ে দিল রেলওয়ে এফসিকে। কলকাতা কাস্টমস ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে জর্জ টেলিগ্রাফকে।