খেলা ছিল ৯০ মিনিটের। প্রায় পঁাচ ঘন্টা পরে শেষ হলো চেলসি বনাম বেনফিকার ম্যাচ। সেই খেলায় চেলসি জিতল ৪-১ গোলে। প্রিমিয়ার লিগে খেলা ক্লাবটি চলে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে। এবার মুখোমুখি হবে পালমেইরাসের। যারা কিনা স্বদেশি দল বোতাফোগোকে ১-০ গোলে হারিয়েছে।
বিশ্ব ক্লাব কাপ তীব্র সমালোচনার সামনে পড়তে বাধ্য হল। হবে না কেন? একটা ম্যাচ যদি ৯০ মিনিটের বদলে পঁাচ ঘন্টায় শেষ হয় তাহলে সকলেই ক্ষুব্ধ হবেন। চেলসির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বন্ধ হওয়ার পেছনে অন্য কোনও কারণ ছিল না। স্রেফ ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হচ্ছিল। রেফারি স্লাভকো ভিনিচ খেলা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। তখন ৮৬ মিনিট খেলা হয়ে গিয়েছে। খেলার ফল চলছে চেলসি ১-০ বেনফিকা। সকলে তখন ধরেই নিয়েছিলেন, খেলা পরে শুরু হলেও চেলসির জয় সুনিশ্চিত। প্রায় ঘন্টা দুয়েক পরে যখন খেলা শুরু হয় তখনই ঘটে একের পর এক ঘটনা। ম্যাচের গতিপ্রকৃতি সেখানেই পাল্টে যায়। এক গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় ৯২ মিনিটে লালকার্ড দেখে বসেন বেনফিকার জিয়ানলুকা প্রেসতিয়ান্নি। সকলের তখন বদ্ধমূল ধারণা হয়ে গিয়েছিল, জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে এখন চেলসির কাছে স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। ফের ঘটলো মজার ঘটনা। যোগ করা সময়ের পঁাচ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পেয়ে যায় বেনফিকা। গোল করে যান পেনাল্টি থেকে দি মারিয়া। নির্ধারিত সময়ে খেলা ১-১ গোলে শেষ হলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা চালাতে বাধ্য হন রেফারি। প্রথম ১৫ মিনিটের খেলা গোলশূন্য ছিল। পরবর্তী ১৫ মিনিটে চেলসি ঝড়ে পুরোপুরি ধরাশায়ী হয়ে যায় বেনফিকা।
এরই মধ্যে কিক–অফ বাঁশির পর থেকে পেরিয়ে গেছে চার ঘণ্টার মতো। নকআউট পর্বের ম্যাচ হওয়ায় ফলের জন্য ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত আধা ঘণ্টায়। এই অংশের প্রথম ১৫ মিনিটে দুই দলই ছিল গোলহীন। তবে বিরতির পরের ১৫ মিনিটে টানা তিন গোল করে চেলসি। ১০৮ মিনিটে এনকুকু, ১১৪ মিনিতে নেতো আর ১১৭ মিনিটে ডেওসবারি-হল। ৮ মিনিটের ঝড়ে তখন তটস্থ দশা বেনফিকার। এই ম্যাচ ছিল অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার বেনফিকার হয়ে শেষ ম্যাচ। বেনফিকা চেয়েছিল মারিয়াকে বিদায় সম্ভাষণ মাঠে জানাবে। সবকিছু ভেস্তে যায় চেলসির শেষ মুহূর্তে চেগে ওঠা।
বেনফিকার হয়ে খেলা শেষ ম্যাচে হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলেন ডি মারিয়া।
প্রায় ৫ ঘন্টা ধরে খেলা চলায় ক্ষুব্ধ চেলসি কোচ মারেসকা। তঁার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের টুর্নামেন্ট করা উচিত হয়নি। মারেসকা বলছিলেন, “ক্রমাগত ম্যাচ স্থগিত করে দেওয়া হচ্ছে। তাও আবার এক-আধবার নয়, প্রায় ৭-৮বার হবে। এভাবে কখনও ফুটবল হতে পারে না। সম্পূর্ন নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি। বোধগম্য হচ্ছে না। এভাবে একটা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এমন ভাবে চলতে পারে দেখে সত্যি বলতে কী আঁর্তকে উঠছি। নিরাপত্তার কারণে মাঝে খেলা বন্ধ থাকতেই পারে। সেই সংখ্যাটা যদি ৭-৮বারের বেশি হয়ে যায় তখন যে কোনও মানুষের বিরক্তি জন্মাতে বাধ্য। আমার তো মনে হয় জায়গা বাছাই সঠিক হয়নি। তার ফলভোগ পেতে হচ্ছে।” ৪৮ দলের বিশ্বকাপ আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রে। বাকি দুটো দেশেও হওয়ার কথা। অনেকেই ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা এখন থেকে প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। বাকি দুটো দেশে খেলা হলেও মূল ও অধিকাংশ ম্যাচ হবে এখানেই। তাই ক্লাব ফুটবল বিশ্বকাপ খেলতে এসে বিরক্ত মনোভাব নিয়ে ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে। “” “” “”