প্যারালাল স্পোর্টস ডেস্ক: স্টবেঙ্গল থেকে কোনও ফুটবলার না নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছে মোহনবাগান। টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করছে, এবার ইস্টবেঙ্গল থেকে ফুটবলার নেওয়ার অর্থ নিজেদের আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগা। যেহেতু আইএসএল ও সুপার কাপে চূড়ান্ত ব্যর্থ লাল-হলুদ শিবির। তাই সবুজ-মেরুন শিবির মনে করছে, ইস্টবেঙ্গল থেকে কোনও ফুটবলার নিলে প্রকারন্তরে সেই দলকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। সেইজন্য দলের প্রথম সারির কর্তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতীয় ফুটবলার যদি কাউকে নিতে হয় তাহলে বর্হিরাজ্যের থেকে নেওয়া হোক। কখনও ইস্টবেঙ্গল থেকে নয়। মোহনবাগানের এই সিদ্ধান্ত রীতিমতো লাল-হলুদ শিবিরকে চূড়ান্ত অপমান করা। ভারতীয় ফুটবলে বরাবর মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল হল পরস্পরের শত্রু। কেউ কাউকে সূচগ্র মেদিনী ছাড়তে চায়না। বিশেষ করে দলবদলের সময় দুটি দলই চেষ্টা করে এসেছে, চিরশত্রুর ঘর ভাঙতে। অথচ এবার তার ব্যতিক্রম ঘটায় শুধু অবাক করার মতো বিষয় নয়, বরং প্রকারন্তরে ইস্টবেঙ্গলকে হেনস্থা করার লক্ষ্যে এগিয়ে গেল মোহনবাগান। গত কয়েকদিন ধরেই দলবদলের বাজারে রটে গিয়েছিল, পিভি বিষ্ণুকে নাকি মোহনবাগান প্রস্তাব দিয়েছে। শুধু তাই নয়, দলে নেওয়ার জন্য দারুন আগ্রহী। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতে টিম ম্যানেজমেন্টের এক প্রথম সারির কর্তা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “জানিনা কে বা কারা এসব রটাচ্ছে। তবে আমাদের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ইস্টবেঙ্গলের দিকে হাত বাড়াবার প্রশ্নই নেই। আইএসএল লিগ টেবিলে যারা নিচের দিকে আছে। যারা সুপার কাপে চূড়ান্ত ব্যর্থ। তাদের থেকে ফুটবলার নিতে যাব কোন দুঃখে? ভারতবর্ষে কি আর কোথাও সেই মানের ফুটবলার নেই? ইস্টবেঙ্গল থেকে যাকে নেওয়া হোক না কেন, দলের ফুটবলাররা এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেবে। ইতিমধ্যে প্রশ্ন তোলেনি তাতো নয়। তাই আমরা ঠিক করেছি, আর যাইহোক ইস্টবেঙ্গল থেকে কোনও ফুটবলারকে এবার নেব না।” মোহনবাগানে এবার লক্ষ্য একটাই, পুরোন দলকে ধরে রেখে এগোন।
দলের অধিকাংশ ফুটবলারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। তাই তাদেরকে রাখতেই হবে। বিদেশিদের মধ্যে গ্রেগ স্টুয়ার্টের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন গ্রেগের ভাগ্য মোহনবাগান কোচের উপর নির্ভর করছে। যদি কোচ সবুজ সঙ্কেত দেন তাহলেই দুজনকে রাখা হবে, নচেত নয়। দুটো সাইডব্যক নিতে চাইছে মোহনবাগান। আসলে শুভাশিস, আশিস রাই চোট বা কার্ড সমস্যার দরুন না খেলতে পারলে দলের মধ্যে সমস্যা বাড়ে। তাই এই দুজনকে সাপোর্ট করার জন্য নেওয়ার কথা ভাবছে মোহনবাগান। পাশাপাশি টিম ম্যানেজমেন্ট এও ভাবছে, যদি রিজার্ভ টিমে নজরকাড়া পারফরম্যান্স কেউ করে তাহলে তার সঙ্গে চুক্তি করে নেওয়া হবে। তখন আর বাইরে থেকে কাউকে আনা হবে না। মোহনবাগান অবশ্য আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যারা একবার সবুজ-মেরুন জার্সি ছেড়ে চলে যাবে তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে না। ভবিষ্যতে সে যতই ভালো খেলুক না কেন। “প্রীতম কোটাল হল সবচেয়ে বড় উদাহরণ। আমরা কোনওদিন প্রীতমকে ফিরিয়ে নেব না। যদি ভাল খেলে তাহলেও নয়। একটা কথা টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক করে ফেলেছে, যে বা যারা আমাদের ক্লাব ছেড়ে চলে যাবে তাদেরকে নিলে দলের মধ্যে একটা অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।
তবে হ্যঁা, আমরা যাদের ছেড়ে দিলাম তারা যদি ভাল খেলে তাহলে তাকে ফিরিয়ে নেওয়া যেতেই পারে।” বললেন টিম ম্যানেজমেন্টের এক প্রথম সারির সদস্য এমন কী টিম ম্যানেজমেন্ট এও ঠিক করেছে, যতটা সম্ভব নতুন বিদেশি নিয়ে আসা হবে। ভারতে খেলা চেনা মুখ আনার কথা ভাবা হচ্ছে না। গ্রেগ স্টুয়ার্টকে নিয়ে আসা হয়েছিল ঠিকই। খুব আহামরি খেলা ফুটবলারকে যদি নিতে হয় তাহলে আলাদা কথা। নাহলে ভারতে খেলা বিদেশিদের দিকে হাত বাড়াবেই না মোহনবাগান। আসলে দল ঠিক করেছে, নতুন বিদেশি নিয়ে এলে তার খেলায় একটা চমক থাকে। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা তার খেলা ধরতে ঠিকমতো পারেনা। ফায়দা তোলে দল। সেইজন্য এই সিদ্ধান্ত। তারমানে গ্রেগ স্টুয়ার্টকে যদি ছেড়ে দেয় মোহনবাগান তাহলে বিদেশ থেকে একজন নবাগতকে নিয়ে আসা হবে। দেখা বিদেশি দলে নেওয়া হবে না।