লা লিগায় এখন চলছে নক-আউটের খেলা। না, নক-আউট বলতে যা বোঝায় তা নয়। কিন্তু ড্র বা হেরে গেলেই সর্বনাশ। বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদ এখন একই ট্রাপিজের খেলায় মত্ত। একটু পদস্খলন ঘটলেই চিরশত্রু দল চলে আসবে ঘাড়ের উপর।
এমনিতেই বার্সা-রিয়াল একে অপরের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। ঠিক এমনই একটা মুহূর্তে বুধবার হেতাফেকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে রিয়াল। দলের একমাত্র গোলটি করেন তরুণ তুর্কি আরদা গুলেবে। এই জয়ের সুবাদে দুদলের মধ্যে পয়েন্টের ফারাক থাকল চার। বার্সেলোনা ৩৩ ম্যাচ খেলে পয়েন্ট অর্জন করেছে ৭৬। সেই জায়গায় একই ম্যাচ খেলে রিয়াল ৭২ পয়েন্টে দঁাড়িয়ে আছে। লা লিগায় রিয়ালের পরবর্তী ম্যাচ ৪মে। প্রতিপক্ষ সেল্টা ভিগো। তবে এই জয় পেয়েও আদৌ উচ্ছ্বাস নেই রিয়াল শিবিরে। কারণ একটাই, দলের দুই নির্ভরযোগ্য ফুটবলার ডেভিড আলবা ও এডুয়ার্দো কামাভিঙ্গা চোটের কবলে। অথচ আগামী শনিবার কোপা দেল রে-র ফাইনাল। যেখানে মুখোমুখি হবে রিয়াল-বার্সেলোনা।
ফাইনালের চেয়ে গুরুত্বপূর্ন হল, এই মরশুমে দু-দুবার বার্সেলোনার কাছে হেরেছে রিয়াল। তারউপর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেওয়ার পর রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলেত্তিকে নিয়ে সমালোচনা তুঙ্গে। রিয়াল সমর্থকরা ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়ছেন দলের পারফরম্যান্স দেখে। সেইজন্য আনচেলেত্তির চাকরি পাকা আর এখন বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দঁাড়ায় এখন সেটাই দেখার। তাই হেতাফের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলার পর রিয়াল কোচ আনচেলেত্তি হতাশার সুরে বলতে বাধ্য হয়েছেন, “আলবা ও কামাভিঙ্গার চোট কতটা গুরুতর এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। ২৪ ঘন্টা সময় দরকার। তারপর বোঝা যাবে কোথায় গিয়ে দুজনের চোট দঁাড়ায়। দুজনে মাংসপেশীর চোট বেশ ভালোই। তাই শনিবার দুজনের খেলা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।”
রিয়াল কোচ আলবাকে ৪৫ মিনিটের মাথায় তুলে নিতে বাধ্য হন। বঁা পায়ের পেশীতে চোট পেয়েছেন অস্ট্রিয়ান সেন্টারব্যক। পরিবর্ত হিসেবে তঁার জায়গায় আনচেলেত্তি নিয়ে এসেছিলেন কামাভিঙ্গাকে। কিন্তু কামাভিঙ্গাও ৮৫ মিনিটে চোট পেয়ে বসেন। হেতাফের মিডফিল্ডার লুইস মিলারকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে কামাভিঙ্গা চোট পান। কামাভিঙ্গা প্রথমে চেষ্টা করেছিলেন মাঠে থেকে খেলা শেষ করতে। কিন্তু ব্যথার কারণে আর তিনি মাঠে থাকতে পারেননি। মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। রিয়ালের ফুটবলার পরিবর্তন করা আর সম্ভব ছিল না। তাই খেলার বাকি অংশ দশজনে খেলতে বাধ্য হয়। রিয়ালের যা পরিস্থিতি এই মুহূর্তে দঁাড়িয়ে তাতে কাকে সেন্টারব্যাকে খেলানো হবে তাই নিয়ে সমস্যা বাড়ছে। হাতের কাছে একমাত্র রয়েছেন লেফট ব্যাক ফ্রান গার্সিয়া। যদি গার্সিয়াকে শেষমেশ নামান আনচেলেত্তি তাহলে তঁাকে আটকাতে হবে লামিনে ইয়ামালকে। সব মিলিয়ে সমস্যার পাহাড় রিয়ালের সামনে। না ভুল বললাম, রিয়াল নয় আনচেলেত্তির সামনে।