ছবিটা কেমন দাঁড়াল। একপক্ষ বোলিংয়ের ধার বাড়াতে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল ছোটানো ক্রিকেটারকে দলে নিয়ে এল। আর এক পক্ষ দলের সেরা ক্রিকেটারকে এজবাস্টন টেস্টে খেলাবে কিনা তা নিয়ে দ্বিধায়। বলা যায়, অনিশ্চয়তার মেঘ উড়ছে ভারতীয় শিবিরে।
এবার খুলেই বলা যাক। চার বছর পর ইংল্যান্ড দলে ফিরলেন জোর্ফা আর্চার। তাঁকে নিয়ে আলদা করে বলার কিছু নেই। শেষ টেস্ট খেলেছিলেন ভারতীয় দলের বিরুদ্ধেই। ২০২১ সালে আমেদাবাদ টেস্ট খেলার পর তিনি চোটের কারনে দলের বাইরে চলে যান। আইপিএলে আর্চারকে খেলতে দেখা গেলেও হতে চোট পেয়ে তিনি আবার মাঠের বাইরে চলে যান। দেশে ফিরে চিকিৎসা করিয়ে মাঠে ফিরে আসার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড জানিয়ে দেয় যে কাউন্টি ম্যাচ না খেলে তাঁকে নিয়ে নির্বাচকরা ভাববেন না। তাই ডারহামের বিরুদ্ধে সাসেক্সের হয়ে তিনি মাঠে নেমে পড়েন। ব্যাট হাতে ৩১ রান করার পাশাপাশি ১৮ ওভারে ৩২ রান দিয়ে একটি উইকেট পান। পারফরম্যান্সের থেকেও নির্বাচকরা দেখতে চাইছিলেন আর্চার কতটা ছন্দে আছেন। সেই পরীক্ষায় পাশ করার পর জাতীয় দলে ঢুকে পড়তে অসুবিধা হয়নি।
হেডিংলেতে প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড বোলারদের বোলিংয়ে খুশি হতে পারেননি নির্বাচকরা। কারন তাদের বল পিটিয়ে ভারত তোলে ৪৭১ ও ৩৬৪। তাই ওকস, কার্স. টং ও স্টোকসকে নিয়ে গড়া বোলিং আক্রমনের ধার বাড়াতে তারা নিয়ে এলেন আর্চারকে। সম্ভবত তিনি এজবাস্টন টেস্ট খেলবেন। আর আর্চার খেলা মানে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা কিছুটা হলেও চাপে পড়বেন। আবার নতুন করে পরীক্ষা বলা যেতে পারে।
আর্চারকে নিয়ে ইংল্যান্ড শিবিরে কিছুটা স্বস্তির হাওয়া বইলেও ভারতীয় দলে অনিশ্চয়তার মেঘ উড়ে বেড়াচ্ছে। কারন বুমরাকে ঘিরে দুশ্চিন্তা বেড়েই চলেছে। প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৪৪ ওভর বল করা বুমরাকে বিশ্রাম দিতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট। তাঁরা মনে করছেন এজবাস্টনের পর লর্ডস টেস্টে বুমরাকে খেলানো হবে। কিন্তু এজবাস্টনে সিরিজ ইংল্যান্ডের পক্ষে ২-০ হয়ে গেল বারত সিরিজে ফিরে আশতে পারবে তো! এমনটাই আশঙ্কা প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রীর। তিনি বলছেন, আমি সবসময় চাইব ইংল্যান্ডকে যেন বাড়তি সুবিধা দেওয়া না হয়। বুমরা না থাকা না মানে মানসিক দিক থেকে স্টোকসরা বেশ কিছুটা এগিয়ে থাকবে। প্রথম টেস্টে ভারতীয় বোলিং দেখে ওরা বুঝে গিয়েছে বুমরা সরে গেলে বাকিদের দিয়ে দারুন কিছু করে দেখাতে পারবে না ভারত। অনেকে বলছেন, বুমরাকে নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা দেশ ছাড়ার আগে কেন জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল! এর ফলে ইংল্যান্ড সিরিজ শুরুর আগে তৈরি ছিল, বুমরাকে তিন টেস্টের বেশি খেলতে হবে না। এটা একটা অ্যাডভান্টেজ বলা যেতে পারে। সেটাই হয়তো শেষপর্যন্ত হতে চলেছে।
বুমরা না খেললে কি হতে পারে! তিনি যদি খেলতে না পারেন তা হলে অর্শদীপের টেস্ট অভিষেক হবে। বাঁহাতি পেসারকে প্রথম টেস্টে দলে নেওয়া উচিত ছিল। কেন নেওয়া হয়নি তা নির্বাচকরা বলতে পারবেন। আর বলবেন গম্ভীর। অর্শদীপের সঙ্গে দলে আসতে পারেন কুলদীপ। শার্দুল ঠাকুরের জায়গায় তিনি খেলতে পারেন। নায়ারকে সুযোগ দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। প্রথম টেস্টে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ নায়ার। তিনি বাইরে গেলে নীতিশ আসবেন। আর একজনের কথাও উঠছে। শোনা যাচ্ছে, হেডিংলে টেস্টে হাতে চোচ পেয়েছেন সাই সুদর্শন। চোট না সারলে অভিমন্যু ঈশ্বরন খেলতে পারেন। প্রথম টেস্ট হারের পর প্রথম একাদশ থেকে একসঙ্গে এতজনকে বাইরে রাখা হবে! এ নিয়েও প্রশ্ন আছে। তবে ২ জুলাই দ্বিতীয় টেস্ট শুরু। হাতে সময় আছে। জল কোনদিকে গড়ায় তার একটা আভাস কদিনের মধ্যে পাওয়া যাবে।