ভারতীয় দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীরের অনুপস্থিতিতে শুভমান গিলরা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ফেলল। প্রতিপক্ষ ভারতীয় এ দল। তাদের বিরুদ্ধে কে এল রাহুল, শুভমান গিলরা রান পেলেও হতাশ করেছেন জসপ্রীত বুমরা। ২০ জুন লিডসে প্রথম টেস্টে খেলতে নামার আগে বুমরার বোলিং আসার আলো দেখাতে পারল না। বরং হতাশ করেছে। সাত ওভার বল করে কোনও উইকেট তিনি পাননি। তা হলে কি বুমরা লাল বলে খেলার মতো ছন্দ এখনও ফিরে পাননি! না হলে দেশের ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে কী করে খালি হাতে তিনি মাঠ ছাড়েন। বুমরার মতো হতাশ করেছেন মহম্মদ সিরাজ, প্রসিদ্ধরা। তাঁরা দুজনে দুটি করে উইকেট পেলেও প্রচুর রানও দিয়েছেন। এই বোলিং নিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়তে পারবে! দল বাছাইয়ের সময় একটা কথা টিম ম্যানেজমেন্টের মাথায় ছিল যে উইকেট নেবে বুমরা, বাকিরা তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। এমনটা হলে বুমরার উপর বাড়তি চাপ পড়বে না। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে বুমরা প্রায় ১৫০ ওভার বল করেছেন। মেলবোর্ন টেস্টের সময় তিনি সতীর্থকে বলেছিলেন মন ছুটে যেতে চাইলেও শরীর দিচ্ছে না। কিন্তু তাঁর কথায় তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সিডনিতে সিরিজের শেষ টেস্টে খেলতে নেমে চোট পান। দ্বিতীয় ইনিংসে বল করতে পারেননি। অনেকে বলছেন, শেষ টেস্টে অস্ট্রলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে বুমরা বল করতে পারলে ভারত সিরিজে সমত ফিরিয়ে আনতে পারত।
সে যাই হোক, দেশে ফিরে বুমরা অনেকদিন ক্রিকেট মাঠের বাইরে চলে যান। চিকিৎসার পর রিহ্যাব করে মাঠে ফিরতে দেরি হয়ে যায়। তাই আইপিএলের শুরু থেকে বুমরাকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স পায়নি। ফিরে এসেও তিনি দারুন কিছু করতে পারেননি। তাই ইংল্যান্ড সিরিজের দল বাছাইয়ের সময় নির্বাচকরা জানিয়ে দেন, সিরিজে বুমরা সব ম্যাচ খেলতে পারবে না। খুব বেশি হলে তিনটি টেস্ট খেলবে। তবে কোন টেস্ট খেলবে তা ইংল্যান্ড গিয়ে বোঝা যাবে।
কদিন আগে ভারতের ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে কথা উঠতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলছিলেন, শুভমানকে ঠিক করে নিতে কোন টেস্ট বুমরা খেলবে। সেই হিসেবে টেস্ট ম্যাচ বেচে নিতে হবে। লিডসে খেলার পর এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টে ওকে বাইরে রাখা যেতে পারে। তারপর তৃতীয় ও চতুর্থ টেস্টে আবার দলে নিয়ে আসা যাবে। এখানেই শেষ নয়, দিনে ১২ থেকে ১৩ ওভারের বেশি বল করানো যাবে না। উইকেটের জন্য বুমরা ঝাঁপাবে। বাকিরা চেষ্টা করবে তাকে সঙ্গ দিতে। ওদিক থেকে উইকেট পেয়ে গেলে বুমরার কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। ছোট স্পেলে ওকে ব্যাবহার করলে বলা যায় না, হয়তো চারটি টেস্টও বুমরা খেলে দিতে পারে। তবে দেখে নিতে হবে টেস্টে যেন খুব বেশি চাপ ওর উপর না পড়ে।
সৌরভ প্রথম টেস্টে বুমরাকে চাইছেন। কারনও আছে। বুমরা থাকা বা না থাকার মধ্যে ফারাক আছে। বুমরা না থাকলে মানসিক দিক থেকে অনেকটা এগিয়ে শুরু করতে পারবে ইংল্যান্ড। ওদের ব্যাটিং লাইআপ অনেক বেশি শক্তিশালী। কে নেই সেখানে। ডাকেট, রুট, পোপ, স্টোকস, আরও অনেকে। এঁরা সবাই দলের রানকে টেনে নিয়ে যেতে পারবে। তাই বুমরার থাকা বা না থাকার মধ্যে ফারাক থাকবে। টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক করবে কোন টেস্টে কীভাবে কাজে লাগানো হবে বুমরাকে।
এদিকে সৌরভের উল্টোদিকে তাকাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার ব্র্যাড হজ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন, প্রথম টেস্টে বুমরাকে দলের বাইরে রাখা উচিত। শুরুতেই চাপের মধ্যে ঠেলে দিলে বুমরার চোট বেড়ে যেতে পারে। কারনও আছে। উইকেট না পেলে বুমরা নিজে গিলের কাছ থেকে বল নিয়ে ছোটার কথা ভাববে। এটা হয়েই থাকে। মাঠে দাঁড়িয়ে কোনও বোলার নিজেকে আড়লে রাখতে চায় না। আবার অত্যধিক বোলিংয়ের কারনে বুমরা চোট পেয়ে সিরিজের বাইরে চলে যেতে পারে। তার থেকে ধীরে চল নীতি নিয়ে এগোতে পারে গিলরা। প্রথম টেস্টেরে রেজাল্ট দেখে প্রয়োজনে দ্বিতীয় টেস্টে বুমরাকে দলে নিয়ে আসা যেতে পারে।
ইংল্যান্ড সিরিজ শুরুর চারদিন আগে ক্রিকেট মহলে এমন মেজাজ বুমরাকে নিয়ে। সব থেকে বড় কথা বুমরা নিজে কী ভাবছেন। গম্ভীর নেই। তাঁর জায়গায় দলের সঙ্গে আছেন লক্ষণ। তিনি প্রস্তুতি ম্যাচে খুব কাছ থেকে দেখলেন বুমরাকে। কী মনে হচ্ছে! না,এমন কোনও আভাস পাওয়া যায়নি। প্রস্তুতি ম্যাচ দরজা বন্ধ করে ভারত খেলেছে। মিডিয়ার ঢোকার অনুমতি ছিল না। আসলে সিরিজ শুরুর আগে ভারতীয় শিবির বুমরাকে সামনে আনতে চায় না। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনার সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ভাবনার যে বিস্তর ফারাক। তারা সব কিছু সামনে এনে দেখিয়ে দিলেন কোন ক্রিকেটার কেমন অবস্থায় আছেন। এটা ঠিক করলেন কর্তারা!

ইংল্যান্ড সিরিজে কে এল রাহুলকে অধিনায়ক করা যেতে পারতঃ মঞ্জরেকর
সঞ্জয় মঞ্জরেকর এমনই। কোন কথায় বিতর্ক দানা বাঁধবে, সবসময় সেটাই তিনি খোঁজেন। এবং তাঁকে ঘিরেই বিতর্ক বেড়ে ওঠে। এই