সারা মরশুম জুড়ে চরমতম ব্যর্থতা। গোল খাওয়ার দৌড়েও যে কোন অনামী দলকেও প্রায় টপকে গিয়েছিল। সেই ম্যাঞ্চেস্টার সিটি যেন গোলের বান ডেকেছে। প্রতিপক্ষদের শুধু ধরাশায়ী করে দেওয়া নয়, বলে বলে হারাচ্ছে। যেমনটা ঘটল সোমবার। ক্লাব বিশ্বকাপের খেলায় ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ৬-০ গোলে হারাল আল আইনকে। গোলগুলি করেন ইলকায় গুন্দোয়ান (২), আর্লিং হালান্ড , ক্লদিও এচেভেরি, অস্কার বব ও রায়ান চেরকি। এই জয়ের সুবাদে সিটি ঢুকে পড়ল শেষ ১৬-য়।
আটলান্টার মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামে খেলার শুরু থেকে এশিয়া দলটির উপর আধিপত্য বিস্তার করা শুরু করে দেয় ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। খেলা শুরুর ৮ মিনিটের মধ্যে প্রথম গোল পেয়ে যায় গতবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দল। কর্ণার থেকে শুরু হওয়া আক্রমণে বক্সের বাইরে বল পেয়েছিলেন। আগুয়ান গোলকিপারের মাথার উপর বলটা চিপ করে দিয়ে গোল করে যান ইলকায় গুন্দোয়ান। ২৭ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে গোল করে দলের ব্যবধান বাড়ান আর্জেন্টাইন ক্লদিও এচেভেরি। সোমবার প্রথম একাদশে সিটির হয়ে প্রথম সুযোগ পেয়ে তাকে কাজে লাগাতে ভুল করেননি তিনি। বিরতির আগে যোগ করা সময়ে তৃতীয় গোলটি করেন আর্লিং হালান্ড। ড্রেসিংরুমে বিরতিতে দল যায় ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে। বিরতির পর খেলতে নেমেই আবার গোলের মালা পরানোর কাজে নেমে পড়ে সিটি। ৭৩ মিনিটে ফের গোল করে দলের ও নিজের গোল সংখ্যা বাড়ান গুন্দোয়ান। তারপর খেলা যত শেষের দিকে আসতে থাকে ততই গোল সংখ্যা বাড়িয়ে ফেলে সিটি। ৮৪ মিনিটে অস্কার বব ও ৮৯ মিনিটে রায়ান চেরকি গোল করে দলকে ৬-০ ব্যবধানে জিততে সাহায্য করেন।
গোল করে উল্লসিত আর্লিং হালান্ড।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দলটি প্রথম ম্যাচে জুভেন্তাসের কাছে ৫-০ গোলে হেরেছিল। এবার আরও একটা গোল বেশি খেয়ে খেলা শেষ করল। আল আইন কখনও নিজেদের তুলে ধরতে সক্ষম হয়নি। তবে সিটি দেখাচ্ছে, কীভাবে তারা গোল খরা কাটিয়ে ফেলেছে। নাহলে গত ১০টা ম্যাচে তারা প্রতিপক্ষের জালে ৩৩বার বল জড়াতো না। তারচেয়েও বড় কথা, গোল খেয়েছে মাত্র দুটো।
সিটি প্রথম ম্যাচে হারিয়ে ছিল উইদাদকে। ব্যবধান ছিল ২-০। সেই মরক্কোর ক্লাবকে জুভেন্তাস সোমবার হারিয়েছে ৪-১ গোলে। ফলে নক-আউটে সিটির সঙ্গে জুভেন্তাস পৌছে গেল প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে। গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে জুভেন্তাস মুখোমুখি হবে সিটির। গুরুত্বহীন সেই ম্যাচ হবে ২৬ জুন।
খেলার শেষে জোড়া গোলদাতা ইলকায় গুন্দোয়ানের প্রশংসায় ভরিয়ে দেন সিটির কোচ। “আমি জানি, গুন্দোয়ান ফাইনাল থার্ডে বরাবর ভয়ংকর। ভিতরে ও বাইরে সমান পর্যায়ে খেলতে পারে। ব্যতিক্রমী চরিত্রের ফুটবলার। প্রতিটি ক্ষেত্রে তার নিখঁুত প্লেসিং যে কোনও দলকে মুহূর্তের মধ্যে বিপদে ফেলে দিতে পারে। সোমবার তো একটা অসাধারণ গোল করল। তবে থেমে থাকলে হবে না, প্রতিটি ম্যাচে যেন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে সেইদিকে তার নজর দেওয়া উচিত।” পেপ গুয়ার্দিওলা আরও যোগ করেন, “পায়ে সামান্য ব্যথা পাচ্ছিল বলে এচিভেরিকে তুলে নিয়েছিলাম। গত বছর থেকেই দেখছিলাম, একা একা ফ্রি-কিক প্র্যাকটিশ করতো। তাই সোমবার গোলটা করতে পেরেছে। এই গোলটাকে ভাগ্যের উপর আপনারা ছেড়ে দেবেন না। বলতে পারেন, তার পরিশ্রমের ফল পেল।”
বলেন গুয়ার্দিওলা।