পিএসজি-র সাফল্যে বিশ্ব জুড়ে অভিনন্দন বার্তা আসতে শুরু করেছে। সকলেই সন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, পিএসজি যেভাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পেয়েছে তাকে বাহবা জানাতেই হবে। বিশেষ করে ৫ গোলের ব্যবাধানে ফাইনালের নিষ্পত্তি ঘটায় অনেকে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছেন। সেই অভিনন্দন বার্তায় দেখা গেল ঢুকে পড়েছেন পরিচিত দুজনের মুখ। যার মধ্যে একজন হলেন, কিলিয়ান এমবাপে। অপরজন নেইমার জুনিয়র। এই দুজন একসময় যে এই ক্লাবেই খেলে গিয়েছেন।
কিলিয়ান এমবাপে ও নেইমার শুধু নয়, একটা সময় পিএসজি ইউরোপ সেরা হওয়ার জন্য কঁাড়ি কঁাড়ি অর্থ খরচ করেছে। এমন কী এমবাপেকে ধরে রাখার জন্য দেশের প্রেসিডেন্টকে ব্যবহার করতে ছাড়েনি পিএসজি। তবু সেই সাধ পূর্ণ হয়নি। একটা সময় হতোদ্যম হয়ে ক্লাব কর্তারা ঠিক করেন তারকাদের পেছনে আর ছুটবেন না। তাই এক এক করে সকল তারকাকে বিদায় জানায়। গতকাল মিউনিখে আলিয়াঞ্জ এরিনায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে হারানোর পর সব সাধ যেন একসঙ্গে পূর্ণ হল।
“অবশেষে সেই বড় দিনটা এলো। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পিএসজি। ক্লাবের সকলের প্রচেষ্টার ফসল ফলতে আমরা প্রত্যেকে দেখলাম। অভিনন্দন পিএসজি।” ইনস্টাগ্রামে নিজস্ব বক্তব্য তুলে ধরতে গিয়ে একথা বলেছেন এমবাপে। এবার পিএসজি ছেড়ে তিনি যোগ দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদে। সাত সাতটা মরশুম কাটিয়ে গিয়েছেন ফ্রান্সের ক্লাবে। এক এক করে লিগ আঁ, ফ্রেঞ্চ কাপ, লিগ কাপ জিতলেও কখনও ইউরোপ সেরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ক্লাবের হাতে তুলে দিতে পারেননি। এমন কী ২০২০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছিল পিএসজি। তবু সেই ট্রফি অধরা থেকে যায়। এবার তো রিয়াল মাদ্রিদে গিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের বেশি এগোতে পারেননি এমবাপে। শুধু তিনি নন, নেইমারের পেছনে ২২ কোটি ইউরো ট্রান্সফার ফি দিয়ে বার্সেলোনা থেকে নিয়ে এসেছিল ফরাসিদের ক্লাব। এখনও অব্দি এই অর্থই রেকর্ড বুকে তোলা আছে। সেই নেমার ২০২৩ সালে পিএসজি ছেড়ে চলে যান। তবু সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারেননি। সেই ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার বেজায় খুশি পিএসজি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পাওয়ায়। ইনস্টাগ্রামে তিনিও জানিয়েছেন, “পিএসজিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।” সঙ্গে দিয়েছেন পঁাচটা হাত তালির ইমোজি।
শনিবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সাথে সাথে দশটা রেকর্ড গড়ল পিএসজি। তারা যে শুধু প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করল তাই নয়, এক এক করে এমন কিছু রেকর্ডের অংশীদার হল যা অতীতে কোনও দল হতে পারেনি।
(১)-পিএসজি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল সহ মোট ১৬৮টি ম্যাচ খেললো (ইউরোপিয়ান কাপ ধরে)। প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার আগে এত বেশি সংখ্যক ম্যাচ কোনও দল খেলেনি।
(২) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পিএসজির হয়ে গোল করেছেন মাইয়ুলু (১৯ বছর) ও দেজিরে দুয়ের (১৯)। ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে একাধিক টিনএজের ফুটবলার এই প্রথম কোনও দলের হয়ে গোল করে গেলে।
(৩) চ্যাম্পিয়ন্স লিগ-সহ ট্রেবল জিতল পিএসজি। ইউরোপের নবম ক্লাব হিসেবে ট্রেবল জেতার রেকর্ড গ়ড়ল ফরাসি দল হিসেবে। এর আগে ফ্রান্সের কোনও ক্লাব ট্রেবল জেতেনি। তবে ফ্রান্সের মার্শেই জিতেছিল ১৯৯৩ সালে। ফরাসি ক্লাব হিসেবে পিএসজি জিতল দ্বিতীয় ক্লাব হিসেবে।
(৪)-লুইস এনরিকে কোচ হয়ে দুবার ট্রেবল জয়ী হলেন। এর আগে ২০১৪-১৫ সালে বার্সেলোনার কোচ হয়ে তিনি এই কীর্তি গড়েন। তবে এই সাফল্য আর একজনের আছে। তিনি হলেন পেপ গুয়ার্দিওলা।
(৫)-ইন্টার মিলানকে ৫-০ ব্যবধানে হারিয়ে ইউরোপ সেরা হয়েছে পিএসজি। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এত বড় ব্যবধানে কোনও দল জেতেনি।
(৬)-চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে কোনও ফুটবলার তিন গোলের পেছনে অবদান রাখতে পারেনি। যা রাখলেন দেজিরে দুয়ের। প্রথম গোল আশরাফ হাকিমিকে তিনি ফাইনাল পাশ বাড়িয়ে করান। বাকি দুটি গোল করেন তিনি নিজে।
(৭)-ইন্টার মিলান হল সেই দল যারা ৫ গোল ফাইনালে হজম করল। অতীতে ফাইনালে পঁাচ গোল হয়নি তা নয়। তখন অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগকে ইউরোপিয়ান কাপ বলা হত। ১৯৬২ সালে বেনফিকা ৫-৩ গোলে হারিয়ে ছিল রিয়াল মাদ্রিদকে।
(৮)-চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলান হল প্রথম দল যারা ৩৫ বছরের উর্ধ্বে ৩জন ফুটবলারকে প্রথম একাদশে রেখে খেলতে নেমেছিল। সেই তিনজন হলেন ইয়ান সমার, ফ্রানচেস্কো অ্যাকারবি ও হেনরিখ মেখিতারিয়ান।
(৯)-চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে দেজিরে দুয়ে হলেন সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার যিনি গোল করতে সাহায্য করে রেকর্ড গড়লেন। গতবার ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গোল করতে অ্যাসিস্ট করেছিলেন জুড বেলিংহাম। তখন তঁার বয়স হয়েছিল ২০ বছর ৩৩৮ দিন। দেজিরে দুয়ের বয়স হল ১৯ বছর ৩৬২ দিন।
(১০)-এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৯টা গোল করার পেছনে অবদান রেখে গেলেন ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমি। এর আগে ইয়ান হার্ট ২০০০-০১ মরশুমে একই সংখ্যক গোল করার রেকর্ড গড়েন। তবে হাকিমি হলেন সেই ফুটবলার যিনি পুরোন দলের বিরুদ্ধে গোল করলেন।

ইংল্যান্ড সিরিজে কে এল রাহুলকে অধিনায়ক করা যেতে পারতঃ মঞ্জরেকর
সঞ্জয় মঞ্জরেকর এমনই। কোন কথায় বিতর্ক দানা বাঁধবে, সবসময় সেটাই তিনি খোঁজেন। এবং তাঁকে ঘিরেই বিতর্ক বেড়ে ওঠে। এই