আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় একজন ক্রিকেটারের অকাল প্রয়াণ ঘটেছে বলে দাবি জানিয়েছে লিডস মডার্নিয়ান্স ক্লাব। তিনি অবশ্য ইংল্যান্ডের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতেন না। তঁার নাম দির্ধ প্যাটেল। হার্ডাসফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্সে এমএসসি নিয়ে পড়াশুনো করেছেন। তঁার মৃতু্যর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শোকের ছায়া নেমে এসেছে হার্ডসফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও।
১৪ জুন আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনগামী বিমান ছাড়ার কয়েক মুহূর্ত বাদে একটা মেডিকেল কলেজের উপর ভেঙে পড়ে। মোট ২৪১জন যাত্রীর সলিল সমাধি ঘটে গিয়েছে। অবাক ঘটনা হল, সেই বিমান দুর্ঘটনা থেকে একজন মাত্র যাত্রী বেঁচে যান। কিন্তু প্রয়াত যাত্রীদের মধ্যে একজন ছিলেন ক্রিকেটার। ২৩ বছরের দির্ধ প্যাটেল এয়ারডেল ও ওয়ার্ফেডেল সিনিয়র ক্রিকেট লিগে লিডস মডার্নিয়ান্স দলের হয়ে খেলতেন। যথারীতি তঁার মৃতু্যর খবর দেরিতে হলেও পৌছয় লন্ডনে। যথারীতি শোকের ছায়া নেমে আসে এয়ারডেল-ওয়ার্ফেডেল ক্রিকেট লিগে। ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহের শেষে তাদের একটা খেলায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। দির্ধ ছিলেন পুল সিসির প্রাক্তন ক্রিকেটার কৃতিক প্যাটেলের ভাই।
পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেটও ভালোই খেলতেন। তিনি ছিলেন মূলত অলরাউন্ডার। লিডস মডার্নিয়ান্স দলের হয়ে তিনি ২০ ম্যাচে ৩১২ রান করেছিলেন। নিয়েছিলেন ২৯টা উইকেট। ক্লাবের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নতুন চাকরিতে যোগদান করেছিলেন। যারজন্য তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভুত হিসেবে নিজেকে ইংল্যান্ডে তুলে ধরাই ছিল তঁার উদ্দেশ্য। তিনি চেয়েছিলেন ইংল্যান্ডে বসবাস করতে। আমরা ঠিক করেছি সপ্তাহের শেষে প্রথম ও দ্বিতীয় দলের একটা ম্যাচে আমরা দির্ধের মৃতু্যর কারণে এক মিনিট নীরবতা পালন করব। প্যাটেল পরিবার ও কৃতিকের কথা কঠিন সময়ে খুব আন্তরিকতার সঙ্গে ভাবছে লিগ কর্তৃপক্ষ।” বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দির্ধের মৃতু্যতে গভীর শোকাহত। বিশ্ববিদ্যালের স্কুল অফ কম্পিউটিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর রিডার ডঃ জর্জ বার্গিয়ানিস গভীর শোক প্রকাশ করে দির্ধ সম্পর্কে বলেছেন, “একজন ব্যতিক্রমী ছাত্র ছিল দির্ধ। এমন কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে জানতে চাইতো যা তার পড়াশোনার গভীরতা প্রকাশ করে। খুব বুদ্ধিমান ছিল। ধারণা ছিল খুব স্বচ্ছ। সবসময় ভবিষ্যতের ছবিটা ভালমতো দেখতে পেত। কীভাবে তঁার শিক্ষাকে বিশ্ব সমাজে ইতিবাচক দিক সূচিত করে তা দেখানোর চেষ্টা চালাতেন।” স্নাতক হওয়ার পর দির্ধের সঙ্গে বার্গিনিয়াসের ভালমতো যোগাযোগ ছিল। সেই সঙ্গে বার্গিনিয়াস আরও বলেন,“জীবন যে কতটা ক্ষণস্থায়ী হয় দির্ধের মৃতু্য তা প্রমাণ করে দিয়ে গেল। তাকে যারা চিনতেন, জানতেন, সেইসব সৌভাগ্যবানদের জীবন যেন দির্ধের মতোই অনুপ্রাণিত করে চলে। এটাই আমার প্রার্থনা।”