এটাই ঘটনা। এটাই বাস্তব। চেন্নাই সুপার কিংসের বোলিং কোচ এরিক সিমন্স মিডিয়র সামনে এসে যা বলে গেলেন, তার সঙ্গে সবাই একমত। ধোনিদের দলের সঙ্গে আবেগ কাজ করে না একথা বলা যাবে না। তবে সেটাই শেষ কথা নয়। দলের একটা ঐতিহ্য আছে। সেটা আবার আবেগের থেকে বড় ব্যাপার। তাই কোনও ম্যাচই তারা হাল্কাভাবে নেয় না। জিততে হবে, এটাই লাস্ট বেঞ্চে বসে থাকা দলের প্রত্যেকের টার্গেট। শেষ ম্যাচে বেঙ্গলুরুর বিরুদ্ধে যে লড়াই তারা করেছিলেন, তা কেকেআরের সামনে মেলে ধরলে রাহানেদের কপালে দুঃখ আছে। তাই সিমন্স বলছিলেন, আমরা এখন নির্ভর করছি, ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের উপর। সেটা ঠিক হলে ম্যাচ জেতা কঠিন হবে না।
এখনও পর্যন্ত দুটি ম্যাচ জিতেছে সিএসকে। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে তারা হারিয়েছিল মুম্বইকে। তখন কে ভেবেছিলেন, এরপর এই দল মুখ থুবড়ে পড়বে। শেষপর্যন্ত সেটাই হয়েছে। হারতে হারতে যেন ক্লান্ত সিএসকে। একটা জয় তাদের অনেক কিছু ফিরিয়ে দেবে। একসময় ভারতীয় দলের সঙ্গে কাজ করেছেন বোলিং কোচ সিমন্স। তারপর ঢুকে পড়েন আইপিএলে। তিনি ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের সেন্টিমেন্ট ভাল মতো জানেন। আর জানেন বলেই বলতে পারছেন এই সব ঐতিহ্যর কথা। আইপিএলের ইতিহাসে সিএসকের এত বাজে পারফরম্যান্স আগে কখনও দেখা যায়নি। গতবছরও তারা প্লে অফে যেতে যেতে ছিটকে গিয়েছে। আরসিবি ম্যাচ জিততে পারলে প্লে অফ খেল সুবিধা হত। কিন্তু তা আর হয়নি। আর এবার! দশ দলের টুর্নামেন্টে তারা এখন দশ নম্বরে। কী বলবেন ধোনি! না বলার মতো ভাষা নেই। নিজের ঘাড়ে ব্যর্থতার দায় নিলেও কে আর তাঁকে টার্গেট করেন। একা ধোনি নন, পুরো দলকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে চলেছে। সিমন্স বলছিলেন, ধোনি কখন নিজেকে নিয়ে আলাদা করে কিছু ভাবে না। দলের তরুন ক্রিকেটারদের দিকে ওর নজর থাকে। তাদের সামনে চলার পথ সহজ করে দেয়। এই যেমন আয়ুষ মাত্রে। ছেলেটিকে নিয়ে ধোনি ধারুন আশাবাদী। এমন অনেক ছেলেকে দেখা যাবে, যারা প্রথমবার দলে এসে ধোনিকে কাছে পেয়ে ছুটে যায়। ওর সঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করে। এতে অবশ্য ওদের কাজ সহজ হয়ে যায়।
সিমন্সের কথা মেনে নিলেও বলতে হবে যে তরুনদের নিয়ে সিএসকে চলার কথা ভাবলেও উরভিল প্যাটেলের কি হল। ভন্স বেদি আরসিবি ম্যাচে দলে প্রায় ঢুকে পড়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে হাঁটুতে চোট পেয়ে সরে যেতে হয়েছে। এমনকি এই মরশুমে তিনি খেলতে পারবেন না। তাঁর বদলি হিসেবে দলে নেওয়া হয়েছে ২৬ বছরের গুজরাটের উরভিল প্যাটেলকে। তিনি উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। তঁকে কেন কলকাতায় নিয়ে এল না সিএসকে। তাঁর তো সই হয়ে গিয়েছে। দলের অন্যতম কর্তা কাশী বিশ্বনাথ বলেই দিলেন এই দলের সঙ্গে উরভিল ট্রাভেল করছে না। কেন! এর উত্তর মেলে নি। এখানে তো উরভিলকে খেলিয়ে দেখে নিতে পারত সিএসকে। সেটা না হওয়ায় আশা করা যেতে পারে যে রাহানের সঙ্গে ইডেনে টস করতে নামবেন ধোনি স্বয়ং। ট্রায়ালে ডাকা ক্রিকেটারদের পছন্দ হলে এবারের আইপিএলে খেলিয়ে যাচাই করার সুযোগ ছিল। সেটা করতে দেখা গেল না সিএসকে-কে। দলের সঙ্গে এসেছেন অশ্বিন। তিনি খেলবেন কিনা তা জানা যায়নি। এটা কেমন হল!
এর উত্তর কে দেবেন। আসলে এই মরশুমে সিএসকে এভাবেই চলছে। আর চলছে বলে রেজাল্ট দিতে পারছে না। এখন দেখা যাক ইডেনে সিএসকে কি করে।