শ্রেয়স আইয়ারের বিধ্বংসী মেজাজের ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ এবি ডিভিলিয়ার্স। বিশেষ করে যশপ্রীত বুমরার বলকে যেভাবে হেলায় ব্যাট চালিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়েছেন তা দেখে যেন বিশ্বাস হচ্ছে না দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তীর। তঁার মনে হচ্ছে, তিনি যদি এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করতেন তাহলে কোনওভাবেই বুমরার বলকে এভাবে মারার সাহস দেখাতে পারতেন না।
২০১৪ সালের পর পাঞ্জাব কিংস ফাইনালে খেলার ছাড়পত্র পেল। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারানোর পেছনে ক্রিকেট মহল একবাক্যে স্বীকার করছেন, শ্রেয়স আইয়ারের অসাধারণ ব্যাটিং। মাত্র ৪১ বলে তিনি ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে এক ওভার বাকি থাকতে জিতিয়ে দেন। তখন আবার পাঞ্জাবের হাতে ছিল পঁাচটা উইকেট। তঁার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের মধ্যে ছিল ৮টা ছক্কা ও ৫টা বাউন্ডারি। তবে আইপিএলের ইতিহাসে এক অনন্য নজীর গড়ে ফেললেন। কি নজির? অধিনায়ক হিসেবে দলের দায়িত্ব নিয়ে আইপিএলে তিনটে দলকে ফাইনালে তুললেন। এমন মাইলস্টোন ভারতীয় ক্রিকেটে কারও নেই। ২০১৮ সালে তিনি দিল্লি ক্যাপিটেলসের হয়ে প্রথম আইপিএলে নেতৃত্ব দেন। দু-বছর বাদে দিল্লি ওঠে ফাইনালে। ফাইনালে হেরে বসেন। হারিয়ে দেয় রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এরপর ২০২২ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে যোগ দেন। নেতৃত্বে আনা হয় ২০২৪ সালে। গতবার তিনি কলকাতার হাতে তুলে দিয়েছিলেন আইপিএল ট্রফি। এবার পাঞ্জাবে এসেছিলেন মেগা নিলামের মাধ্যমে। পাঞ্জাব তঁাকে কিনেছিল ২৬.৭৫ কোটি টাকায়। সেই পাঞ্জাবকে নেতৃত্ব দিয়ে তুলে দিলেন ফাইনালে। এখন দেখার ফাইনালে বেঙ্গালুরুকে হারাতে পারেন কিনা। যদি পারেন তাহলে পরপর দু-বছর দুটি দলের অধিনায়ক হয়ে আইপিএল ট্রফি হাতে তুলবেন। মঙ্গলবার ফাইনাল। এখন বৃষ্টিতে আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে খেলা করা যাবে কিনা তাই নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে আরসিবি বা পিবিকেএস যেই জিতুক এবারের আইপিএল একটা নতুন দলকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখবে।
তবে সকলেই মনে করছেন, শ্রেয়স আইয়ার যেভাবে ব্যাট করে গেলেন তা এককথায় অবিস্মরণীয়। ২০৪ রান তাড়া করতে নেমে একটা সময় পাঞ্জাবের প্রয়োজন ছিল ৩ ওভারে ৩১ রান। সেই সময় আবার যশপ্রীত বুমরাকে বল করতে নিয়ে আসেন হার্দিক পান্ডিয়া। বুমরা আসা মানে সকলের ধারণা ছিল, পাঞ্জাব কোনওমতে বুমরাকে হেলায় খেলার সাহস দেখাতে পারবে না। স্বয়ং বুমরাও বুঝে গিয়েছিলেন, দলকে টেনে তোলার জন্য সকলে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। তিনি প্রায় ১৪০ কিমি গতিতে মিডল স্ট্যাম্প লক্ষ্য করে ইয়র্কার দেন। অথচ সেই বল শ্রেয়স আইয়ার পাঠিয়ে দেন বাউন্ডারের বাইরে। এবি ডিভিলিয়ার্স এমন শর্ট দেখে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে শ্রেয়সের প্রশংসা করে বলেন, “আমার দেখা আইপিএলের সেরা শট। মিডল স্ট্যাম্প লক্ষ্য করে ইয়র্কার দিয়েছিল বুমরা। একদম নিখঁুত ইয়র্কার বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই। এমন বল তাকে তুমি এড়াতেও পারবে না। সত্যি বলতে কী, আমাকে যদি এই বলের মোকাবিলা করতে হত তাহলে আমার স্ট্যাম্প বঁাচানো যেত না। অথচ সেই বল কিনা সরাসরি বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দিল। আসলে এই শটটাই চাপে ফেলে দিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে। একজন বিশ্বের সেরা বোলারের বিরুদ্ধে যদি এমন মারমুখি মেজাজে খেলতে পারে তাহলে বুঝে দেখুন কতটা বেপরোয়া ছিল। এককথায় অবিশ্বাস্য ব্যাটিং। দুরন্ত শক্তি ও বলের উপর নিজের ব্যাটকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় তা দেখিয়েছে শ্রেয়স আইয়ার। দুর্দান্ত একজন ক্রিকেটার।” টিভিতে কথা বলার সময় ডিভিলিয়ার্স বুঝে উঠতে পারছিলেন না শ্রেয়সকে নিয়ে কী বলবেন, “কোথা থেকে শুরু করলে শ্রেয়সকে নিয়ে বলা যায় তাই বুঝে উঠতে পারছি না। এমনিতেই তার খেলা দেখতে আমার ভাললাগে। কিন্তু মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ওর ব্যাটিং অতীতের যাবতীয় ট্যাকটিক্সকে ভেঙে দিয়েছে। প্রতিটি প্রশংসা তার প্রাপ্য। অসম্ভব চাপের মধ্যে খেলে গেল। আসলে শ্রেয়সের সামনে দুটো রাস্তা ছিল পরিষ্কার। এক মর নইলে মারার চেষ্টা কর। তাছাড়া প্রতিকূল পরিস্থিতির পাহাড় তার সামনে তখন দঁাড়িয়ে গিয়েছে। তবু দেখলাম একদিকে শান্ত ও স্থিতথী হয়ে প্রতিটি বল খেলে যাচ্ছে। তার প্রতিটি ছক্কা ছিল দেখার মতো। ব্যাটিং দেখে আমি আবার বলছি মুগ্ধ। এটুকু বলতে পারি, এই ক্রিকেটার কিন্তু ভবিষ্যতে প্রচুর রান করবে। তাকে স্যালুট জানাচ্ছি।”

এজবাস্টনে কুলদীপকে চাই, ফিল্ডিংয়েও নজর দিতে হবেঃ ক্লার্ক
শুরুতেই সিরিজে ভারত পিছিয়ে পড়েছে। এবার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। সেই লড়াইয়ে জিততে হলে দলে কিছু বদল দরকার। সঙ্গে আগের