এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হল নোভাক জকোভিচকে। একদিকে টেনিস খেলা চলছে। অথচ চিত্্কার ভেসে আসছে পিএসজির একের পর এক গোল করার মুহূর্তে। যেন মনে হচ্ছিল টেনিস স্বচক্ষে দেখলেও দর্শকদের মন যেন পড়েছিল সেই ফুটবলে। যেখানে ফ্রান্সের ফুটবলে ইতিহাস গড়ল পিএসজি। অন্যদিকে জকোভিচও একটা নতুন ইতিহাসের সাক্ষী থাকলেন। যেখানে ফিলিপ মিসোলিককে ৬-৩, ৬-৪ ও ৬-২ হারিয়ে পৌছে গেলেন ফরাসি ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডে। টানা ১৬ বছর ফরাসি ওপেনে চতুর্থ রাউন্ডে পৌছে একটা অনন্য কীর্তি গড়লেন।
জকোভিচ বনাম ফিলিপ ম্যাচ যখন চলছিল তখন গ্যালারিতে বসা দর্শকরা ক্রমাগত চিত্্কার করে যাচ্ছিলেন। সেই চিত্্কারের পেছনে একটাই কারণ ছিল, পিএসজির একের পর এক গোল। প্রতিটি গোল হলেই দর্শকরা ফেটে পড়ছিলেন। ফিলিপ চ্যাট্রিয়ার কোর্ট থেকে পিএসজি স্টেডিয়াম ছিল খুব কাছেই। সেখান থেকে ভেসে আসছিল আতসবাজির শব্দ। পিএসজি এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতায় সোল্লাসে ফেটে পড়ছিলেন ক্লাবের সমর্থকরা। যতই হোক ৫-০ গোলে জয়ের আনন্দে কে না ভেসে যেতে চায়। সংগঠকদের কাছে জকোভিচ নিজে অনুরোধ করেছিলেন, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচের জন্য খেলার সময়টা পিছিয়ে দেওয়া হোক। যদিও সংগঠকরা মানেননি। খেলার মাঝে তারস্বরে চিত্্কার চললেও জকোভিচ খেলা চালিয়ে গিয়েছেন।
“খুব মজা পাচ্ছিলাম। বুঝতে পারছিলাম দর্শকরা পিএসজির খেলাকে ভালমতো উপভোগ করছে। সেই সঙ্গে বুঝতেও পারছিলাম কখন গোল করছে ফরাসি দলটি। বারবার গোলের উত্্সবে মেতে উঠতে দেখে আমিও মজা পেয়েছি।” খেলার পর চ্যাট্রিয়ার স্ট্যান্ডে দঁাড়িয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলছিলেন জকোভিচ। খেলার পর তিনি শোনেন পিএসজি ৫-০ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ প্রথম ঘরে তুলেছে। রাতের খেলার মধ্যে যে আলাদা একটা আকর্ষণ থাকে তা বুঝিয়ে দিয়ে জকোভিচ বললেন, “দিনের সঙ্গে রাতের খেলায় একটা পার্থক্য ধরা পড়ে। রাতের খেলায় দর্শকরা একটু চিত্্কার করলেই তা স্পষ্ট ধরা পড়ে। তারউপর জোরে চেঁচালে তো কথাই নেই।” জকোভিচ জানতেন তঁার প্রতিপক্ষ বিশাল প্রভাব ফেলতে পারবে না। ক্রমতালিকায় যিনি আছেন ১৫৩ নম্বরে। এত নিম্নমানের ক্রমতালিকায় থাকা খেলোয়াড়ের কাছে কখনও হার মানেননি জকোভিচ। বিশেষ করে গ্র্যান্ড স্লামে। তাই খেলতে নামার আগেই অনেকটা স্বস্তিতে ছিলেন তিনি। তার উপর জেনেভা ওপেন জিতে শততম ট্রফি জয় পাওয়ায় এখন তিনি মনোবলের দিক দিয়ে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন।
মেয়েদের টেনিসে পিছিয়ে পড়েও ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌছে গেলেন ইগা সোয়াটেক। ফরাসি ওপেনে চ্যাম্পিয়ন একটা সময় টেনিস প্রেমীদের হৃদয়ে ঝড় তুলে দিয়েছিলেন। প্রথম সেট খুইয়ে বসেন মাত্র ১-৬। কিন্তু পরের দুটো সেটে ফিরে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ বের করে নিয়ে চলে যান। তিনি হারান ১-৬,৬-৩ ও ৭-৫ সেটে এলেনা রাইবাকিনাকে। ইগা সোয়াটেক ফরাসি ওপেনে টানা ২৫তম ম্যাচ জিতলেন। প্রথম সেটে রাইবাকিনা এতটা দাপটের সঙ্গে খেলেন যে মজার ছলে সোয়াটেককে বলতে শোনা যায় যেন সিনারের বিরুদ্ধে তঁাকে খেলতে হচ্ছে। “প্রথম সেটে সত্যি আমাকে বড় ধাক্কা দিয়েছিল। প্রথম সেটে খেলার মাঝে উপলব্ধি করতে পারছিলাম না, রাইবাকিনা না সিনার কার বিরুদ্ধে খেলছি। তারপর ভাবলাম আমাকে ফিরে আসতে গেলে কিছু একটা করতে হবে। একটা সময় ভাবছিলাম বোধহয় আর ফিরে আসতে পারব না। কিন্তু শেষমেশ খেলাটা ধরে এগোতে ম্যাচ বের করে নিতে সক্ষম হয়েছি।” বলেন চারবারের ফরাসি ওপেন জয়ী। এবার সোয়াটেক কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবেন ১৩তম বাছাই ইউক্রেনের এলিনা সোভিতালিনার বিরুদ্ধে। যিনি ইতালির জেসমিন পাওলিনিকে ৪-৬, ৭-৬ (৮-৬) ও ৬-১ ব্যবধানে হারিয়ে দেন। সোয়াটেককে এখানে ক্লে রানী হিসেবে ডাকা হয়। তবে এই প্রতিযোগিতায় নামার আগে তঁার ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। রাইবাকিনার বিরুদ্ধে প্রথম সেটে একটা সময় সোয়াটেক পিছিয়ে পড়েন ৫-০। পরবর্তীকালে কিছুটা ঘুরে দঁাড়ালেও সেট নিয়ে চলে যান রাইবাকিনা। দ্বিতীয় সেটের শুরুতেও দাপট দেখাচ্ছিলেন তিনি। ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যান। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট চলে আসে তারপর। যখন ওভারহেড স্ম্যাশ নষ্ট করে বসেন। তারপর থেকে সোয়াটেককে আর ধরতে পারেননি তিনি। তৃতীয় সেটে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলক খেলায় সোয়াটেক আসল সময়ে সার্ভিস ব্রেক করে এগিয়ে যান। খেলা শেষ করেন একটা দুরন্ত ফোরহ্যান্ডের মাধ্যমে।
(ছবি-টেনিস খেলার ফঁাকে পিএসজি জয় উচ্ছ্বাসের সামিল হলেন জকোভিচও।)

ইংল্যান্ড সিরিজে কে এল রাহুলকে অধিনায়ক করা যেতে পারতঃ মঞ্জরেকর
সঞ্জয় মঞ্জরেকর এমনই। কোন কথায় বিতর্ক দানা বাঁধবে, সবসময় সেটাই তিনি খোঁজেন। এবং তাঁকে ঘিরেই বিতর্ক বেড়ে ওঠে। এই