এখনও ঘোষিত চ্যাম্পিয়ন নয়। যেহেতু আদালতে মামলা চলছে। কিন্তু আইএফএ-র খাতায় গতবার লিগের চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল। তাই এবার কি কোর্ট নয়, মামলা নয়, সরাসরি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার শেষ ধাপে পৌছতে পারবে লাল-হলুদ শিবির?
শুক্রবার রথের চাকা গড়বে। সেইদিনই নৈহাটি স্টেডিয়ামে চলতি মরশুমে আত্মপ্রকাশ ঘটছে ইস্টবেঙ্গলের। প্রতিপক্ষ মেসারার্স। এবার মেসারার্স প্রিমিয়ার ডিভিসনে প্রথম উঠেছে। দু-পক্ষের মধ্যে বড় ব্যবধান থাকা উচিত। সিনিয়রদের নিয়ে দল গড়েনি ইস্টবেঙ্গল। মূলত জুনিয়রদের নিয়ে গড়া দল। তাই মেসারার্স নিয়েও কিছুটা চিন্তায় রয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ বিনো জর্জ। প্রথম ম্যাচ বলেই হয়তো কিছুটা ভাবনা মনের মধ্যে গ্রাস করে রেখেছে। এখনও অব্দি সরকারীভাবে গতবারের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ইস্টবেঙ্গলের নাম ঘোষণা না করায় ক্ষুব্ধ বিনো জর্জ। বলেই দিলেন, “কেন আমাদেরকে সরকারীভাবে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হবে না? বিষয়টাকে কেন আদালতে নিয়ে যাওয়া হল বুঝলাম না। গতবার একটাও ম্যাচে আমাদের কেউ হারাতে পারেনি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ডায়মন্ড হারবারের তুলনায় আমরা ২ পয়েন্টে এগিয়ে। সবচেয়ে বেশি গোল করেছে জেসিন টিকে। তাহলে ইস্টবেঙ্গলের নাম ঘোষণা করা নিয়ে আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে কেন, বুঝতে পারছি না।”
আইএসএলের জন্য এখন ঘরোয়া লিগের গুরুত্ব অনেক কমে গিয়েছে। বড় দলগুলো জুনিয়রদের নিয়ে দল গড়ে খেলে। তবু কলকাতা লিগকে ঘিরে স্থানীয় ফুটবল প্রেমীদের উত্্সাহ কম নয়। বিশেষ করে ঘরোয়া লিগে ভাল খেললে ডাক পড়ে আইএসএলে। তাই নিজেদের তুলে ধরার জন্য ফুটবলাররা মরিয়া হয়ে ঝঁাপায়। “আমরা ঘরোয়া লিগে ভাল কিছু করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছি। কলকাতা লিগের গুরুত্ব ঠিক কোথায় ফুটবলাররা তা বুঝে গিয়েছে। তাই নিজেদের তাগিদে ছেলেরা মরিয়া হয়ে ঝঁাপাবে।” যুবভারতীতে প্র্যাকটিশের পর কথাগুলো একটানা বলে গেলেন বিনো জর্জ।
গতবারের মতোই এবারও অপরাজিত থেকে লিগ শেষ করাই লক্ষ্য ইস্টবেঙ্গল কোচের। ছেলেদের সেইভাবে লক্ষ্য বেঁধে দিতে চান। বিনো জর্জ বলছিলেন, “গতবার লিগে অপরাজিত থেকে শেষ করেছিলাম। এবারও লক্ষ্য সেই পথে এগোন। গতবার অপরাজিত থেকে শেষ করার জন্য আলাদা একটা তৃপ্তি পেয়েছিলাম। দলকে ট্রেনিং করানো আমার কাজ। মাঠে নেমে ছেলেদের কিন্তু প্রমাণ করতে হবে।” এবার কলকাতা লিগে ভূমিপুত্র ৬জনকে প্রথম একাদশে রাখা বাধ্যতামূলক করেছে আইএফএ। অসুবিধে হবে না? কোনও বিতর্কে না গিয়ে বরং প্রশ্ন শুনে বাংলার ফুটবলের উন্নতির কথা তঁার মুখ থেকে বেরিয়ে এলো। “বাংলার ফুটবল উপকৃত হবে। শুনেছি ৬জনকে খেলানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ঠিক আছে। সেইজন্যই তো গতবার সন্তোষ ট্রফি বিজয়ী দল থেকে বেশ কয়েকজনকে নেওয়া হয়েছে।” বিনোর আরও একটা লক্ষ্য সিনিয়র দলে সাপ্লাই লাইন ঠিকমতো ধরে রাখা। গতবার জেসিন টিকে ও পিভি বিষ্ণুকে সিনিয়র দলে প্রায় নিয়মিত খেলতে দেখা গিয়েছে। ফুটবল মহলে তঁাদের চিনিয়ে ছিলেন বিনো জর্জ। ঘরোয়া ফুটবল থেকেই তঁাদের উত্থান হয়েছিল। সেইজন্য বিনো জর্জ জানিয়ে দিলেন, ঘরোয়া লিগকে তরুণ প্রতিভার বিকাশ মঞ্চ হিসেবে তুলে ধরা তঁার লক্ষ্য হবে। যাতে ভবিষ্যতে সিনিয়র দল উপকৃত হয়।
নৈহাটি স্টেডিায়মে ইস্টবেঙ্গল খেলতে নামবে। বড় দল হিসেবে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটছে। ২৯ জুন রবিবার দ্বিতীয় বড় দল নামবে মহামেডান। মোহনবাগান নামবে তারপরের দিন, ৩০ জুন। তিন প্রধান মাঠে নেমে গেলে কলকাতা ফুটবল আবার তার পুরোন দিনকে স্মরণ করাতে বাধ্য।