ভারতীয় ক্রিকেটের লর্ডের উপর ভরসা নেই শুভমান গিলের। ইংল্যান্ড ইনিংসের স্কোর বোর্ডের দিকে তাকাল তেমনটাই মনে হবে। ভারতীয় বোলাররা বল করছেন ১০০.৪ ওভার। এর মধ্যে শার্দুল ঠাকুর করেছেন মাত্র ৬ ওভার। রান দিয়েছেন ৩৮। কোনও উইকেট পাননি। বুমরার পাশে বাকিরা যখন মানিয়ে নিতে পারছেন না, তখন শার্দুলকে দিয়ে আরও বেসি বল করানা হল না কেন! এই প্রস্ন উঠে গিয়েছে। এর জন্য ভারত অধিনায়ক শুভমান গিলকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে। কিন্তু এর উত্তর দেবেন কে! গিল উত্তর দিতে পারেন। না হলে ভারতীয় দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীর জবাব দিতে পারেন। আসলে টেস্টের মাঝে এঁদের দুজন নাগালের বাইরে। তাই শার্দুল ঠাকুরকে দিয়ে বল না করানোর অজানা কাহিনী জানা যাচ্ছে না।
ভারতীয় দলের শেষ ইংল্যান্ড সফরে শার্দুল ঠাকুর খেলেছিলেন। সেখানেই তাঁকে সতীর্থরা লর্ড নাম দেন। তারপর সেই নামেই তাঁকে ডাকা হয়। এবার জাতীয় দলে তিনি ঢুকেছেন। কিন্তু অধিনায়কের ভরসা নিতে ব্যর্থ। সব থেকে বড় ব্যাপার এটাই যে তৃতীয় দিনের চাপানের বিরতির ঠিক আগের ওভারে গিল বল করতে ডাকেন শার্দুলকে। তিনি আম্পায়ারের কাছে এসে সোয়েটার খুলে তাঁর হাতে দেন। ফিল্ডিং সাজানো নিয়ে কথাও গয় গিলের সঙ্গে। হঠাৎ করে গিলের নজর যায় বুমরার দিকে। তিনি ডকেন। কথা বলেন। শেষ ওভারটি বুমরা করতে পারবেন কিনা তা জানার চেষ্টা করেন। বুমরা রাজি হতে তাঁর হাতে বল তুলে দেন গিল। বোকার মতো কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে আম্পায়ারের কাছ থেকে সোয়েটার নিয়ে ফিল্ডিং করতে যান শার্দুল। এটা কি ঠিক হল। এবং এটা দেখার পর প্রাক্তনরা গিলের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁরা জানতে চান, বুমরাকে দিয়ে বল করাতে হলে কেন শার্দুলকে তিনি ডেকেছিলেন। প্রথমে বুমরাকে ডেকে কথা বলে নিতে পারতেন। বুমরা রাজি না হলে তখন অন্য কাউকে ডাকতে পারতেন। তা না করে গিল উল্টোটাই করলেন। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার।
হেডিংলে টেস্টের আগে ভারতীয় দলের সাত নম্বর জায়গা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে নীতিশ রেড্ডি নাকি শার্দুল ঠাকুর! কেন খেলবেন! এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রবি শাস্ত্রী বলেছিলেন, ভারতীয় দলকে ভাবতে হবে তারা বোলার অলরাউন্ডার চায় নাকি ব্যাটসম্যান অলরাউন্ডার চাইছে। সেটা ভেবে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নীতিশ ১২ থেকে ১৪ ওভার বল করতে পারলে দলে আসা উচিত। না হলে নয়। এত সব ভাবনার পর শার্দুলকে দলে নিয়ে আসা হয়। প্রথমে ভারতীয় দল ব্যাট করায় কোনও পরীক্ষা হয় না। শার্দুল ১ রানে আউট হন। এরপর ফিল্ডিং করতে নামার পর শার্দুলের সঙ্গে কি ঘটল তা সবাই দেখলেন। অনেকে বলেন ম্যাচে পঞ্চম বোলার সব সময় আন্ডার বোল হন। সেটা মেনে নিয়েই বলতে হচ্ছে ১০০ ওভারের ইনিংসে শার্দুল মাত্র ৬ ওভার বল করার সুযোাগ পেলেন। এমন নয় যে অন্যরা দারুন বল করছেন। সেটা হলে না হয় অন্যরকম ভাবা যেত। সেটাও যখন হল না, তখন গিল কেন এটা করলেন। টেস্ট অধিনায়ক হয়ে খেলতে নেমে প্রথমেই বড় ভুল করে ফেললেন শুভমান গিল। এ নিয়ে ভাবতে হবে। না হলে পরে আরও মুশকিলে তিনি পড়বেন।