“বিরতির সময় আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল। আমরা জানতাম বড় ম্যাচগুলোতে যে কোনও মুহূর্তে খেলা ঘুরে যেতে পারে। প্রথমার্ধে আমরা ভালই খেলছিলাম। পিছিয়ে থাকলেও তাই আমরা খুব একটা চিন্তিত ছিলাম না। তাই খেলতে নামার আগে আমরা সকলে মিলে শপথ নিই, চলো আমরা কিছু করে দেখাই।” ম্যাচের শেষে কথাগুলো বলেন ফ্ল্যামেঙ্গোর জর্জিনহো। যিনি একদা চেলসিতে খেলেছেন। তাই পুরোন দলকে হারাতে পেরে জর্জিনহো নিজের উচ্ছ্বাসকে লুকিয়ে রাখতে পারেননি।
ক্লাব বিশ্বকাপে আবার অঘটন। এবারও সেই অঘটন ঘটানোর সাক্ষী থাকল ব্রাজিলের ক্লাব। ৪৮ ঘন্টা আগে ইউরোপ সেরা ক্লাব পিএসজিকে হারিয়ে বিশ্ব ফুটবলকে চমকে দিয়েছিল বোতাফোগো। এবার সেই অঘটনের আর একটা সাক্ষী রাখল ফ্ল্যামেঙ্গো। চেলসিকে তারা হারিয়ে দিল ৩-১ ব্যবধানে। তাও আবার প্রথমার্ধে ১৩ মিনিটে গোল খেয়ে যায় ব্রাজিলের ক্লাব। বিরতি পর্যন্ত সেই পিছিয়ে ছিল ফ্ল্যামেঙ্গো। কিন্তু বিরতির পর যাবতীয় পাশার দান উল্টে দিল পেলের দেশের ছেলেরা। এই জয়ের ফলে শেষ ১৬-তে পৌছে গেল ফ্ল্যামেঙ্গো। সেই সঙ্গে ৩৩ বছর পর ইউরোপের কোনও দলকে পিছিয়ে থেকে হারাল দক্ষিণ আমেরিকার কোনও ক্লাব।
ম্যাচের সেরা ফ্ল্যামেঙ্গোর ব্রুনো হেনরিক।
লিঙ্কন ফিনান্সিয়াল ফিল্ডে ১৩ মিনিটের মধ্যে গোল করে এগিয়ে যায় চেলসি। পেদ্রো নেতো গোল করে যান। গোল খেয়েও হতোদ্যম হয়ে পড়েনি ব্রাজিলের ক্লাব। আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণে এক সময় মনে হচ্ছিল, যে কোনও দল গোল করে যেতে পারে। যদিও কিছুটা হলেও ফ্ল্যামেঙ্গোর আক্রমণে পাল্লা ছিল ভারি। ৬২ মিনিটের পর থেকে তারই প্রতিফলন ঘটে। ব্রুনো হেনরিকের গোলে সমতা ফিরে আসে ফ্ল্যামেঙ্গোর। তাসের ঘরের মতো এবার ভেঙে পড়ে চেলসি। প্রথম গোল খাওয়ার তিন মিনিটের মাথায় ফের গোল করে ফ্ল্যামেঙ্গোকে এগিয়ে দেন সেন্টারব্যাক দানিলো। কর্ণার থেকে হেনরিখের হেড করা বল দানিলোর পায়ে পড়তেই গোল করতে কোনও ভুল করেননি। ৬৮ মিনিটের মাথায় চেলসির বিপদ আরও বাড়ে। নিকোলাস জেকসন লালকার্ড দেখে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান। চেলসি তারপর ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে থাকে। ৮৩ মিনিটে প্রিমিয়ার লিগে খেলা ক্লাবটির কফিনে শেষ পেরেক পুতে দেন ফ্ল্যামেঙ্গোর ওয়ালাসে ইয়ান।
চেলসির নিকোলাস জেকসনকে লালকার্ড দেখাচ্ছেন রেফারি।
চেলসির প্রাক্তন তথা ফ্ল্যামেঙ্গোর বর্তমান মিডফিল্ডার জর্জিনহো খেলার পর বুঝিয়ে দিয়েছেন, যোগ্য দল হিসেবে তঁারা জিতেছেন। “খেলার রেজাল্ট বুঝিয়ে দিচ্ছে, আমরা কেমন খেলেছি। কতটা আধিপত্য নিয়ে সকলে কতটা ঝঁাপিয়েছে। যখন আমাদের অপেক্ষা করা দরকার ছিল, তখন আমরা অপেক্ষা করেছি। চাপ নেওয়ার যখন প্রয়োজন ছিল তখন তাদের সমস্যার ফেলার চেষ্টা চালিয়েছি। খেলতে নামার আগে তাদের সম্পর্কে আমাদের ভালমতো হোমওয়ার্ক ছিল। সেইমতো ঝঁাপাতেই তারা পিছোতে বাধ্য হয়েছে।” বিরতির পর খেলা ঘুরে যাওয়ার কারণ হিসেবে জর্জিনহো জানান, “ছোট ছোট জায়গায় আমরা তাদের ক্ষতি করতে চাইছিলাম। সেইসব জায়গা খুঁজে বের করে তাদের আঘাত করাতেই তারা পিছু হঠতে বাধ্য হয়।”