সুদীপ পাকড়াশী: সুপার কাপে প্রথম ম্যাচেই লজ্জ্বার বিদায়ের পর সাংবাদিক বৈঠকে ফুটবলারদের ‘ক্যাজুয়াল’ মানসিকতা নিয়ে অস্কার ব্রুজোর হতাশায় সম্মতি একাধিক ফুটবলারেরও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভারতীয় ফুটবলার মেনে নিচ্ছেন, সুপার কাপে কেরালা ব্লাস্টার্স-ম্যাচে ফুটবলারদের মধ্যে জেতার ন্যুনতম তাগিদটুকুও ছিল না।
আগামি মরশুমে দলের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গে ফুটবলারদের বিশ্লেষণে উঠে আসছে অন্যতম প্রধান একটা শর্ত। ড্রেসিংরুমের আবহাওয়া বদলাতে হবে। বিশেষত দল যখন ব্যর্থ হচ্ছে। এরকম বিদেশি নিয়ে আসতে হবে যার স্বভাব দলের মধ্যে গ্রুপ-তৈরি করে নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করে কথা বলা নয়। ভারতীয় ফুটবলারদের সঙ্গে নিজেদের মিশিয়ে সব ফুটবলারদের নিয়ে যারা চলতে পারবে এরকম বিদেশি। অর্থাৎ এককথায়, আগামি মরশুমে দলগঠনের সময়, শুধু ভাল ফুটবলার নিলেই হবে না, ‘ভাল মানসিকতার’ ফুটবলার প্রয়োজন, যাদের সহায়তায় ড্রেসিংরুমের গুমোটভাব কাটতে পারে।
আর এই প্রক্রিয়ায়, ক্লাবের নবনির্বাচিত ফুটবল ডিরেক্টর থাংবই শিংটোকে স্বাগত জানাচ্ছেন ফুটবলাররা। শিংটোর কোচিং অভিজ্ঞতা, বিশেষভাবে ভারতীয় ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ইস্টবেঙ্গলে আগামি মরশুমে দেখা যাবে বলে ফুটবলারদের বিশ্বাস। আর ফুটবলাররা মনে করছেন ড্রেসিংরুমের পরিবেশও পাল্টানোর ক্ষেত্রে শিংটোর ভূমিকা থাকবে। কারণ তা কোচিংয়ে-ই তার আগের ক্লাব, হায়দ্রাবাদ এফসি ১১ জন ভারতীয় ফুটবলারকে নিয়ে আইএসএলে ম্যাচ জিতেছিল গত মরশুমের আগের মরশুমে।
স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোর ওপর ভরসা রাখছেন ফুটবলাররা। অস্কারের সপক্ষে তাদের কাছে তথ্যও আছে। কার্লোস কুয়াদ্রাত চলে গিয়েছিলেন প্রথম তিন ম্যাচ হারের পর। তারপর দুটো ম্যাচ বিনো জর্জের কোচিংয়ে খেলেছিল লাল-হলুদ। ছয় নম্বর ম্যাচ থেকে দলের হাল ধরেছেন অস্কার। সেই হিসেবে এবাব্রের আইএসএলে অস্কারের পারফম্যান্স ধরলে, ইস্টবেঙ্গল চতুর্থ স্থানে শেষ করেছে।
ইস্টবেঙ্গলেরই অনূর্ধ্ব-১৫ দলের কোচ, দলের প্রাক্তন ফুটবলার ফাল্গুনী দত্তের দলের পারফরম্যান্স এবং আগামি মরশুম নিয়ে প্রতিক্রিয়া, “আমি তো সিনিয়র দলের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত নই। বাইরে থেকে খেলা দেখে মনে হয়েছে, দলে সংঘবদ্ধতার অভাব। ফুটবলারদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশের জেতার তাগিদই ছিল না। আমাদের সময়েও দল ব্যর্থ হয়েছে। আবার ঘুরেও দাঁড়িয়েছে। তার কারণ ছিল, আমাদের নিজেদের মধ্যে সাফল্য পাওয়ার তাগিদ ছিল। দলের ট্রেনিং-শিডিউলের বাইরেও আমরা নিজেরা বাড়তি ট্রেনিং করেছি। ক্লাব কর্তা বা কোচের চেয়েও এক্ষেত্রে ফুটবলারদের নিজেদের তাগিদই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
শিংটোকে স্বাগত জানালেন ফাল্গুনীও। বললেন, “গত এক দশক ধরে ও যে যে ক্লাবে গিয়েছে, সম্ভাবনাময় ভারতীয় ফুটবলার তুলে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জহুরীর চোখ ওর। আমার আশা, আগামি মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের সিনিয়র দল তৈরির ক্ষেত্রেও শিংটো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।”