কলকাতা নাইট রাইডার্সের পুরনো ব্যথা নতুন করে চাগিয়ে দিয়ে গেলন শুভমন গিল। গিল-সুদর্শন ওপেনিং জুটির কাছে, বিশেষত তাদের প্রাক্তনী শুভমনের কাছেই হেরে গেল কেকেআর। ইডেন নাইটদের ৩৯ রানে হারাল গুজরাট টাইটানস। ব্যাপারটা কাকতালীয় হতে পারে কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই দেখা যাচ্ছে প্রাক্তনীরাই কেকেআরের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরে এটা প্রায়ই দেখা যাচ্ছে।
সোমবারের ইডেনে যেমন শুভমন গিল। ৫৫ বলে ৯০ রানের ইনিংসে যেমন ছিল সাবলীলতা, তেমনি ছিল বুদ্ধিমত্তা। সাই সুদর্শনের সঙ্গে তাঁর ওপেনিং জুটিতে উঠল ১২.১ ওভারে ১১৪ রান। সেখান থেকে কেকেআরের সামনে ১৯৯ রানের টার্গেট দিল গুজরাট। তাদের রানটা যে ২২০-তে গেল না, সেটা নাইটদের সৌভাগ্য। সুদর্শনও করে গেলেন ৫২ রান। এরপর আবার জস বাটলার। এদিন তেমন টাচে ছিলেন না। দুটি সুযোগ দিয়ে তবু করে গেলেন ২৩ বলে অপরাজিত ৪১ রান। পরের দিকে কিছুটা ভাল বল করে কেকেআরকে লড়াইয়ে ফেরান বোলাররা।
কিন্তু এই টপ অর্ডার, এই মিডল অর্ডার নিয়ে ১৯৯ রান টপকে যাওয়াটাও যে কেকেআরের কাছে খুব কঠিন কাজ। ধুঁকতে ধুঁকতে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৯ রানে থেমে গেল রাহানেদের ইনিংস। এই বয়সে, টি টোয়েন্টিতেও যদি একমাত্র অধিনায়ক রাহানেকেই নির্ভরযোগ্য মনে হয়, একমাত্র সেনসেবল মনে হয়, তাহলেই বোঝা যায় দলটার ব্যাটিংয়ের কী হাল। এদিনও অর্ধশতরান করলেন।
ডি ককের জায়গায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে আনা হয় গুরবাজকে। দরকার ছিল কি? সিরাজের প্রথম ওভারেই ফিরে গেলেন আফগান তারকা। নারিনও ক্লিক করলেন না। আর বেঙ্কটেশ আইয়ার? ২৩ কোটির চাপে কুঁকড়ে থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ১৯ বলে ১৪ রান করে যেন মুক্তি দিলেন ইডেনকে! এবং আন্দ্রে রাসেল। এক সময়ের মহাতারকাকে নিয়ে কি এবার নতুন করে ভাবার সময় হয়েছে? এই মরসুমে রিঙ্কু সিংয়েরও যেন সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। নিঃসন্দেহে গুজরাট বোলাররা ভাল বল করেছেন, কিন্তু মূলত এই কারণগুলোর জন্যই এত অনায়াসে তাদের জয়টা এল।
গুজরাট টাইটানস শুধু ১২ পয়েন্ট নিয়ে মগডালে বসে আছে বলেই নয়, এই মরসুমে এই দলটাকে থামানো সবার পক্ষেই বেশ কঠিন, কারণ এত সঙ্ঘবদ্ধ, এত বুদ্ধিমান, এত পরিণত দল আইপিএলে বোধহয় আর নেই।
গুজরাট দলটায় যেমন ট্যালেন্টেড ক্রিকেটার রয়েছে, তেমনি স্টেডি ক্রিকেটারের সংখ্যা বেশি। মাথা দিয়ে কীভাবে ক্রিকেটটা খেলতে হয় সেটা দেখিয়ে চলেছে। আর একটা ব্যাপার, তাদের তুরূপের তাস হল প্রথম তিন ব্যাটসম্যান। প্রায় প্রতি ম্যাচেই গিল, সুদর্শন এবং বাটলারের মধ্যে একজন শেষ অবধি থেকে ইনিংসটাকে গড়ে তুলছেন। এদিন যে কাজটা করলেন শুভমন গিল। কেকেআরকে এমন একটা জায়গায় ঠেলে দিয়ে গেলেন, যেখান থেকে প্ল অফে যেতে গেলে সাঁতরে সমুদ্র পার হতে হবে।