“সত্যি আমি ভাবিনি, ফরাসি ওপেন জিততে পারব। এটা যে করার মতো ক্ষমতা রয়েছে তা কখনও ভাবিনি।” চোখে আনন্দাশ্রু। মুখে গুটিকয়েক কথা বলেই কেমন যেন আনমনা হয়ে গেলেন কোকো গফ। ততক্ষণে প্যারিসের মাটিতে জয়ধ্বজা উড়িয়ে দিয়েছেন কোকো। জীবনে প্রথম ফরাসি ওপেন জয়ের আনন্দ যেন তঁাকে গ্রাস করে ফেলেছে। কোকোর নামে গ্যালারিতে উঠছে জয়ধ্বনি। তবে গফের কাছে এটি হল দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম। দু-বছর আগে ২০২৩ সালে তিনি জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জিতে নিয়েছিলেন ইউএস ওপেন। এবারের মতো সেবারও যে তঁার শিকার ছিলেন আরিনা সাবালেঙ্কা। শনিবার প্যারিসের মাটিতে তিনি সাবালেঙ্কার কাছে প্রথম সেট খোয়ালেও শেষমেশ ৬-৭ (৫-৭), ৬-২ ও ৬-৪ সেটে জিতে নেন।
প্রথম সেট দেখার পর কোনও টেনিস বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করতে পারেননি গফ জিততে পারেন। ডাবল ব্রেক করে বসেছেন। সকলের ধারণা তখন সাবালেঙ্কার জয় নিশ্চিত। কিন্তু তারপর বেলারুশ তনয়া একের পর এক ভুল করতে লাগলেন। যে ভুলের ফায়দা নিয়ে বাজিমাত করে গেলেন গফ। সাবালেঙ্কা তাই ম্যাচের শেষে স্বীকার করে নেন, গফ তঁার চেয়ে অনেক ভাল খেলেছে। তাই তিনি হার স্বীকার করার মধ্যে কোনও আফসোস করছেন না। প্রথম দুটো সেটে বাতাসের গতিবেগ ছিল বেশি। যার ফলে খেলা ঠিক জমে ওঠেনি। ২০২২ সালে ফাইনালে উঠে হেরে গিয়েছিলেন গফ। তৃতীয় সেটে গফ যেন অন্য মূর্তি ধারণ করেন। সেট জেতার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে ছিল তঁার স্বচ্ছন্দভাব।
সেরেনা উইলিয়ামসের পর কোনও আমেরিকান জয়ধ্বজা ওড়ালেন ফ্রান্সের মাটিতে।
গফ যখন পরপর দুটো সেট জিতে ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ধ্বজা উড়িয়ে দিয়েছেন তখন দেখা যায় গ্যালারিতে উদ্দাম নাচ নাচছেন গফের বাবা-মা ক্যান্ডি ও কোরি। সাবালেঙ্কার সাথে করমর্দন করে গফও ছুটে চলে যান স্ট্যান্ডে বাবা-মার কাছে। আসলে তিন বছর আগে হারার যন্ত্রণা তঁাকে বারবার বিদ্ধ করেছিল। তাই গফ যেন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, একদিন এই হারের মধুর প্রতিশোধ নেবেন। তাই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর গফ বলেন, “তিন বছর আগে যখন এখানে হেরেছিলাম তখন আমি প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। তাই আজ এখানে চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে সত্যি আমি খুশি। যাবতীয় খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলা দিনগুলোকে ফেলে আসতে পেরেছি।” আসলে ক্লে কোর্টে জেতার অভ্যাস আগেই করে এখানে নেমেছিলেন। মাদ্রিদ ও রোম তার সাক্ষী। এই দু-জায়গায় তিনি ফাইনালে উঠেছিলেন। “তিনটে ফাইনাল। আমার মনে হয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জয় আসল সময়ে পেলাম। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” বলে ফেললেন গফ। সেরেনা উইলিয়ামসের পর কোনও আমেরিকান ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন হলেন। অন্য কেউ নন, তিনি যে গফ।