মনে থাকবে হংকং। থাইল্যান্ড ভাসবে চোখের সামনে।
বুধবার থাইল্যান্ডের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলবে ভারত। এই ম্যাচের গুরুত্বর নিরিখে যদি ধরা হয় তাহলে বলতে হবে অপরিসীম। যেখানে হংকং ম্যাচের প্রস্তুতি সারবে ভারত। আসলে এশিয়া কাপের যোগ্যতামানের খেলায় ভারতের সামনে মরণ-বঁাচন ম্যাচ। বাংলাদেশের সঙ্গে খেলায় গোলশূন্য ড্র করে একরাশ সমস্যার মধ্যে পড়ে গিয়েছে ভারত। হংকংকে যদি হারাতে না পারেন সুনীল ছেত্রীরা তাহলে খাদের কিনারায় চলে যাবে দল। থাইল্যান্ড ম্যাচের গুরুত্ব ঠিক কোথায় অপরিসীম? একটাই কারণ-থাইল্যান্ডকে হারাতে পারলে ভারতের মনোবল অনেকটাই বেড়ে যাবে। তাহলে হংকংকে অনেকটা খোলা মনে মোকাবিলা করতে পারবে ভারত। তাই থাইল্যান্ড ম্যাচের গুরুত্ব এই জায়গায় অপরিসীম। আবার থাইল্যান্ডের কাছেও ম্যাচটার কদর কম নয়। যেহেতু থাইল্যান্ডও খেলবে এশিয়া কাপের যোগ্যতামানের খেলায় তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে।
থাইল্যান্ড-ভারতের মধ্যে যদি পার্থক্য ধরা হয় তাহলে বলতে হবে, অনেকটাই। যেখানে ফিফা ক্রমতালিকায় ভারত রয়েছে ১২৭ নম্বরে। সেখানে ৯৯তম স্থানে থাইল্যান্ড। ভারতের কোচ তাই চাইছেন থাইল্যান্ডকে হারিয়ে দলের মধ্যে হতোদ্যম দশা কাটিয়ে তুলতে। “আমাদের কাছেও ম্যাচের গুরুত্ব যেমন রয়েছে, থাইল্যান্ডের কাছেও তাই। ম্যাচটা তাই ফ্রেন্ডলি হলেও দুটো দল চাইবে নিজেদের উজাড় করে দিতে। তাই কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না।” বললেন ভারতের প্রধান কোচ মানোলো মার্কেজ। কোচের সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে। তঁার কথাতেও ফুটে উঠল সেই একই কথার রেশ। তবে ভারতীয় দলের উইঙ্গার মনে করছেন, থাইল্যান্ড যেমন আক্রমণাত্মক খেলতে অভ্যস্থ। আবার রক্ষণের ক্ষেত্রেও সমান পারদর্শী। তবু থাইল্যান্ডকে হারানোর স্বপ্ন দেখছেন ছাংতে। তার কারণ একটাই, “যদি আমরা জিততে পারি তাহলে দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জন্মাবে। সেই আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে আমরা পরবর্তী খেলায় জেতার দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে যেতে পারব।”
জাপানের কোচ মাসাতদা ইশির সঙ্গে থাইল্যান্ডের ফুটবলার।
দীর্ঘ ৬ বছর পর দু-দল মুখোমুখি হবে। ভারতের পক্ষে প্লাস পয়েন্ট হল, গত দুটো ম্যাচে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে ছিল ভারত। ২০১৯ সালে এএফসি এশিয়ান কাপে ৪-১ গোলে। কিংস কাপে ব্রোঞ্জ পদক এসেছিল থাইল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে। এবার তাই জয়ের হ্যাটট্রিকের পালা ভারতের সামনে। মানোলো মার্কেজ জানিয়ে দিলেন, সেসব নিয়ে তিনি ভাবতেই রাজি নন। “খেলাগুলো হয়েছে অনেকদিন আগে। গত সপ্তাহে বা গত মাসে তো নয়। মাঝে অনেক দিন পেরিয়ে গিয়েছে। দুটো দলের মধ্যে অনেক পরিবর্তন নিশ্চয় এসেছে। তাই সেই খেলার রেজাল্ট দিয়ে বর্তমানকে তুলনা না করাই ভালো। তবে আশা করব আপনাদের কথা যেন ফলে। আমরা যেন সেই ব্যবধানে জিততে পারি।” শেষের কথাগুলো বলার সময় মানোলোর মুখে ফুটে উঠল হাসির রেখা। ২০১৯ সালে যারা থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে নীল জার্সি পরে খেলেছিলেন তারমধ্যে বর্তমান দলে রয়েছেন সাতজন। অন্যদিকে দুজন আছেন থাইল্যান্ড দলে। বর্তমান থাইল্যান্ডের কোচ হলেন জাপানের মাসাতদা ইশি। তিনিও মানোলোর ভাষা ধার করে বুঝিয়ে দিলেন, গত দুটো ম্যাচে হারলেও তিনি চিন্তিত নন। তখন তিনি যেমন কোচ ছিলেন না থাইল্যান্ডের। অন্যদিকে দলেও ব্যপক পরিবর্তন হয়েছে। তবে থাইল্যান্ডও জানিয়ে দিল, জেতা ছাড়া তারা অন্যকিছু ভাবতে রাজি নয়। যেহেতু তারাও পরবর্তী ম্যাচ খেলবে তুর্কেমেনিস্তানের সঙ্গে। সেই ম্যাচ জেতাও তাদের কাছে জরুরী। এখন দেখার হারার যন্ত্রণা মুছে ফেলার জন্য থাইল্যান্ড কতটা ঝঁাপায়। নাকি জয়ের হ্যাটট্রিকের পথে পা বাড়াবে ভারত। সব প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে বুধবার সন্ধ্যায়।