দুবারের অলিম্পিক পদক জয়ী নীরজ চোপড়া ৯৪ মিটার পর্যন্ত বর্শা ছেঁাড়ার ক্ষমতা রাখেন বলে জানিয়ে দিলেন বায়োমেকানিক্স বিশেষজ্ঞ ডঃ ক্লাউস বার্তোনিয়েত্্জ। ছয় বছর আগে ২০১৯ সালে নীরজের দলের সাথে একজন বায়োমেকানিক্যাল বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে নীরজকে ছেড়ে চলে যান জ্যাভলিন থ্রো কোচ কিংবদন্তী জার্মান উয়ে হোন। তঁার জায়গায় এবার কোচের দায়িত্ব নেন ক্লাউস। তিনি ও নীরজ জুটি দুটি অলিম্পিক ও দুটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে পদক নিয়ে এসেছেন। তাছাড়া চিনের হ্যাংজুতে এশিয়ান গেমসের সোনার পদক অক্ষত রাখতে নীরজকে সাহায্য করেছিলেন। সবকিছু ঠিকঠাক চললেও ৯০ মিটারের বাধা অতিক্রম করতে পারছিলেন না নীরজ। তাই এই বছরের শুরুতে কোচ হিসেবে নিয়ে আসা হয় চেক কিংবদন্তী জান জেলেজনিকে। তঁার প্রশিক্ষণেই ভারতীয় থ্রোয়ার সম্প্রতি দোহা ডায়মন্ড লিগে ৯০.২৩ মিটার থ্রো করেছেন। বহুদিনের আশাও পূর্ণ হয়েছে। তাই বলে ক্লাউস ভারত ছেড়ে এখন চলে গিয়েছেন তা নয়। তিনি ভারতের জুনিয়র জ্যাভলিন থ্রোয়ারদের প্রশিক্ষণ দেন।
“একজন অসাধারণ কোচের অধীনে আছে নীরজ। জেলেজনি ও আমি একসঙ্গে নীরজের ব্যাপারে কথা বলেছি। প্রত্যক্ষভাবে সবকিছু যাচাই করার পর জেলেজনি বলেছিলেন ৯০ মিটার দূরত্বে বর্শা ছেঁাড়ার ক্ষমতা রয়েছে নীরজের। আসলে জেলেজনি হলেন সেই ধরনের কোচ যিনি প্র্যাকটিস আর প্রতিযোগিতার মধ্যে পার্থক্য খেঁাজেন না। তঁার কাছে প্র্যাকটিশ মানেই প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়া। আবার প্রতিযোগিতায় নামা মানে তিনি মনে করেন প্র্যাকটিশের ধাতে এগোন। সোজা কথা তঁার কাছে দুটোই সমান। দোহাতে ৯০ মিটার থ্রো করে দ্বিতীয় হয়েছে বলে হয়তো মনে কষ্ট পেয়েছে। তবে আমি নিশ্চিত যে কোনও দিন ৯২, ৯৩ কিংবা ৯৪ মিটার অব্দি বর্শা ছুঁড়ে দেবে। তার সেই ক্ষমতা আছে। এই মুহূর্তে জীবনের সেরা ফর্মে আছে নীরজ। কঁুচকির চোট তাকে অনেক সময় ভুগিয়েছে। এখন সেই চোট আর নেই বললে চলে।” বলছিলেন ক্লাউস।
প্রশ্ন হল, কী পরিবর্তন এসেছে নীরজের মধ্যে? যার দ্বারা তিনি থ্রো-তে অনেকটা পরিবর্তন ঘটাতে পারছেন? প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ক্লাউস বলেন,“দক্ষিণ আফ্রিকার পচেস্ট্রুমে জেলেজনি ও আমি একসঙ্গে তাকে প্র্যাকটিশ করিয়ে ছিলাম। দুজনের কাছেই তার টেকনিক্যাল দিকগুলো জানা। নীরজ তাই চেয়েছিল জেলেজনিকে কোচ হিসেবে নিতে। আসলে জেলেজনি খুব সহজ দর্শনের উপর ভিত্তি করে প্রশিক্ষণ দেয়। সর্বদা স্মার্ট প্রশিক্ষণের দিকে মনোযোগী হয়ে থাকে। ৫-৬ বছর ধরে একইরকম ভাবে নীরজের সঙ্গে কাজ করেছি। খুব বড়সড় কিছু পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করিনা। আগেও ৯০ মিটারের দরজাতে কড়া নাড়ছিল। তবে জেলেজনির অধীনে প্র্যাকটিশ করে রান আপ, থ্রো বা ল্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় নিখঁুত করতে পারছে। এটাই আপাতত আমার চোখে নীরজের প্লাস পয়েন্ট বলে মনে হয়েছে।”
ক্লাউস স্বীকার করছেন তিনি যখন নীরজের দায়িত্ব নেন তখন তঁার কাছে মস্তবড় চ্যালেঞ্জ ছিল, স্টাইলের সাথে প্রশিক্ষণের পদ্ধতির একটা ভারসাম্য খঁুজে পাওয়া। তাছাড়া নীরজের লক্ষ্য কি তাই নিয়ে তঁাকে ভাবতে হয়েছিল। ক্লাউস আসার পর শক্তি, ফিটনেস ও টেকনিকের উপর জোর দিয়েছিলেন। প্রতিটি গাড়ির স্পিড এক নয়। এক একটা গাড়ি এক এক রকম স্পিড নিয়ে চলে। নীরজের ক্ষেত্রে সেই দিকটা খঁুজে পেয়েছিলেন ক্লাউস। বিশেষ করে দৌড়নোতে তেমন গতি ছিল না। তাছাড়া বর্শা ছেঁাড়ার ক্ষেত্রে কোনও কোনও জায়গায় একটা বাধা থাকছিল। ক্লাউস তাই চাইছিলেন, ভিতর থেকে নীরজের মধ্যে পরিবর্তন আনতে। সেই পরিবর্তনটা নিয়ে আসায় তঁার কাজ অর্ধেক সম্পন্ন হয়ে যায়। ২০১৯ সালে চোট পেয়ে বসেন নীরজ। সেই সময় আবার কোভিড চলছে। যখন তিনি চোট পান তখন সেরা ফর্মে পৌছে গিয়েছিলেন। এখনকার সঙ্গে তখনকার পরিস্থিতির মধ্যে কোনও পার্থক্য খঁুজে পাচ্ছেন না বলে জানালেন ক্লাউস। “২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিল। সেখানে একটা প্রতিযোগিতায় মাত্র ৮৭ মিটার থ্রো করে। তবে টোকিও অলিম্পিক নিয়ে দারুন আশাবাদী ছিল। সেইসয়ম আবার অলিম্পিক পিছিয়ে যায়। একজন অ্যাথলিটকে সেইসময় অনুপ্রাণিত করা সহজ ছিল না। ততদিনে একটা ব্যাপার ঘটে গিয়েছে। আমি আর তখন কোচ ছিলাম না। ততদিনে নীরজের এক পথপ্রদর্শক, শুভাকাঙ্খী ও প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেছি। তাই আমার কাছে সেই মুহূর্তে কাজ করা অনেকটা সহজ হয়ে গিয়েছিল।” বলেন ক্লাউস।

ইংল্যান্ড সিরিজে কে এল রাহুলকে অধিনায়ক করা যেতে পারতঃ মঞ্জরেকর
সঞ্জয় মঞ্জরেকর এমনই। কোন কথায় বিতর্ক দানা বাঁধবে, সবসময় সেটাই তিনি খোঁজেন। এবং তাঁকে ঘিরেই বিতর্ক বেড়ে ওঠে। এই