ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে ভারতীয় দলের প্রথম একাদশে বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার কুলদীপ যাদবকে কি খেলতে দেখা যাবে। নানা মুনির নানা মত হলেও একটি ব্যাপারে সবই একমত, এজবাস্টনে কুলদীপকে চাই। সিরিজে ভারত পিছিয়ে রয়েছে। এজবাস্টন টেস্ট হাতছাড়া হয়ে গেলে বেন স্টোকসদের ধরা যাবে না। তাই যা করার হোক, বার্মিংহামে করতে হবে। তারই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় দল।
এজবাস্টনের উইকেট শুষ্ক। পেসাররা কতটা সুবিধা পাবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তার উপর আবার বুমরাকে নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। ভারতীয় নেটে বল করলেও বুমরা দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন কিনা তা এখনও কেউ বলতে পারছেন না। সবাই ধরে নিয়েছেন এজবাস্টনে দেখা না গেলেও লর্ডস টেস্টে তিনি খেলবেন। তাই বোলিং নিয়ে আরও চাপে পড়েছেন অধিনায়ক শুভমান গিল। টিম ম্যানেজমেন্টের আলোচনায় কি বেরিয়ে এসেছে, তা সামনে আসেনি। ধরে নেওয়া হচ্ছে যে কুলদীপকে প্রথম একাদশে রেখে ভারতীয় মাঠে নামবে। সঙ্গে কি জাদজো থাকবেন। প্রথম টেস্টে তাঁর বোলিং দেখে কেউ সন্তুষ্ট হতে পারেননি। আক্রমানত্মক বোলিং তাঁর কাছ থেকে দেখতে পাওয়া যায়নি। লাইনে গরমিল করে তিনি ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের সুবিধা করে দিয়েছেন। তাই ভারত এক স্পিনারে যাবে নাকি দুই স্পিনার নিয়ে খেলবে তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।
ধরে নেওয়া যাক, কুলদীপ এজবাস্টনে খেলবেন। ইংল্যান্ড পৌঁছে তিনি যে প্রস্তুতি শুরু করেছেন তা নয়। নির্বাচকদের উপর ভরসা ছিল। নিজের উপর বিশ্বাসও ছিল। তাই আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের পরামর্শদাতা হয়ে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক কেভিন পিটারসেন আসার পর কুলদীপের সুবিধা হয়ে যায়। প্রায় প্রত্যেকদিন কেপির সঙ্গে ইংল্যান্ডে খেলা নিয়ে ক্লাস করেন। কেপির পরামর্শ মেনে নেটে বোলিংয়ের প্রস্তুতি শুরু করেন। এক সাক্ষাতকার কুলদীপ বলছেন, ইংল্যান্ডে স্পিনাররা কীভাবে বোলিং করবে। পেসারদের উপর সব কিছু ছেড়ে দিয়ে ব্যাটসম্যানদের উইকেটে আটকে রাখতে চেষ্টা করবেন। ইংল্যান্ডে খেলতে যাওয়া মানে পেসারদের দাপট দেখা যাবে। তাই রান আটকে দিতে পারলে পেসারদের কাজের সুবিধা হয়ে যাবে। এই ধারণা ভেঙ্গে দিয়েছেন কেপি। তিনি বলেছেন, ভুলেও সে পথে পা বাড়াব না। তোমাকে মাথায় রাখতে হবে রান আটকে দেওয়া নয়, তোমাকে উইকেট নিতে হবে। একজন স্পিনারের কাজ রান আটকে রাখা নয়। উইকেট চাই। ত হলে প্রতিপক্ষ চাপ পড়ে যাবে।
২০১২ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে ভারত সফরে এসেছিলেন কেপি। রানও করেছিলেন। স্পিনারদের বিরুদ্ধে কীভাবে খেলতে হবে, তার প্রস্তুতি নিয়ে তিনি ভারতে এসেছিলেন। তাই সফল হতে অসুবিধা হয়নি। কুলদীপ বলেন, আইপিএলে পরও কেপির সঙ্গে ইংল্যান্ডের প্রতিটি ব্যাটসম্যানের দুর্বল জায়গাগুলি নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আসলে ইংল্যান্ড সফর নিয়ে তিনি আমাকে অনেক ইনপুট দিয়েছেন। বিভিন্ন সেন্টারে পিচ কেমন হবে, কোন ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে কেমন ফিল্ডিং সাজাতে হবে। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। সেখানে একজন বোলারের মানসিকতা কেমন হবে তা বলে দিয়েছিলেন কেপি। এই আলোচনায় কেপি বলেছিলেন, যদি খেলার সুযোগ পাও, যদি ১৫ থেকে ২০ ওভার বল করতে হয়, তা হলে তোমাকে ভাবতে হবে কীভাবে ব্যাটসম্যানকে আউট করা যায়। এই মানসিকতা নিয়ে খেলতে নামলে তুমি সফল হবে। আসল পরীক্ষা তোমার বোলিংয়ের লাইন কেমন হবে। সেটা ঠিক করে ফেলতে পারলে তুমি সফল হবে।
কেপির পরামর্শ নিয়ে এগোবার কথা ভাবছেন কুলদীপ। এখন অপেক্ষা এজবাস্টনে প্রথম একাদশে তিনি জায়গা পাবেন কিনা। পেলে নিজেকে প্রমান করতে হবে। না হলে হারিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনও পথ খোলা থাকবে না।