গতবারের চ্যাম্পিয়নরা এবারের আইপিএলে প্রচন্ড চাপে। আট ম্যাচের পর ৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে সাত নম্বরে। এই জায়গা থেকে প্লে অফ খেলতে গেলে অন্তত বাকি ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জিততেই হবে। সঙ্গে রান রেটের দিকেও নজর রাখতে হবে। কথাটা যত সহজে বলা যাচ্ছে, কাজটা ততটাই কঠিন। বিশেষ করে কেকেআর যেভাবে খেলছে, তারপর তাদের উপর কেউ ভরসা রাখতে পারছেন না। কেকেআর ফ্যানরা হতাশ দলের এই পারফরম্যান্সে। কেন এমন বেহাল কেকেআর!
এক টিভি চ্যানেলে বিশেষজ্ঞর কাজে ব্যস্ত জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক অনিল কুম্বলের চোখে যা ধরেছে, তা তিনি সামনে আনলেন। তাঁর কথায় নিজেদের ভুলে কেকেআর ডুবছে। এভাবে খেললে তাদের পক্ষে শেষ চারে যাওয়া কঠিন। ভাবনায় গলদ থাকলে ম্যাচ কী করে বের করাে যাবে। গতবারের চ্যাম্পিয়নদের কাছে এমনটা আশা করা যায় না।
সোমবার রাতে ইডেনে গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে কোথায় ভুল কেকেআরের! কুম্বলে বলছেন, ১৯৯ রান তুলে ম্যাচ জিততে হলে পাওয়ার প্লে-তে অনেক বেশি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে হবে। সেখানে যত বেশি রান তুলবে, ম্যাচ তোমার দিকে চলে আসবে। কেকেআর পারেনি। তার উপর শুরুতে দুটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়। তবু বলব, থেকে ম্যাচ বের করা যেত। কেকেআর ম্যানেজমেন্ট চালে ভুল করে ফেলল। ভাবতে অবাক লাগে আন্দ্রে রাসেলের কাছে ওরা কী চাইছে। ওকে নিশ্চয় ডাগআউটে বসিয়ে রাখার জন্য দলে নেওয়া হয়নি। ওর পাওয়ার ক্রিকেটকে বাইশ গজে কাজে লাগাতে হবে। তার জন্য কেকেআর ম্যানেজমেন্ট যা করছে তা মানা যায় না। ওদের ভাবনায় এটাই নিশ্চয় কাজ করে, রাসেলকে ডেথ ওভারে পাঠিয়ে সুবিধা আদায় করে নিতে। কিন্তু সব সময় সেটা কাজে আসে না। রান রেট অনেক বেড়ে যায়। রাসেল তখন মাঠে নেমে কিছু করতে পারবে ন। উল্টে বেহিসেবী স্ট্রোক খেলে উইকেট দিয়ে আসবে। গুজরাটের বিরুদ্ধে ছয় নয়, আরও আগে রাসেলের মাঠে আসা উচিত ছিল। ওকে দেখলে প্রতিপক্ষ মানসিক দিক থেকে চাপে পড়ত। সেই সুবিধা রাসেল নিতে পারত। কিন্তু আমার অবাক লাগল, দল যখন চাপে পড়েছে, তখন রাসেলের মতো ব্যাটসম্যান ডাগআউটে। কেন এমন হবে! তা হলে ওকে নেওয়া হল কেন!
আসলে কুম্বলে চাইছেন, রাসেলকে প্রয়োজনে চার নম্বরে আনতে। রাসেল এলেন ১২.৩ ওভারে। দলের রান ৪ উইকেটে ৯১। জেতার জন্য দরকার ৪৫ বলে ১০৮ রান। হাত ছয় উইকেট। এই জায়গা থেকে ম্যাচ বের করা সহজ নয়। রাহানের পর রাসেল এলে হাতে উইকেট থাকত। আর ও নিজেও পাঁচ-ছটি বল খেলে সেট হওয়ার সুযোগ পেত। কিন্তু রাহানের পর আইয়ার, রিঙ্কুরা মাঠে এল। ওরাও আক্রমনাত্মক ক্রিকেট খেলে। কিন্তু রাসেলের মতো নয়। পাওয়ার হিটার কখনই নয়। ডাগআউটে বসে রাসেল এসব দেখলেন। তারপর উইকেটে এসে ১৪০ স্ট্রাইক রেট রেখে ১৫ বলে ২১ রান করে আউট হলেন। তিনি যখন ফিরলেন, দলের রান ৫ উইকেটে ১১৮ (১৫.৩ ওভার)। ম্যাচ সেখানেই শেষ। ভুল স্ট্র্যাটেজিতে কেকেআর মাত। এর দায় কে নেবেন! এটাই কি বলা হবে যে রাসেলরা এবার রান পাচ্ছেন না। তাই দল চাপে। এখনই তো সব দোষ ওদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। তা হলে কুম্বলের প্রশ্নের উত্তর কী দাঁড়াল! না এর ব্যাখ্যা কেকেআর শিবির থেকে নেই। ম্যানেজমেন্টের ভাবনার বদল না হলে দলের হাল এমনটাই তো হবে।