মানোলো মার্কেজ কোচ হিসেবে থাকবেন কি থাকবেন না তা ভবিষ্যত বলবে। কিন্তু জাতীয় দলের কোচের বিরুদ্ধে কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট বা স্বার্থ সংঘাতের অভিযোগ উঠল। যা ভারতীয় ফুটবলে অতীতে কখনও শোনা যায়নি।
হংকং-এর বিরুদ্ধে হারার পর এমনিতেই মানোলো মার্কেজকে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে রাখা নিয়ে ফুটবল মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন, তঁাকে আর কোচ রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। যেহেতু তিনি কোচ হয়ে আসার পর ভারতীয় দলে বিন্দুমাত্র সাফল্য এনে দিতে পারেননি। তাই মানোলোকে সরাতে চান ভারতের প্রাক্তন ফুটবলাররা। এমন বিদ্রোহের আগুন যখন দাউ দাউ করে জ্বলছে তখন তঁার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলো। প্রধান অভিযোগ, মোহনবাগানে খেলবেন বলে একপ্রকার কথা দিয়েছিলেন পাঞ্জাব এফসির অভিষেক সিং। এমন কী অর্থের ব্যাপারে পাকা কথা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জাতীয় ক্যাম্প চলাকালীন পাশার দান উল্টে দেন কোচ মানোলো। তিনি তো জাতীয় দলের কোচ শুধু নন, আইএসএল খেলা গোয়া এফসির কোচও। সেই কারণে অভিষেককে তিনি প্রস্তাব দেন, গোয়ার হয়ে খেলার জন্য। মোহনবাগানে না যাওয়ার পেছনে তিনি কারণ হিসেবে এও বলেন, যেহেতু শুভাশিস বোস লেফট ব্যাকে খেলেন। এমন কী মোহনবাগানের অধিনায়কও। সেখানে সই করলে তিনি আদৌ খেলার সুযোগ পাবেন না। সঙ্গে সঙ্গে অভিষেক নাকি এও বলেন, গোয়ার তো জয় গুপ্তা লেফট ব্যাক পজিশনে খেলেন। তাহলে সেখানে গিয়ে হবে কি! সেখানে গিয়েও তো খেলার সুযোগ পাবেন না। তখন নাকি মানোলো আশ্বস্ত করে বলেন, এই নিয়ে ভাববার কিছু নেই। জয় গুপ্তার যা ব্যবস্থা করার তিনি করবেন। পরবর্তীকালে নাকি জয় গুপ্তাকে ইস্টবেঙ্গলে খেলার ব্যবস্থা করে দেন তিনি। এখন ইস্টবেঙ্গলের পথে জয় গুপ্তা। সৌজন্যে মানোলো মার্কেজ।
জাতীয় কোচ মানোলোর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন সৃঞ্জয়।
২৯ জুন মানোলোর ভবিষ্যত ঠিক হবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির সভায়। সেখানেই জানা যাবে তঁাকে আর জাতীয় দলের কোচ হিসেবে রাখা হবে কিনা। কিন্তু মানোলোর এই ভূমিকা দেখে বেজায় চটেছে ফুটবল মহল। তঁারা মনে করছেন, একজন আইএসএল খেলা কোচের হাতে কখনও জাতীয় দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া উচিত নয়। মোহনবাগান সচিব সৃঞ্জয় বোস তো বলেই দিলেন, “আমি তো আগেই বলেছি, একজন ক্লাবের কোচকে কখনও জাতীয় দলের দায়িত্ব দেওয়া উচিত হয়নি। এতে আর যাইহোক জাতীয় দলের ভাল কিছু হয়না।” মোহনবাগানে নিশ্চিত হয়ে যাওয়া অভিষেক সিং সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “স্বার্থের সংঘাত অবশ্যই ঘটেছে। একজন জাতীয় দলের কোচ হয়ে কখনও তিনি একজন ফুটবলারকে বলতে পারেন না, কোন ক্লাবে সে যাবে, কোন ক্লাবে সে যাবে না। আমার প্রশ্ন হল, একজন ক্লাবের কোচ কখনও ফেডারেশনের কোচ হতে পারে? শুরুতেই তো গলদ। ভারতীয় দলের পারফরম্যান্স এইজন্যই তো খারাপ হল। ক্লাবের কোচকে যদি জাতীয় দলের কোচ করা হয় তাহলে এমনই হবে।” সৃঞ্জয় মনে করছেন, ফেডারেশনের আগে দেখা উচিত, জাতীয় দলের কোচ তিনি এমন কাজ করতে পারেন কিনা। “আমার প্রশ্ন হল, ফেডারেশন কি কোনও কোচ পায়নি, না নিজেদের পিঠ বঁাচাতে কোনও একজনকে কোচ করে দিল? ফেডারেশন কোন নিয়ম-কানুনের ধার ধারছে না। তাই এসবের ফায়দা লুটছে। নাহলে মানোলো এমন কাজ করা সত্ত্বেও তঁাকে ছেড়ে দেওয়া হবে কেন।” ক্ষুব্ধ সৃঞ্জয় তুলে দিলেন প্রশ্ন।