ফুটবলে কতই না অঘটন ঘটে। বুধবার যেমনটি ঘটল। সকলে ধরে নিয়েছিল অকল্যান্ড সিটিকে গোলের মালা পরাবে আর্জেন্টিনার ক্লাব বোকা জুনিয়র্স। অথচ ১৬ গোল খাওয়া অকল্যান্ড সিটি কিনা মারাদোনার স্মৃতি বিজড়িত ক্লাবের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বসল। অপেশাদার ক্লাবের কাছে এভাবে আটকে যাওয়া নিয়ে প্রবল সমালোচনার সামনে পড়েছে বোকা জুনিয়র্স।
অকল্যান্ড সিটিকে হারাবে বোকা জুনিয়র্স, সকলে ধরেই নিয়েছিলেন। হবে না কেন? বায়ার্ন মিউনিখের কাছে খেয়েছিল ১০ গোল। তারপর ৬ গোল খেয়ে বসে বেনফিকার বিরুদ্ধে। তাই বোকা জুনিয়র্স জয় দেখা ছিল সমর্থকদের কাছে সময়ের অপেক্ষা। ঘটল সম্পূর্ন উল্টো। ১-১ গোলে ড্র করার ঘটনা কেউ মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না। এমনিতেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে নিউজিল্যান্ডের দল। শেষ ম্যাচে তাই নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনের একটা মরিয়া চেষ্টা দেখানোর উদ্দেশ্য ছিল অকল্যান্ড সিটির। সেই ক্ষমতা প্রদর্শন করায় কপাল পুড়েছে বোকা জুনিয়র্সের। আসলে আর্জেন্টাইন ক্লাবের লক্ষ্য ছিল, যদি তারা বড় ব্যবধানে অকল্যান্ড সিটিকে হারাতে পারে তাহলে গ্রুপ-সির ছবিটা পুরো বদলে যাবে। যেহেতু বোকা জুনিয়র্স গ্রুপের দুটো খেলায় একটায় হেরেছিল। বাকিটা করেছিল ড্র। বোকা জুনিয়র্সের সমর্থকরা ভেবে নিয়েছিলেন, অকল্যান্ডকে হারিয়ে তঁারা ঠিক ঘুরে দঁাড়াবেন। গ্রুপ সি থেকে তঁারা চলে যাবেন নক-আউটে। অথচ বোকা জুনিয়র্সের বিরুদ্ধে স্কুল শিক্ষক, কোমল পানীয় বিক্রেতা, রিয়েল এস্টেটের এজেন্ট-সহ নানান পেশায় যুক্ত দলটা কিনা ভেল্কি দেখিয়ে চলে গিয়েছে। এই গ্রুপের অন্য ম্যাচে বেনফিকা হারিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখকে। ড্র করে বসায়, গ্রুপ লিগ থেকে ছিটকে যেতে বাধ্য হল মারাদোনার স্মৃতি বিজড়িত ক্লাব। অন্যদিকে পরবর্তী রাউন্ডে চলে গেল বেনফিকা ও বায়ার্ন।
খেলার পর হতাশায় ভেঙে পড়েছেন বোকা জুনিয়র্সের ফুটবলাররা।
ন্যাশভিলের খেলায় সারাক্ষণ আধিপত্য বজায় রেখে খেলে গিয়েছে বোকা। বল দখলের শতাংশতে তারা ছিল ৭৪। অকল্যান্ড সিটির বিরুদ্ধে ৪১টা শট নিয়েছিল। যারমধ্যে লক্ষ্য ছিল ১০টা। তবু একটার বেশি গোল পায়নি। অন্যদিকে মাত্র ২৬ শতাংশ বল দখলে রেখে তিনটে শটের মধ্যে দুটো লক্ষ্যে রেখে একটা গোল পেয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের ক্লাব। ২৬ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল পায় বোকা জুনিয়র্স। যদিও গোলটা ছিল আত্মঘাতী। বিরতির পর ৫২ মিনিটের মাথায় কর্ণার থেকে গোল দিয়ে দলকে সমতায় ফিরিয়ে আনেন বোকা জুনিয়র্সের ডিফেন্ডার ক্রিশ্চিয়ান থমাস গ্রে। ইনি আসলে একজন স্কুল শিক্ষক। ১-১ গোল হওয়ার পর মন্দ আবহাওয়ার কারণে খেলা প্রায় মিনিট ৪০ বন্ধ ছিল। আবহাওয়া পরিবর্তন ঘটলে খেলা শুরু হয়। কিন্তু বোকা জুনিয়র্সের কপাল আর বদলায়নি। খেলার শেষে অকল্যান্ড সিটির গোলদাতা স্কুল শিক্ষক গ্রে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলেন, “অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী থাকলাম। গত দুটো ম্যাচে বিশ্রিভাবে হেরে সমর্থকদের কাছে কিছু বলার ছিল না। বোকা জুনিয়র্সের সঙ্গে ড্র করে আশাকরি সমর্থকরা খুশি হয়েছেন। তঁাদের যে আনন্দ দিতে পারলাম, এটাই আমাদের কাছে বড় পাওনা। একটা কঠিন ও দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে পেরেছি।”