বিশাল অর্থ খরচ করে এমবাপে, নেমারদের সই করিয়ে ছিল পিএসজি। লক্ষ্য ছিল একটাই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ করার আগেই কিলিয়ান এমবাপে কিনা ক্লাব ছেড়ে যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। অথচ রিয়ালে যোগ দেওয়ার পরেই পিএসজি কিনা তুলে নিল অধরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তাও আবার ফাইনালে এমন একটা ফলাফল করে জিতল যা এই প্রতিযোগিতায় আগে কখনও হয়নি। তবে এমবাপে জানিয়ে দিলেন, তঁার মনে কোনও খেদ নেই।
স্পেনের বিপক্ষে হেরে নেশনস লিগের ফাইনালে উঠতে পারেনি ফ্রান্স। তাই স্থান নির্ধারণকারী খেলায় এবার ফ্রান্সকে খেলতে হবে জার্মানির সঙ্গে। সেই ম্যাচের জন্য সাংবাদিক বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন ফরাসি তারকা। সেখানেই তঁাকে পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। সেই প্রশ্নের জবাবে এমবাপে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পুরোন ক্লাবের লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় তিনি খুশি। “প্রথমেই বলে রাখি, আমি কিন্তু চুক্তি ভঙ্গ করে পিএসজি ছেড়ে রিয়ালে যোগ দিইনি। আমার চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং যেখানে খুশি সেখানে যেতেই পারি। সেই সূত্রে বলতে পারি, পিএসজির এই জয়কে নিশ্চয় অভিনন্দন জানাব। পুরোন ক্লাব ভাল কিছু করলে কার না ভাললাগে। সুতরাং আমার মনে কোনও আক্ষেপ থাকবে কেন।”
নেমারদের সঙ্গে নিয়ে এমবাপে পারেননি ফ্রান্সের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ট্রফি নিয়ে যেতে।
পরে তিনি পিএসজির জয়কে নিয়তির উপর ছেড়ে দেন। কথা প্রসঙ্গে জানিয়ে দেন, তঁাকে ছাড়া পিএসজি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পাবে এটাই মোটামুটি নিয়তি যেন নির্ধারিত করে রেখেছিলেন। ৩১ মে মিউনিখে ইন্টার মিলানকে ফাইনালে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় এমবাপের পুরোন ক্লাব পিএসজি। প্্যারিসের ক্লাবটি প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঘরে তুললো। অথচ তিনি থাকাকালীন পিএসজি এই ট্রফি ঘরে তুলতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। “দেখুন চেষ্টার তো ত্রুটি রাখিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য সব রকমের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু নিয়তি বোধহয় চাননি, এই ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পাই। হয়তো লেখা ছিল আমাকে ছাড়াই তারা ট্রফি ঘরে তুলবে। সেই কারণে হয়তো তারা জিতেছে।” বলেন এমবাপে। তারজন্য এমবাপের মনে কোনও আক্ষেপ নেই। বরং পিএসজি জয় তঁার কাছে ভালোই লেগেছে। এমবাপে তাই বলছিলেন, “পিএসজি জিতেছে ভাল কথা। তারজন্য আমার মন খারাপের প্রশ্নই ওঠে না। আমি খুশিই হয়েছি। অনেক বছর ধরে ক্লাবটা একটা স্বপ্ন পূরণের জন্য লড়াই চালাচ্ছিল। সেই লড়াইয়ের আমিও ছিলাম একজন সৈনিক। পিএসজির হয়ে সব ম্যাচ তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলেছি। শুধু খেলতে পারিনি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ম্যাচ। এখন ওরাই কিন্তু ইউরোপের সেরা দল। আর একটা কথা সকলকে মনে রাখতে হবে, ফাইনালে ৫-০ গোলে জয়ে একটা ইতিহাস গড়েছে। সুতরাং সেই দলকে সকলের উচিত সম্মান জানানো।”
এখন এমবাপের মনে শুধু একটাই ব্যাপার বারবার উঁকি মারতে শুরু করেছে। তিনি কবে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শূন্যে তুলে ধরতে পারবেন। রিয়ালে এসে মোটেই এবার সুবিধে করতে পারেননি। দিতে পারেননি ক্লাবকে বড় কোনও ট্রফি। চার বছর পর শেষ করেছে ট্রফিহীন একটা মরশুম। তাই ফরাসি তারকার মনে এখন একটাই প্রশ্ন, পরবর্তী মরশুমে কি পারবেন রিয়ালকে স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনতে?