এগিয়ে থেকেও শেষ হাসি হাসতে পারল না ইন্টার মায়ামি। লিওনেল মেসির দল ৭৯ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে ছিল ২-০ গোলে। তারপরেই চাকা ঘুরিয়ে দিল ব্রাজিলের ক্লাব পালমেইরাস। ২-২ গোলে ড্র করে ব্রাজিলিয়ানরা বুঝিয়ে দিল, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা লড়াই করতে জানে। জানে কীভাবে হতোদ্যম হয়ে না পড়ে ঘুরে দঁাড়ানোর জন্য অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয়। ড্রয়ের সুবাদে পালমেইরাস গ্রুপ শীর্ষে থেকে শেষ ১৬-তে ঢুকে পড়ল। অন্যদিকে মেসিদের দল গেল রানার্স হয়ে।
৩৮তম জন্মদিন ছিল মেসির। তাই মেসির সঙ্গে মায়ামির সমর্থকরাও চেয়ে ছিলেন তঁাদের নায়ককে ঘিরে বিজয় উত্্সবের মুডে মাতবেন। তার প্রতিফলনও ঘটে যায় খেলার মাঠে। ১৬ মিনিটে তায়েদো আলেন্দে ও ৬৫ মিনিটে লুইস সোয়ারেজ গোল করে মায়ামিকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন। তখন সকলে ধরে নিয়েছিলেন তঁাদের জয় নিশ্চিত। কিন্তু ৮০ ও ৮৭ মিনিটে পরপর দুটো গোল করেন যথাক্রমে পাউলোনিও এবং মাউরিসিও। স্বপ্নভঙ্গ ঘটে মায়ামির।
মঙ্গলবার হার্ড রক স্টেডিয়ামে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে শুরু করে দুটি দল। বল পজিশনে এগিয়ে ছিল মায়ামি। তবে আক্রমণ ও সুযোগ তৈরিতে প্রাধান্য দেখিয়েছে ব্রাজিলের ক্লাব। বিশেষ করে প্রথমার্ধে মায়ামি কিছুটা আধিপত্য বিস্তার করে খেললেও বিরতির পর পালমেইরাস দুরন্ত ফুটবল উপহার দেয়। মুর্হুমুর্হু আক্রমণে জর্জরিত করে দেয় মায়ামির রক্ষণকে। দু-গোলে পিছিয়ে থাকার দরুন পালমেইরাস তখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। তাই হারাবার কিছু নেই ভেবে মায়ামির রক্ষণে ঝঁাপিয়ে পড়ে। মেসির দল পিছু হঠতে বাধ্য হয়। যদিও মেসিকে এই ম্যাচে সেভাবে পাওয়া যায়নি। ৯০ মিনিট মাঠে থাকলেও কিছুটা ম্লান মনে হয়েছে।
গোল করে বিজয় উত্্সবে মাতলেন পালমেইরাসের মউরিসিও।
ড্র করে গ্রুপ এ থেকে শীর্ষ দল হিসেবে পরবর্তী রাউন্ডে চলে গেল পালমেইরাস। মায়ামি গেল রানার্স হয়ে। দুটো দলের পয়েন্ট ৫। কিন্তু গোল পার্থক্যে এগিয়ে ছিল পালমেইরাস। খেলার শেষে মায়ামি কোচ মাসচেরানো জানিয়ে দিয়েছেন, আমেরিকার কাছে দিনটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। “আমেরিকানদের কাছে দিনটা অবশ্যই একটা বিশেষ দিন হয়ে থাকা উচিত। ক্লাব বিশ্বকাপে মায়ামি যে জায়গায় গিয়েছে সেখানে পৌছনো খুব একটা সহজ নয়। জিতলে নিঃসন্দেহে ভাললাগতো। তবু বলব, দলের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। দক্ষিণ আমেরিকার সেরা দলের বিরুদ্ধে খেললাম। সেই দলের কাছে এগিয়ে থেকে ড্র করাকে খারাপ বলব কেন।” খেলার শেষে বলেন মাসচেরানো। এই গ্রুপের অন্য ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস লড়াই হয়েছে পোর্তো-আল আহলির মধ্যে। খেলা শেষ হয় ৪-৪ গোলে। যদিও দুটো দল গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে। শেষ ষোলোয় মেসির ক্লাব মায়ামি মুখোমুখি হবে পিএসজির। পুরোন দল মেসির। একই দেশের দল ব্রাজিলের বোতাফোগো-পালমেইরাস প্রি-কোয়ার্টারে মুখোমুখি হবে।
প্রথম ম্যাচে পিএসজি হেরে গিয়েছিল বোতাফোগোর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার কোনও ভুল করেনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী দল। ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে সিয়াটল সাউন্ডনেসকে। গোল দুটি করেন খিচা কাভারাস্কেইয়া ও আশরাফ হাকিমি। তাই গ্রুপে শীর্ষস্থান ধরে রেখে প্রি-কোয়ার্টারে পৌছে য়ায় পিএসজি। ছিটকে গেল স্পেেনের বিখ্যাত দল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। বোতাফোগোর বিরুদ্ধে জিতে যায় মাদ্রিদ। কিন্তু তিনটে দল পিএসজি, বোতাফোগো ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট দঁাড়ায় সমান (৬)। গোল ব্যবধানে ছিটকে যেতে বাধ্য হল দিয়েগো সিমিওনের দল মাদ্রিদ।