একদিকে তরুণ-তুর্কিদের মান উন্নত করা। অন্যদিকে ঘরোয়া লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সামনের দুটো লক্ষ্যকে নিয়ে সোমবার পুলিশের বিরুদ্ধে লিগ অভিযানে নামছে মোহনবাগান। দু-সপ্তাহের মাত্র প্রস্তুতি। তাসত্ত্বেও তিন পয়েন্ট ছাড়া অন্যকিছু ভাবতে রাজি নন ডেগি কর্দোজো।
ঘরোয়া লিগে গতবার সুপার সিক্সে যেতে পারেনি দল। সমালোচনার অন্ত ছিল না। মোহনবাগানের মতো দল যদি প্রথম ছয়ের মধ্যে না আসতে পারে সমর্থকরা অখুশি হতে বাধ্য। সিনিয়র দলে খেলা কয়েকজনকে তাই ঘরোয়া লিগে খেলাতে চাইছে মোহনবাগান। যারমধ্যে দীপেন্দু বিশ্বাস, সুহেল ভাটরা আছেন। তবে সব ম্যাচে এঁদের খেলানো হবে না। যেহেতু বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে সিনিয়রদের। “সুহেল ভাট বা দীপেন্দু বিশ্বাস, এরা হল প্রথম একাদশের ফুটবলার। বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে এদের। সুহেল তো জাতীয় দলের ক্যাম্পে ছিল। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর প্রয়োজন আছে সুহেলের। তাই এদেরকে সময় দেওয়া দরকার।” বললেন কার্দোজো।
এবার দলে ছয়জন ভূমিপুত্র খেলানো বাধ্যতামূলক। সেই কারণে দলগুলোকে বাংলার ছেলেদের দিকে তাকাতে হচ্ছে। কিছুদিন আগে ট্রায়াল ডাকা হয়েছিল। সেখান থেকে কয়েকজনকে নেওয়া হয়েছে। কার্দোজো বলছিলেন, “করণ সই করেছে। ইউসেককে নিয়েছি। আগে ওরা কলকাতা লিগ খেলেছে। আদিত্য মন্ডলকে নিয়েছি। অনূর্ধ্ব-১৭ দল থেকেও কিছু ছেলে নেওয়া হয়েছে। আমাকে ম্যানেজমেন্ট বলেছে, ছেলেদের সিনিয়র টিমে নিয়ে আসার দিকে লক্ষ্য রেখে এগোতে। আমিও সেইদিকে নজর দিতে চাইছি।” ঘরোয়া লিগ মোহনবাগান ২০১৮ সালের পর জেতেনি। সভ্য-সমর্থকরা হতাশ হতে পারেন। কিন্তু কার্দোজো বলছেন, ম্যানেজমেন্ট রেজাল্টের দিকে নজর দিতে বারণ করেছে। “মানছি, গতবার আমরা প্রথম ছটা দলের মধ্যে ঢুকতে পারিনি। তারপরেও এই দল বেশ কিছু টুর্নামেন্টে সফল হয়েছে। আরএফএল এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন হল। নানান রাজ্য থেকে এসে অনেকে দলে যোগ দেয়। তাদের সময় দিতে হবে। নাহলে ভাল কিছু করা যাবে না।” জানিয়ে দিলেন মোহনবাগান কোচ।
ফ্যানস ক্লাব মেরিনার্স অনসাইডের পক্ষ থেকে লিগ শুরুর আগে কোচ, ফুটবলারদের হাতে তুলে দেওয়া হল গোলাপ ফুল, উত্তরীয় ও স্মারক।
প্রতিপক্ষ পুলিশ সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানিয়ে দিলেন সবুজ-মেরুন তরুণ ব্রিগেডের কান্ডারি, পুলিশের খেলা দেখেছেন। অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ফুটবলারের সংখ্যা বেশি। “পুলিশের খেলা আমি দেখেছি। অভিজ্ঞ ফুটবলারদের নিয়ে দল গড়েছে। আমাদের সেখানে সকলে জুনিয়র ছেলে। অনভিজ্ঞ। অভিজ্ঞতার বিরুদ্ধে অনভিজ্ঞ ছেলেরা নামবে নিজেদের প্রমাণ করতে। তারজন্য কিছু পরিকল্পনা আমার করা আছে। সালাউদ্দিন, লিমনরা আছে। তারা জুনিয়রদের উত্্সাহিত করছে। সকলে নিজেদের উজাড় করে দিতে কুন্ঠাবোধ করবে না। আমি ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনা করছি। জেতা ছাড়া অন্যকিছু ভাবছি না।”জানিয়ে দিলেন কার্দোজো। মোহনবাগানের ফ্যানস ক্লাব মেরিনার্স অনসাইডের পক্ষ থেকে লিগ শুরুর আগের দিন ফুটবলারদের হাতে তুলে দেওয়া হয় গোলাপ ফুল, উত্তরীয় ও একটা করে সুদৃশ্য ঘড়ি।
দলের অধিনায়ক সন্দীপ মালিক। তিনিও বলে দিলেন, সুপার সিক্সে ওঠা প্রথম লক্ষ্য। তারপর তঁারা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিকে এগোবেন। “মোহনবাগান মতো দলের অধিনায়ক হওয়া নিঃসন্দেহে গর্বের। শুভাশিস দাকে (বসু) দেখেছি। সিনিয়ররা আমাদের সবসময় অনুপ্রাণিত করে। মাত্র দু-সপ্তাহের প্র্যাকটিশ করে আমরা খেলতে নামছি। দল হিসেবে আমরা প্রস্তুত। এখন দেখার বিষয় কীভাবে নিজেদের ম্যাচে তুলে ধরতে পারি।” জানিয়ে দিলেন সন্দীপ।