গতবারের ব্যর্থতাকে ঢাকতে অনেক আগে থেকে দলগঠনের কাজে নেমে পড়েছে ইস্টবেঙ্গল। এবার তারা নিশ্চিত করতে চলেছে দুই বিদেশিকে। বিশেষ করে মরক্কোর স্ট্রাইকার হামিদ আহাদাদকে নেওয়ার জন্য সর্বোতভাবে ঝঁাপিয়েছে। আপাতত যা খবর তাতে হামিদকে নেওয়ার ব্যাপারে নাকি অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে লাল-হলুদ শিবির। যদি না শেষ মুহূর্তে কোনও অঘটন ঘটে। এদিকে হিজাজি মাহের ও মাদিহ তালালকে ছেড়ে দিচ্ছে ইস্টবেঙ্গল।
ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে এখন মরক্কোর যোগাযোগ খুব প্রগাঢ় হয়ে গিয়েছে। আইএসএলে চোখ রাখলে দেখা যাবে একগাদা মরক্কোর ফুটবলার খেলে চলেছেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নোয়া সাদুই, আহমেদ জাহু, আলাদিন আজারাইরা। যঁারা ভারতীয় ফুটবলের প্রধান প্রতিযোগিতায় যথেষ্ট নাম কুড়িয়ে ফেলেছেন। ইস্টবেঙ্গলে হামিদ আহাদাদ আসার খবরে তাই সভ্য-সমর্থকরা অবশ্যই খুশি হতে পারেন। সমস্যাটা হল অন্য জায়গায়। হামিদ মরক্কো ছাড়া বিদেশের কোনও ক্লাবের হয়ে খেলেননি। সমস্যাটা শুধু এখানেই থেমে নেই, যে ক্লাবে খেলতেন তার নাম হল ওয়াইদাদ এসি। এখানেই তিনি ২০২২-২৫ সাল অব্দি রয়েছেন। অথচ দেখা যাচ্ছে সেখানে তেমন গোল যেমন করেননি। অন্যদিকে ম্যাচও বেশি খেলেননি। হতে পারে চোটের কবলে পড়ে হয়তো তেমন খেলার সুযোগ পাননি। তবে তার আগে যে ক্লাবের হয়ে নাম লিখিয়ে ছিলেন তার নাম ছিল রাজা সিএ। ২৮টা ম্যাচ খেলে সেবার ১২টা গোল করে ছিলেন। খেলার সুযোগ পেলে যে তিনি গোল করতে পারেন তার প্রমাণ রয়েছে। সেইভাবে দেখলে হয়তো দলের হয়ে নিজেকে উজাড় করে দিতে সক্ষম হবেন।
হামিদ আহাদাদের আসার খবরে উল্লসিত সমর্থকরা।
প্রশ্ন হল, তাহলে ইস্টবেঙ্গল হামিদ আহাদাদকে নিতে ঝঁুকলো কেন? ফিট থাকলে তিনি যে ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন তার প্রমাণ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি লম্বা। একজন স্ট্রাইকারের পক্ষে যা সঠিক চেহারা। মরক্কোর ফুটবলের মান আর ভারতীয় আইএসএলের মান নিশ্চয় এক হতে পারে না। তার প্রমাণ নোয়া, আহমেদরা। জলজ্যান্ত প্রমাণ হিসেবে এঁরা ভারতীয় ফুটবলে ইতিমধ্যে নজর কেড়ে নিয়েছেন। তাই হামিদ আহাদাদ সফল হবেন না তা একদমই বলা চলে না। তারচেয়ে বড় কথা, যাদের টার্গেট করেছিল তঁাদের পাওয়া অসম্ভব। বিশেষ করে ইউসুফ আসছেন না। তবে হামিদ আহাদাদের অফ দ্য বল স্পিড দারুন। এই গতিকে কাজে লাগানো লক্ষ্য কোচ অস্কার ব্রুজোর। নাহলে গতবার ইস্টবেঙ্গলের হয়ে নজরকাড়া পারফর্ম করেছিলেন মেসি। সেই মেসিকে ছেড়ে দিচ্ছেন ব্রুজো। কারণ একটাই, তঁার সিস্টেমের সঙ্গে নাকি খাপ খাওয়াতে পারবেন না মেসি। অতএব গতিময় হামিদকে স্ট্রাইকার পজিসনে খেলিয়ে ব্রুজো চেষ্টা করবেন বিপক্ষের রক্ষণে ফঁাক-ফোকর তৈরি করতে। তারপর ঠিক গোল চলে আসবে। দিমিত্রিয়সকে গতবার কত সাধ করে নিয়ে এসে ব্যর্থ হয়েছে ইস্টবেঙ্গল। এবার দেখার হামিদ সেই আশা পূরণ করতে পারেন কিনা। শোনা যাচ্ছে ডিফেন্সে ২৬ বছরের আর্জেন্টাইন কেভিন সেবিল্লেকে আনতে চলেছে লাল-হলুদ শিবির। স্পেনের থার্ড টায়ারে খেলেন। দীর্ঘকায় ডিফেন্ডার। গতবার তিনি দলের হয়ে গোল করেছেন। লম্বা চেহারার ডিফেন্ডার কেভিন ডিফেন্সে খেললে যেমন প্রতিপক্ষের আক্রমণ সামলাতে পারবেন। ডেডবল থেকে গোল করার জন্য উঠে ঝঁাপাতেও সচেষ্ট হবেন। তাই ব্রুজো নাকি চাইছেন এমন একজন ডিফেন্ডারকে আনতে। আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডারের সেই সূত্রে আসার সম্ভাবনা খুব বেশি।