সানরাইজার্য় হায়দরাবাদ: ৮ উইকেটে ১৪৪ (২০ ওভার)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ৩ উইকেটে ১৪৬ ( ১৫.৪ ওভার)
এক অনুষ্ঠানে সান গ্রুপের চেয়ারম্যান কলানিধি মারানকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিলেন দক্ষিণী সিনেমার নায়ক রজনীকান্ত। মজা করে বলেছিলেন, আইপিএলে কাব্যর দলকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তোল। দলের ব্যর্থতায় কাব্যর চোখে জল দেখতে আমার ভাল লাগে না।
গত মরশুমে আইপিএল ফাইনাল খেলেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ফাইনালে হেরে যায় কেকেআরের কাছে। সেদিনও গ্যালারিতে বসে কেঁদেছিলেন কাব্য মারান। টিভিতে সেই ছবি দেখে কষ্ট পেয়েছিলেন রজনীকান্ত।
তো এই মরশুমে রজনীকান্তের মনের অবস্থা কেমন তা জানার ইচ্ছে আছে। কারন গতবারের দুই ফাইনালিস্টের অবস্থা একইরকম। হায়দরাবাদ চার পয়েন্ট পেয়ে ধুঁকছে। কেকেআর এক কদম এগিয়ে। তাদের সংগ্রহ ছয় পয়েন্ট। এই জায়গা থেকে প্লে অফ খেলার স্বপ্ন কেউ কি দেখতে পারে।
না, সেটা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। উল্টোদিকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স লাফিয়ে লাফিয়ে চলেছে। টানা চার ম্যাচ জিতে তার লিগ টেবিলে তিন নম্বরে উঠে এসেছে। সাপ লুডো খেলায় সিঁড়িতে পড়ে যেমন লম্বা লাফ দেওয়া যায়, অনেকটা সেভাবে মুম্বই উপরে চলে এসেছে। ভাবা যায়! একসময় যারা একেবারে তলানিতে ছিল, তারা এখন প্রথম দুই দলের পরে। লিগের পাঁচ ম্যাচ খেলত হবে মুম্বইকে সেই পাঁচের মধ্যে তিনটি জিতলে প্লে অফ মোটামু়টি নিশ্চিত। আর যেভাবে খেলছে, তারপর শেষ চারের লড়াইয়ে না গেলে অবাক হতে হবে। হায়দরাবাদকে তারা হারাল ইনিংসের ২৬ বল বাকি থাকতে তিন উইকেট হারিয়ে। সাত উইকেটে ম্যাচ জিতে ২৭ এপ্রিল মাঠে নামার আগে তারা আলাদা টনিক যে পেয়ে গেল।
আগের ম্যাচে ওয়াংখেড়েতে সিএসকের বিরুদ্ধে তারা ৯ উইকেটে জিতেছে। সেই জয় দলের আত্মবিশ্বাস অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। না হলে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে এ কোন মুম্বইকে দেখা গেল। কামিনসদের একটা দোষ আছে। তারা নিজেদের ছক থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে চান না। মাঠে নেমে মারকাটারি ক্রিকেট খেল। প্রতিপক্ষ বোলিংকে ধংস্ব করে দাও। আর এটা করতে গিয়ে নিজেরা ডুবছে। বুধবার হায়দরাবাদের মাঠে চাহার ও বোল্টের পরিকল্পনার কাছে তারা হেরে যায়। মাত্র ১৩ রানে চার উইকেট চলে যায়। সেই জায়গা থেকে ক্লাসেন হাল ধরেন। ৩৫ রানে পাঁচ উইকেট যাওয়ার পর ক্লাসেনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অভিনব মনোহর। তাঁদের জুটিতে ৯৯ রান যোগ হয়। ক্লাসেন ৪৪ বল খেলে করেন ৭১ রান। আর অভিনবের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ রান। আর এই রান কামিনসদের লড়াই করার রসদ জুগিয়ে দেয়। বোল্ট চার উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হলেও রোহিতের হাতে পুরস্কার তুলে দিলে খারাপ হত না।
প্রশ্ন উঠতে পারে কেন রোহিতের কথা বলা হচ্ছে। ধোনিদের বিরুদ্ধে ৭৬ রান করে রোহিত ফর্ম খুঁজে পেয়েছিলেন। বুধবার যেন সেই জায়গা থেকে শুরু করলেন। কখনও পুল মারলেন। কখনও আবার দুর্দান্ত ড্রাইভ। তাঁর ব্যাটিং দাপটের কাছে হায়দরাবাদ ক্রমশ ম্যাচ থেকে হারিয়ে যেতে লাগল। দুরন্ত রোহিতে মুম্বইয়ের টানা চার ম্যাচ জয় সহজ হয়ে গেল সূর্যকুমারের ১৯ বলের ইনিংসেও। সূর্য করলেন অপরাজিত ৪০। একেবারে শেষদিকে রোহিত আউট হলেন ৪৬ বলে ৭০ রানের (৮টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারি) ইনিংস খেলার পর। ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটার হিসেবে মাঠে এসে টানা দুটি ম্যাচে বড় রান পেয়ে গেলেন রোহিত। আর তিনি মাঠে থাকা মানে প্রতিপক্ষের কোনও রানই বাধা হতে পারে না রোহিতের ব্যাটের কাছে। তাই মু্ম্বই এখন প্লে অফের স্বপ্ন দেখতেই পারে। কারন তারা তো সেদিকেই ছুটছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
হায়দরাবাদ: ৮ উইকেটে ১৪৩ ( ক্লাসেন ৭১, অভিনব মনোহর ৪৩, বোল্ট ২৬ রানে ৪, চাহার ১২ রানে ২)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ৩ উইকেটে ১৪৬ ( রোহিত ৭০, সূর্যকুমার ৪০ অপরাজিত)
ম্যাচের সেরা: ট্রেন্ট বোল্ট।