অনেকে ভেবেছিলেন, ম্যাচের নায়ক হবেন লিওনেল মেসি। কিন্তু তিনি নন, ম্যাচের সেরা হলেন অন্য একজন আর্জেন্টাইন। তিনি আবার মেসির বন্ধু। ইন্টার মায়ামির গোলকিপার অস্কার উসতারি। তিনি না থাকলে ক্লাব বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে হেরে বসত ইন্টার মায়ামি। বিরতির আগে শুধু একটা পেনাল্টি বঁাচানো নয়, বেশ কয়েকটি নিশ্চিত পতন রুখে দেন তিনি। সব মিলিয়ে মেসির সামনে ইন্টার মায়ামির গোলকিপার উসতারি নিয়ে গেলেন ম্যাচের সেরার পুরস্কার। ক্লাব বিশ্বকাপের প্রথম খেলায় গোলশূন্য ড্র হয়ে গেল মায়ামি বনাম মিশরের ক্লাব আল আহলির।
উদ্বোধনী ম্যাচ খেলে যতটা না হতাশ মেসি, তারচেয়ে বেশি নিশ্চয় কষ্ট পেয়েছেন জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো। ফিফা প্রেসিডেন্টের উদ্যোগে এই ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে। বিশ্ব জুড়ে মোট ৩২টা দল যোগ দিচ্ছে এই প্রতিযোগিতায়। ক্লাব বিশ্বকাপকে ঘিরে কম সমালোচনার সুর শোনা যায়নি। অনেকেই বলেছেন, এই প্রতিযোগিতা করার কোনও মানে হয়না। ফুটবলারদের পিষে মারা হচ্ছে। ক্রমাগত খেলতে খেলতে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়বে। তার উপর যদি উদ্বোধনী ম্যাচ গোলশূন্য থাকে তখন তো ফিফা প্রেসিডেন্টের খারাপ লাগবেই।
মেসি পুরোপুরি ব্যর্থ বলা যাবে না। বেশ কয়েকবার তিনি গোল করার জায়গায় চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু আল আহলির গোলকিপার মোহাম্মদ এল সেনাউয়িকেও ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। ৫টা শট তিনি বঁাচিয়ে দেন। খেলা শেষের দিকে একবার তো মেসির শট ৩৬ বছরের গোলকিপারের হাতে লেগে ক্রসবারে প্রতিহত হয়। তাছাড়া মায়ামির লুইস সুয়ারেজ অতিরিক্ত সময়ের ৬ মিনিটের মাথায় যে শট নিয়েছিলেন তাও রুখে দেন তিনি। সব মিলিয়ে উসতারির মতো তঁাকেও সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। তবে সুযোগ পাওয়ার তুল্যমূল্য বিচার যদি করতে হয় তাহলে আল আহলি অনেক বেশি গোল করার জায়গায় চলে গিয়েছিল।
মেসির নেওয়া শেষ মুহূর্তের শট কোনওমতে বঁাচাচ্ছেন মিশরের গোলকিপার। এই বল ক্রসবারে লেগে নিশ্চিত গোল বেঁচে যায়।
“দলের হয়ে পেনাল্টি বঁাচাতে পেরেছি, এটাই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি। পরবর্তীকালে এই বঁাচানো হয়তো দলের ভাল দিক তুলে ধরতে সক্ষম হবে।” পেনাল্টি বঁাচানো সম্পর্কে বলতে গিয়ে একথা বলেন উসতারি। আর্জেন্টাইন গোলকিপার মানছেন, প্রতিপক্ষ তঁাদের সহজে যে ছেড়ে দেবে না তা তঁাদের জানাই ছিল। খেলার শেষে তাই উসতারি বলেন,“আমাদের জানাই ছিল, প্রতিপক্ষ আমাদের কতটা বেগ দিতে পারে। সবকিছু মিলিয়ে একটা কথা বলতে পারি, আমরা ভালোই খেলেছি।” মায়ামির অন্যতম তারকা উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ বলেন, মেসির পাশে খেললে নিজেকে মেলে ধরতে অনেক সুবিধে হয়। সুয়ারেজ বলছিলেন, “প্রত্যেকেই জানে মেসির পাশে খেললে কতটা খোলা মনে খেলা যায়। তার সাথে খেললে সবসময় কিছু একটা করার তাগিদ চলে আসে। তাই মেসির পাশে খেলার মজাটাই আলাদা।” পরমুহূর্তে সুয়ারেজকে বলতে শোনা য়ায়, “জিততে পারিনি ঠিকই, তবে সকলের মধ্যে চেষ্টার কোনও ত্রুটি ছিল না। আসলে এমন এক একটা দিন আসে যেখানে সবকিছু করেও কোনও ফল পাওয়া যায় না। তাই দলের সঙ্গে আমিও বলতে দ্বিধা করব না, আমাদের খেলায় আমরা খুশি।” মায়ামির অন্যতম তারকা বেঞ্জামিন ক্রেমাশি আল আহলির গোলকিপারের প্রশংসা করে বলেন, “শেষ মুহূর্তে আমরা গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু তাদের গোলকিপার তিনটে অবিশ্বাস্য সুযোগ প্রতিরোধ করে দেয়। যা গোল হওয়া ছিল খুবই স্বাভাবিক। এখন আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা শুধু ভাবতে হবে।”