২০২৪-এর শেষদিক অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পারথ টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন কে এল রাহুল। যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে জুটিতে বড় রান করে দলকে জেতাবার পর তাঁদের ওপেনিং জুটি ভাঙ্গতে চায় নি টিম ম্যানেজমেন্ট। রোহিত শর্মা পরের টেস্টে দলে এলেও খেলেন মিডলঅর্ডারে। পরে অবশ্য রোহিত ওপেনে আসায় রাহুল চলে যান মিডলঅর্ডারে। এবার ইংল্যান্ড সিরিজের আগে টেস্ট ক্রিকেট খেকে অবসর নিয়েছেন রোহিত। সঙ্গে বিরাট কোহলিও। তাই এবারের দলটি কিছুটা হলেও তারুন্যে ভরা। অভিজ্ঞতা কম। রাহুল, বুমরা ছাড়া অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ক্রিকেটার কোথায়! তাই বাড়তি চ্যালেজ্ঞ নিয়ে ভারতীয় দলকে মাঠে নামতে হবে। তবে কিছু করে দেখাবার তাগিদ থাকলে চাপের মুখেও ভাল পারফর্ম করা সম্ভব। আইসিসি রিভিউতে এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অ্ধিনায়ক রিকি পন্টিং বলেছেন, একটা দল ভেঙ্গে গেলে তাকে নতুন করে গড়ে তুলতে গেলে সময় লাগে। সেই সময়টা এই ভারতীয় দলকে দিতে হবে। আবার এটাও ঘটনা যে এই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে অন্য কোনও দেশের যতটা সময় লাগবে, তার থেকে অনেক সময়ে ভারতীয় দল নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারবে। কারন একটাই, ভারতীয় দলের রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি। কিছুটা সময় পেলে তারা নিজেদের তৈরি করে নিতে পারবে। যা অন্য দেশের পক্ষে সহজ হবে না। তাই রোহিত, বিরাট, অশ্বিন ও শামি দলে না থাকলেও শুরুতে সমস্যা হলে ভারতীয় দল তাড়াতাড়ি নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারবে।
২০ জুন লিডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে। প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের বোলিং শক্তি আক্রমনাত্মক হতে পারছে না। তাদের প্রথম সারির অনেক পেসার চোটের কারনে দলের বাইরে। তাই ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা শুরুতে নিজেদের ধরে নিতে পারলে বড় রানের ইনিংস খেলতে পারবে। পন্টিং বলছেন, ইংল্যান্ডের আবহাওয়ায় খেলতে গেলে ধৈয্যের পরীক্ষা দিতে হবে। উইকেটে একবার জাঁকিয়ে বসতে পারলে বড় রান করতে অসুবিধা হবে না। ভারতীয় দলের বোালিং নিয়ে খুব বেশি ভাবতে হবে না। বুমরা চলে আসায় পুরো শক্তি নিয়ে মাঠে নামতে পারবে। ইংল্যান্ডে পেসাররা সুবিধা পায়। আহবাওয়াকে কাজে লাগিয়ে সিম বা সুইং দুটোই ঠিকভাবে করতে পারবে। সিরিজের শুরুর দিকের উইকেটে বল বাড়তি বাউন্স পাবে। এটা ভারতকে কাজে লাগাতে হবে। এবং সেটা করতে পারলে সিরিজে ভারতীয় দল এগিয়ে যেতে পারবে।
বোলিং তো হল। ভারতীয় দলের ব্যাটিং লাইন আপ কেমন হতে পারে। ইংল্যান্ড পৌঁছে ভারতীয় এ দলের খেলতে নেমে কে এলে রাহুল ১১৬ রানের ইনিংস খেলেছেন। লায়ন্সদের বিরুদ্ধে ভারতীয় এ দল প্রথমে ব্যাট করতে নেমে করেছে ৩৪৮ রান। নায়ার রান পেয়েছেন। রান পেয়েছেন ধ্রুব জুরেলও। টেস্ট সিরিজ এত সহজ হবে না। পন্টিং বলছেন, রাহুল সেঞ্চুরি পেলেও টেস্টে ওকে ওপেনে রাখতে চাই না। যশস্বী বেশিদিন টেস্ট খেলছে না। তবু নিজেকে পরিণত মনে করতে পারে। ওর সঙ্গে ওপেনে চাই সাই সুদর্শনকে। আইপিএলে ওর অনেক ম্যাচ দেখেছি। টেকনিক খুব ভাল। টেস্ট খেলার আদর্শ টেকনিক বল যেতে পারে। তার উপর ইংল্যান্ডে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এবারও আইপিএলে অনেক রান করেছে। রানের খিদে আছে। ওপেনে একবার দাঁড়িয়ে গেলে ওকে নিয়ে চিন্তা থাকবে না। রাহুলকে আসুক তিন নম্বরে। ওপেনিং দুজন অনভিজ্ঞ ক্রিকেটারের পর একজন সিনিয়র ব্যাটসম্যান দরকার। এখানে অনেকে আবার করুন নায়ারকে চাইবে। নায়ার অনেকদিন খেলছে। টেস্টে বড় রানের ইনিংস খেলার অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু আট বছর পর ভারতীয় দলে ফিরেছে। ভারতীয় এ দলের হয়ে প্রথম ম্যাচে ডবল সেঞ্চুরি করার পর দ্বিতীয় ম্যাচেও রান পেয়েছে। তবু আমার মতে নায়ার আসুক পাঁচ নম্বরে। তার আগে চারে চাই শুভমান গিলকে। এবারই প্রথম টেস্ট ক্রিকেটে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবে গিল। চাপ তো থাকবে। শুরুটা ভাল হলে চারে এসে গিলের খেলা সহজ হবে। ওর ব্যাটে রান দরকার। রান পেলে নেতৃত্ব বোঝা হয়ে দাঁড়াবে না। তা হলে ভারতীয় দলের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান কেমন দাঁড়াল- যশস্বী জয়সওয়াল, সাই সুদর্শন, কে এল রাহুল, শুভমান গিল ও করুন নায়ার। এই পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে তিনজন রান করে দিলে ভারতের টেস্ট ম্যাচ নিয়ে চিন্তা কমবে।