কেরল ব্লাস্টার্সকে হারানোর পর এবার কি এফসি গোয়াকে হারাতে পারবে মোহনবাগান? শুধু সবুজ-মেরুন টিম ম্যানেজমেন্টের কতিপয় কর্তারা মনে করছে না গোয়াকে হারিয়ে বাস্তব রায়ের ছেলেরা অনায়াসে পৌছে যাবে সুপার কাপের ফাইনালে। তবু আশার আলো শুধু জ্বলছে তাই নয়, বরং সেই আগুনের শিখা যেন দাউদাউ করে জ্বালিয়ে দিয়েছে সবুজ-মেরুন আপামর জনতার হৃদয়ে। সকলে বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, এই দলই পারবে ফের গোয়াকে হারাতে। ধারে-ভারে নিঃসন্দেহে গোয়া অনেক এগিয়ে মোহনবাগানের তুলনায়। একমাত্র আর্মান্দো সাদিকু বাদে পুরো দলকে ধরে রেখেছে গোয়া। আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া তাদের অন্যতম লক্ষ্য।
গোয়াকে কী করে হারাবে মোহনবাগানের দ্বিতীয় সারির দল? কয়েকটা ফ্যাক্টর কাজ করছে মোহনবাগানের পক্ষে। এক, চাপমুক্ত হয়ে খেলা। কোচ বাস্তব রায় ও টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে ফুটবলারদের বারবার বলা হচ্ছে, তোমরা খোলা মনে খেল। হারানোর কিছু নেই। সুতরাং ঝঁাপালে ঝঁাপাও সর্বশক্তি দিয়ে। তাই ফুটবলাররা মোহনবাগানের মতো দলের জার্সি পেয়ে নিজেদের সঁপে দিতে কুন্ঠাবোধ করছে না।
দুই, নিজেদের প্রমাণ করা। সিনিয়র ফুটবলার বলতে খেলছেন সাহাল আব্দুল সামাদ, আশিক কুরিনিয়ন ও দীপক টাংরি, বিদেশি নুনো রেইস। চারজন সিনিয়র খেলছেন এমন সব জায়গায় যেখানে দলকে মাঠে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারছেন। নুনো-আশিক ডিফেন্সে। দীপক মাঝমাঠে আর সাহাল ফরোয়ার্ডে খেলে জুনিয়রদের বোঝাতে পারছেন কাকে কোথায় কখন যেতে হবে। বা কী করতে হবে। তাছাড়া জুনিয়ররা চাইছে নিজেদের মেলে ধরে মূল দলে আসার পথ পরিষ্কার করতে। আবার সিনিয়ররা চাইছেন পরবর্তী বছরে যেন তঁাদের দর মোটেই না কমে।
তিন, আইএসএল খেলা দলকে নিয়ে যারা এখানে এসেছে তারা মোটেই সুবিধে করতে পারবে না। তার কারণ একটাই, ফোকাস নড়ে যাওয়া। দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে চলা আইএসএল খেলে প্রত্যেকে ক্লান্ত। তাছাড়া ফোকাসটা ছিল আইএসএলে ভাল কিছু করার। যেই ফোকাসটা নড়ে যেতেই পরবর্তী টুর্নামেন্টে ভাল খেলার তাগিদ আর তেমন নেই। কিন্তু মোহনবাগান তো সম্পূর্ন নতুন দল। ফলে প্রত্যেকে লাফাচ্ছে-ঝঁাপাচ্ছে।
চার, গতম্যাচে গোয়া হারতে হারতে কোনওমতে জিতেছে। বিরতি পর্যন্ত খেলার ফল ছিল গোলশূন্য। পরে পাঞ্জাব এফসি গোল করে এগিয়ে যায়। গোয়া খেলা শেষের কয়েক মুহূর্ত আগে পরপর দুটো গোল করে জিতে শেষ চারে এসেছে। জেতার পেছনে গোয়াকে সুবিধে করে দিয়েছে পাঞ্জাবের পলকা ডিফেন্স। তাই মোহনবাগান চাইছে রক্ষণকে শক্ত ভিতের উপর দঁাড়় করিয়ে আক্রমণে ঝঁাপানো।
পঁাচ, কেরলের চেয়ে নিঃসন্দেহে গোয়া এগিয়ে। তাই মোহনবাগান ঠিক করে ফেলেছে, প্রথম ৪৫ মিনিট কোনওভাবে গোল খাবে না। যদি প্রথমার্ধ গোলশূন্য রাখতে পারে তাহলে বিরতির পর সর্বশক্তি দিয়ে জেতার জন্য ঝঁাপাবে। তখন গোয়া বাধ্য হবে নিজেদের রক্ষণ সামলাতে। সোজা কথা মোহনবাগান যত সময় গড়াবে ততই আক্রমণের দিকে ঝঁুকবে। এভাবেই জয়ের পথ খঁুজতে মরিয়া হয়ে রয়েছে মোহনবাগান। একই দল ধরে রাখতে চান বাস্তব। আর একই দল নিয়ে গোয়াকে বুঝিয়ে দিতে চান, মোহনবাগানের দ্বিতীয় সারির দলও ভয়ংকর।