রিঙ্কু সিং চললেন বিয়ের পিঁড়িতে বসতে। ঠিক হয়েছে ৮ জুন লখনউতে তিনি বাগদান পর্ব সারবেন। তবে বিয়ের অনুষ্ঠান হবে বারাণসীতে ১৮ নভেম্বর। পাত্রী অন্যকেউ নন, সমাজবাদী পার্টির সাংসদ প্রিয়া সরোজ।
রিঙ্কু সিংয়ের নাম বললেই কলকাতা নাইট রাইডার্সের কথা চলে আসতে বাধ্য। যিনি কলকাতার হয়ে খেলে বিশ্ব ক্রিকেটে নজর কেড়ে নিয়েছেন। একদিকে তঁার মারমুখী মেজাজের ব্যাটিং, অন্যদিকে অসাধারণ ফিল্ডিং, সব মিলিয়ে একজন কমপ্লিট ক্রিকেটার বলা চলে। সেই রিঙ্কু সিংয়ের বিয়ের খবর রটতেই ভারতীয় ক্রিকেট মহলে হইচই পড়ে গিয়েছে। সাধারণত ক্রিকেটাররা বলিউড বা অভিনয় জগতের নায়িকাদের পছন্দ করেন। বিশেষ করে প্রথিতযশা নারীরাই হন ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত থাকা ক্রিকেটারদের জীবন সঙ্গী। কিছুটা হলেও ব্যতিক্রমী হয়ে রইলেন রিঙ্কু। যিনি তঁার সারা জীবনের সঙ্গী বাছলেন একজন রাজনীতিবিদকে। শুধু তাই নয়, বর্তমান যিনি আবার সাংসদ। এই খবরের উপর শিলমোহর দিয়েছেন অন্য কেউ নন, স্বয়ং প্রিয়ার বাবা প্রাক্তন সাংসদ তুফানি সরোজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় তুফানি নিজে এই খবর তুলে ধরে জানিয়ে দিয়েছেন, রিঙ্কু সিং আগামী দিনে তঁার জামাই হতে চলেছে। এমন দিনে তিনি ঘোষণা করলেন যেদিন বাংলার হিন্দুদের ঘরে ঘরে পালিত হচ্ছে জামাইষষ্ঠী। যেদিন জামাইদের বরণ করে নেন শাশুড়িরা। রবিবার কি সেই দিনকে মনে রেখে রিঙ্কুর নাম ঘোষণা করলেন শ্বশুরমশায়?
২৬ বছরের প্রিয়া উত্তর প্রদেশের জৌনপুরের মাছলিশহর আসন থেকে জয়লাভ করে প্রথম সাংসদ হন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রিয়ার বাবা তুফানি বলেন, “রিঙ্কু ও প্রিয়া বেশ কিছুদিন হল একে অপরকে চেনে। প্রিয়ার বন্ধুর বাবার মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল রিঙ্কুর সঙ্গে। সেই বন্ধুর বাবা একজন ক্রিকেটার ছিলেন। উভয় পরিবারের আশীর্বাদ নিয়ে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছে।” তুফানি এও জানিয়েছেন, নভেম্বরের বিবাহ অনুষ্ঠানে ক্রিকেট থেকে রাজনীতি, বলিউড থেকে ব্যবসায়িক মহলের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের দেখা যাবে। তবে বাগদান অনুষ্ঠান হবে অনাড়ম্বর ভাবে। যেখানে দুটো পরিবারের আত্মীয়-পরিজন, ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবরা কেবলমাত্র উপস্থিত থাকবেন। কোনওভাবে বাগদান পর্বকে জমকালো করতে রাজি নয় উভয় পরিবার।
২৭ বছরের রিঙ্কু জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দুটো ওয়ান ডে ও ৩৩টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন। কোনও সন্দেহ নেই, আইপিএল থেকেই তঁার উত্থান। তারচেয়েও বড় কথা, কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলতে এসেই তিনি ক্রিকেট মহলে নজর কেড়ে নেন। কেকেআরের একজন যে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার তা না বললেও চলে। চলতি আইপিএলে সেভাবে তিনি প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। পুরো মরশুম জুড়ে তিনি মাত্র ২০৬ রান করেছেন। গড় ছিল ২৯.৪২। স্ট্রাইক রেট ১৫৩.৭৩। কিছু কিছু ম্যাচে নিজের পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন ঠিকই। তবু কেকেআরকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলতে পারেননি। তাই প্লে-অফ খেলা থেকে বঞ্চিত হয় গতবারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স। ১৪টা ম্যাচের মধ্যে জিতেছে মাত্র পঁাচটা ম্যাচে। পয়েন্ট অর্জন করে মাত্র ১২। নেট রান রেট ছিল -০.৩০৫। তাই কেকেআর এবার লিগ টেবিলে স্থান পায় অষ্টমে। আসলে কেকেআর এবার ধারাবাহিকতা মোটেই বজায় রাখতে পারেনি। বরং এক একটা ম্যাচে ঝলক দেখিয়ে পরের ম্যাচে আবার চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু রিঙ্কুর বিয়ের পিঁড়িতে বসার খবর আপাতত কেকেআর প্রেমীদের কিছুটা হলেও হতাশার মাঝে আনন্দের সুবাতাস বইয়ে দেবে।
(ছবি-রিঙ্কু সিং ও ভাবী পত্নী সাংদস প্রিয়া সরোজ)