এটাই সত্যি। তাই কে এল রাহুলের উপর বাড়তি নজর দিতে চেয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ভারতীয় দলের সহকারি কোচ হিসেবে অভিষেক নায়ার যোগ দেওয়ার পর রোহিত বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁকে কি করতে হবে। কার কার দিকে নজর দিতে হবে। কার পিছনে বাড়তি সময় দিতে হবে। সেভাবেই অভিষেক নিজের রুটিন তৈরি করে ফেলেন। এক সাক্ষাৎকারে কথা বলতে গিয়ে অভিষেক পুরনো ঘটনাকে সামনে টেনে আনলেন। বললেন, ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজে আমি দলে যোগ দেওয়ার পর একদিন রোহিত আমাকে ডেকে বলে কি কি কাজ করতে হবে। বিশেষ করে রাহুলের দিকে আমাকে নজর দিতে হবে। ওর সঙ্গে কথা বলতে হবে। ওর ভাবনা জানতে হবে। সে সব বুঝে রুটিন ঠিক করে এগোতে হবে।
আসলে সেই সময় রোহিত মানসিক দিক থেকে কিছুটা ভেঙ্গে পড়েছিলেন। টি২০ বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়নি। এটা রাহুলকে ধাক্কা দিয়েচিল। ভেবেছিলেন, তিনি দলে অবশ্যই থাকবেন। কিন্তু দলে সুযোগ না পেয়ে রাহুল অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছিলেন। ভারতীয় দলের প্র্যাকটিসে অভিষেককে ডেকে রোহিত বলেছিলেন, আমাদের সামনে অনেক খেলা আছে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ খেলব। তারপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ইংল্যান্ড সিরিজ। এই সব ম্যাচগুলিতে রাহুলকে আমাদের দরকার। দলে ওর বিকল্প নেই। তাই তোমার কাজ হবে ওকে বাড়তি সময় দেওয়া।
রোহিতের কথা শোনার পর অভিষেক নিজের পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেন। রোহিত বুঝতে পেরেছিলেন মিডলঅর্ডারে দলের হাল ধরতে রাহুল ছাড়া কারোর উপর ভরসা রাখা যবে না। তখনও তিনি ভাবেননি যে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের সময় তাঁর হয়ে গিয়েছে। অভিষেকের সঙ্গে ক্লাস করে রাহুল নিজেকে নতুনভাবে ফিরে পেলেন। হেডিংলে টেস্টের পর রাহুল নিজেও বলেছেন, অভিষেক শর্মার সঙ্গে ক্লাস করে তিনি নিজেকে অনেকটা গুছিয়ে নিতে পেরেছেন। এখনও সময় পেলে তিনি অভিষেকের কাছে চলে যান। নিজের ঘাটতিগুলির উপর কাজ করেন। তবে এ নিয়ে অভিষেক আর অনেক কথা বলেছেন। সেদিকে তাকানো যেতে পারে।
তো অভিষেক কি বলেছেন- রোহিত আমাকে যে বিষয়গুলির উপর নজর দিতে বলেছিল তার মধ্যে একটি ছিল রাহুলের সঙ্গে কাজ করা। কে এল কিাবে খেলছে সে সম্পর্কে আরও আক্রমানত্মক দৃষ্টিভঙ্গি রাখা এবং সেরাটা বের করে আনা। এটা ছিস আমাদের মধ্যে কাজের সূচনা। অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য আমাদের হাতে ছিল ১৫দিন। সেখানে গিয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার আগে ১০দিন হাতে পাওয়া যাবে। আমি বলেছিলাম, আমাদের হাতে একমাস সময় আছে। তুমি কী করতে চাও। তোমার ভাবনা কি। তোমার মানসিকতাই বা কি। আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলে একটা রুটিন তৈরি করি। যা রাহুলের ভাবনার থেকে আলাদা। একজন কোচকে ভাগ্যবান বলতেই হবে। অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ভাল শুরু করতে পেরেছিল। দ্বিতীয় ইনিংসেও রান পেয়েছিল। এটা আমাদের কাজে ওকে বিশ্বাস এনে দিয়েছিল। এইভাবে আমাদের চলা শুরু হয়েছিল। এখন রাহুল নিজেকে প্রমান করতে পেরেছে। বোঝাতে পেরেছে ওকে ছাড়া দল গড়া সম্ভব নয়।
এখানেই নায়ারের করিশ্মা। সাফল্য মানুষকে আনন্দ দেয়। রাহুলকে দিয়েছে। আবার অভিষেককে দিয়েছে। আর কি চাই। তবু ভাবতে অবাক লাগে এমন কোচকে ভারতীয় দল থেকে বাইরে বের করে দেওয়া হল। কে করলেন! তা নিয়ে এখন আর কথা বলে লাভ নেই। সফল ক্রিকেটাররা তাঁর নামে অনেক কথা বলছেন। এটাই অভিষেকের বাড়তি পাওয়া। আর কি!
তে