মাঠের বাইরে থেকে ফের চাপে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়ে গেল। বৈভব সূর্যবংশীকে নিয়ে ঝড় উঠল সোশ্যাল মিডিয়ায়। অভিযোগ, ১৪ নয়, বৈভবের বর্তমান বয়স নাকি ১৬। প্রমান সহ বিসিসিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বিসিসিআই জানিয়েছে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এটা কতটা সত্যি! কতটা মিথ্যে! ভারতীয় ক্রিকেটে বৈভব সূর্যবংশীকে নিয়ে প্রথম যখন আলোচনা শুরু হয়, তখনও এমন কথা শোনা গিয়েছিল। সেদিনও বলা হয়েছিল, বৈভবের বয়স দুবছর কমিয়ে দেখানো হচ্ছে। আইপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলার পর এক সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে বৈভবের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেদিন তিনি বলেছিলেন, আমার বয়স নিয়ে অনেক কথা শুনেছি। বিসিসিআই রেজিস্টারে আমার বয়স যা দেখানো হয়েছে সেটাই আসল। এ নিয়ে জলঘোলা করা অর্থহীন। তাই এবারের অভিযোগ নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছেন না। বৈভবকে খেলতে দিন। এভাবে চাপে ফেলার দরকার নেই। বয়সের কারচুপি করা হয়েছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব বোর্ড কর্তারা। তারা সরকারিভাবে এ নিয়ে কোনও কিছু না জানানো পর্যন্ত চুপ থাকাই ভাল।
১৪ নাকি ১৬, এই বিতর্কে না ঢুকে ক্রিকেট মাঠে ফিরে যাওয়া যেতে পারে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে দুবলের ইনিংসে কোনও রান না পেয়ে হতাশ বৈভব মাঠেই কেঁদে ফেলেন। তখন এগিয়ে এসে রোহিত শর্মা তাঁর পিঠে রাখেন। এখানেই শেষ নয়, খেলার শেষে মাঠের একধারে বৈভবকে দেখে এগিয়ে যান ভারত অধিনায়ক। তিনি কিছুটা সময় কথাও বলেন। তিনি কি বলেছেন, তা জানা যায়নি। বৈভবকে মোটিভেট করার মতো কথা তিনি শুনিয়েছেন। সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়েই সাইকে এগোতে হয়। শুধু সাফল্য আসবে, এমনটা হতে পারে না। ব্যর্থতাকেও দেখতে হবে। এই দুয়ের মিশেলকে সঙ্গে নিয়ে চলে নিজেকে মানসিক দিক তৈরি করতে হবে। যাঁরা পারবেন, তাঁরা নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পরবেন। না হলে আটকে যেতে হবে। রোহিত ও বৈভবের কথোপকথন জানা না গেলেও ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রীর কথায় উজ্জ্বীবিত হতে পারেন বিস্ময় বালক। শাস্ত্রী বলেন, এর থেকে বড় কিছু আর হতে পারেনা। রোহিতের কথা শুনে বৈভব নিজেকে নিশ্চয় গুছিয়ে নিতে পারবে। আমি আগেও বলেছি, একদিন আসবে যেদিন ব্যাটে রানের দেখা পাওয়া যাবে না। সেদিন ভেঙ্গে পড়লে চলবে না। নিজেকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তারপর ঠিক রান আসবে।
শুক্রবার রাতের মধ্যে কলকাতায় ঢুকে পড়বে রাজস্থান রয়্যালস। রবিবার তারা কেকেআরের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে। একদিক থেকে দেখলে মনে হতেই পারে যে রাহানেদের কিছুটা চাপে ফেলে দিল রাজস্থান। গুজরাটের বিরুদ্ধে ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করা বৈভব আকাশের মাথায় উঠে পড়েছিলেন। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে রান করতে না পেরে আকাশ থেকে একেবারে নিচে পড়েছে। এই সাপ লুডোর খেলা ক্রিকেট মাঠে চলতেই থাকবে। এটাই ক্রিকেটারদের জীবন। একে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। এবার দেখতে হবে রোহিতের কথায় নিজেক কতট মোটিভেট করতে পারলেন বৈভব। তাঁর ব্যাটের সুইং দেখার মতো। ব্যাটের ফ্লো খুব ভাল। ইডেনে সেই ভেল্কি তাঁর কাছ থেকে সকলে দেখার অপেক্ষায়। রাহুল দ্রাবিড় আগেই বৈভবকে জানিয়েছিলেন সব বলকে ওভার বাউন্ডারি মারা যায় না। নিজেকে ধরে নিতে হবে। সেটাই কি ইডেনে দেখিয়ে ছাড়বেন। হতে পারে। আর সেট হলে কেকেআর চাপে পড়ে যাবে। মানসিক দিক থেকে চাঙ্গা কেকেআরও। আগের ম্যাচ তারা জিতেছে। এখন চারে চার করতে হবে। সেই লক্ষ্যে কতটা ছুটতে পারেন রাহানেরা, সেটই এখন দেখার বিষয়।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পেসার দীপক চাহার বলেছেন, তাঁরা পরিকল্পনা করে বৈভবকে আউট করে দিয়েছেন। সবাইকে নিয়ে আলাদা করে পরিকল্পনা হয়। যখন কাজে লাগে, তখন ভাল লাগে। না লাগলে হতাশা আসে। দীপকের পরিকল্পনা কাজে লাগায় তিনি বলতে পারছেন, বৈভবের দুর্বলতা বের করে ফেলেছেন। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, দীপকের এক স্লোয়ার মাঠের বাইরে ফেলতে গিয়ে সময়ের ভুল চুক করে ফেলেন। বল সোজা মিড অনে দাঁড়ানো জ্যাকসের হাতে চলে যায়। ২১৮ রান তাড়া করতে নেমে মারমুখী মেজাজে খেলর চেষ্টা করেছিলেন বৈভব। তিনি অবশ্য এভাবেই খেলেন। সেটা করতে গিয়ে সময়ের ভুল। কেকেআর পেসারদের মাথায় রাখতে হবে। ফুল বল করে সুবিধা পাওয়া যাবে না। যশ্বসী আছেন। তবে বৈভবকে নিয়ে এমন আলাদা ভাবনা মাথায় নিয়ে রানা অরোরাদের ছুটতে হবে। তাঁদের কাজ শুরুতে বৈভবকে আউট করা। এটা করতে পারলে রাজস্থানের রান তোলার গতি শ্লথ হয়ে পড়বে। যা কেকেআরকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আর উল্টো হলে চাপ পড়বে কেকেআর।