এবার থেকে ভারতে আর শোয়েব আখতার ও বাসিত আলির ইউ টিউব চ্যানেল দেখা যাবে না। পাকিস্তানের দুই প্রাক্তন ক্রিকেটারের ইউটিউব চ্যানেলকে নিষিদ্ধ করল ভারত সরকার। পাহেলগামে ২৬জন ভারতীয়র প্রাণহানি ঘটার পর এমন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক।
শুধু দুই ক্রিকেটারের ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাই নয়, যারা উস্কানিমূলক ও সাম্প্রদায়িকতার প্রচার চালাচ্ছে এমন ১৬টি পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভারতে সেইসব পাকিস্তানি চ্যানেল আর দেখা যাবে না। আসলে এই সমস্ত চ্যানেলে অধিকাংশ সময় ভারতীয় সেনাবাহিনি ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে লক্ষ্য করে ক্রমাগত মিথ্যাচার করা হচ্ছিল। যা কোনওভাবে মেনে নেওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় সরাষ্ট্রমন্ত্রক পরামর্শ দিয়েছে, কোনওভাবে পাকিস্তানের ইউটিউব চ্যানেলগুলোকে যেন ভারতে না দেখা যায়। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পাকিস্তানের ১৬টি ইউটিউব চ্যানেল আপাতত ভারতে দেখা বন্ধ রাখা হবে। এক বিবৃতিতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “জাতীয় নিরাপত্তা ও ভারতীয় জনগণের ওপর যাতে প্রভাব না পড়ে তারজন্য ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের দেশে পাকিস্তানের ১৬টি ইউটিউব চ্যানেল দেখা যাবে না।” মজার ঘটনা হল, শোয়েব আখতার ও বাসিত আলি মূলত ক্রিকেট খেলার উপর মন্তব্য করেন। তঁারা সাধারণত রাজনীতির মধ্যে ঢোকেন না। কিন্তু পাকিস্তানের ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ করতে গিয়ে দেখা যায় এই দুই ক্রিকেটারের চ্যানেল তারমধ্যে রয়েছে। এখন দোষের ভাগীদার দুই প্রাক্তন পাকিস্তানি ক্রিকেটারকেও হতে হল। কোনও সন্দেহ নেই, শোয়েব আখতারের চ্যানেল পাকিস্তান কেন, ভারতে জনপ্রিয়তা বেশ ভালোই। তিনি মুূলত পাকিস্তান ক্রিকেটের বড় একজন সমালোচক। ফলে তঁার বক্তব্য শোনার জন্য ভারতে শোয়েবের ইউটিউব চ্যানেল বেশ জনপ্রিয়।
অন্যান্য নিষিদ্ধ চ্যানেলগুলোর মধ্যে রয়েছে, ডন নিউজ, ইরশাদ ভাট্টি, সামা টিভি, এআরওয়াই নিউজ, বোল নিউজ, রাফতার, দ্য পাকিস্তান রেফারেন্স-সহ আরও অনেক। পাহেলগামে সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণে ২৬জন ভারতীয় মারা যাওয়ার পর থেকে ভারত সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছেদ করতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই হামলাকে “নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের উপর কাপুরুষোচিত আক্রমণ” বলে অভিহিত করার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে ভারত। পাকিস্তান ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের দ্বারা পরিচালিত এই হামলা বলে প্রমাণিত হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এই মুহূর্তে তুঙ্গে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বা সিসিএস বেশ কয়েকটি কঠোর পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করা, আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা না দেওয়া, নয়াদিল্লি থেকে পাকিস্তানের সামরিক অ্যাটাশেদের বহিষ্কার করা ও উভয় হাইকমিশনে কূটনৈতিক কর্মী সংখ্যা কমানো। এখন দেখার শোয়েব ও বাসিতের ইউটিউব চ্যানেল ভারতে ছাড়পত্র পায় কিনা।