তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফের টেনিস কোর্টে ফিরতে চলেছেন জাহ্নিক সিনার। ২৬ জানুয়ারি শেষবার তাঁকে কোর্টে নামতে দেখা গিয়েছিল। তারপর ওয়াডার নির্দেশে পুরোপুরি টেনিস কোর্ট থেকে দূরে সরে যেতে হয়। সেই সিনার ওয়াডার ঘোষিত শাস্তির মেয়াদ কাটিয়ে ফিরতে চলেছেন টেনিস কোর্টে। ৪ মে শুরু হবে ইতালিয়ান ওপেন। সেই প্রতিযোগিতায় তিনি খেলবেন বলে জানিয়েছেন। হামবুর্গ ওপেনেও তঁার খেলার কথা। আসলে ফরাসি ওপেনে নামার আগে যতটা সম্ভব প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে চাইছেন। যাতে নিজেকে পুরোপুরি ম্যাচ ফিট হয়ে নিজের সুনাম বজায় রাখতে পারেন।
সিনারের শাস্তি ঘোষণাকে কোনও টেনিস তারকা মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে তিনি নিষিদ্ধ ক্লোস্টেবল নিয়েছিলেন। দু-দুবার পরীক্ষায় দেখা যায় সিনার ব্যর্থ। ফলে ওয়াডা ইতালীয়কে িতন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তঁার শাস্তির মেয়াদ শুরু হয় ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে। যার দরুন মরশুমের শুরুর দিকে তিনি খেলতে পারেননি। সিনারকে ওয়াডা জানিয়ে দিয়েছিল, ১৩ এপ্রিলের আগে তিনি কোনওমতে প্র্যাকটিশ করতে পারবেন না। স্বশাসিত ট্রাইবুনাল অনুমতি দেওয়ায় তিনি খেলতে পেরেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। এবং দুটোতেই চ্যাম্পিয়ন হন। কিন্তু ওয়াডা সিনারকে মাত্র তিন মাস সাসপেন্ড করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন টেনিস তারকারা। ওয়াডাকে দোষারোপ করে একের পর এক টেনিস তারকা ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। স্ট্যান ওয়ারিঙ্কা যেমন বলেছিলেন, “খেলার উপর থেকে স্বচ্ছতা থাকার বিশ্বাসটাই উঠে গেল। এরপর থেকে টেনিসে স্বচ্ছতা থাকবে বলে মনে হয়না।” নিক কুরিয়র তো সরাসরি বলে দিয়েছিলেন,“টেনিসে সততা বলে আর কিছু নেই।” মেদভেদেভ ওয়াডার নাম এনে বলে ছিলেন, “এবার থেকে যারা নিষিদ্ধ কিছু সেবন করবে তারা শাস্তির কবলে পড়লে ওয়াডার সঙ্গে বসে যেতে পারে। তাহলে নিশ্চয় শাস্তির মেয়াদ কমে যাবে।” জকোভিচও পরে বলেছিলেন, “সিনারের শাস্তির মেয়াদ নিয়ে ওয়াডা যা করল তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্বজুড়ে কেউই মেনে নিতে পারছে না। সিনারকে মাত্র তিন মাস শাস্তি দিয়ে ওয়াডা তার ভাবমূর্তি নষ্ট করল। ভাবমূর্তি নষ্ট হল টেনিসেরও। যথেষ্ট পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। কেউ নামী হলে তার শাস্তির মেয়াদ অন্যরকম হতে পারে না।” এমনিতেই সিনার কোনঠাসা। তারউপর শাস্তির মেয়াদ কাটিয়ে কোর্টে ফিরে আসছেন। ফলে তঁাকে যে আগের জায়গায় পাওয়া যাবে না তা নিশ্চিত। বিশ্ব ক্রমতালিকায় তিনি ছিলেন শীর্ষে। এখন তঁাকে ছন্দ খুঁজে পেতে সময় লাগবে। তাই সিনার বলেছেন, “প্র্যাকটিশে কোনও ফঁাকি দিইনি ঠিকই। কঠোর অনুশীলন করেছি। আশাকরছি ক্লে মরশুমের আগে হারানো গতি কিছুটা ফিরে পাব। তবে এটুকু বলতে পারি, আমার পক্ষে পুরোন জায়গায় ফিরে আসা মোটেই সহজ হবে না।” ওয়াডা জানিয়ে দিয়েছিল ১৩ এপ্রিলের আগে তাঁর টিমকে নিয়ে তিনি আদৌ প্র্যাকটিশে নামতে পারবেন না। এমন কী তাঁর কোচ সিমোন ভ্যাগনোজির থেকে দূরে থাকতে হবে। শারীরিক ও মানসিক ভাবে যাতে সক্রিয় থাকতে পারেন তারজন্য একটা বিস্তারিত প্ল্যান তৈরি করা হয়েছিল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি নিজেকে যতটা ফিট রাখা যায় তাই করার চেষ্টা করেছেন। তবে তিন মাসের মধ্যে অনেক কিছু ইতিবাচক দিক খঁুজে পেয়েছেন ইতালীয় তারকা। “তিন মাসের মধ্যে অনেক কিছু ইতিবাচক দিকও খুঁজে পেয়েছি। যাবতীয় ঝামেলা থেকে দূরে ছিলাম। পরিবার, বন্ধুদের সাথে যথেষ্ট সময় কাটিয়েছি। তাছাড়া নিজেকে খুঁজে পেলাম। চেষ্টা করেছি কোথায় দঁাড়িয়ে আছি তা খুঁজে বের করতে।”