রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অভাব কি ভারতীয় দল হেডিংলের মাঠে অনুভব করছে। গতবছরের শেষদিকে অস্ট্রেলিয়ার মাঠে হঠাৎ করে অবসর নিয়ে দেশে ফিরে আসেন অশ্বিন। সেদিনই জানিয়ে দিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর নয়। পাঁচ মাস পর রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি অবসর নিয়ে নিলেন। তিন তারকা ক্রিকেটার ঠিক ইংল্যান্ড সিরিজে আগে জাতীয় দলে নেই। রো কো ওয়ান ডে ক্রিকেট খেললেও টেস্টে আর নয়। প্রথম একাদশের তিন ক্রিকেটারের ঘাটতি মেটাতে গিয়ে ভারতীয় দল কি ঝামেলায় পড়ে গিয়েছে!
সমস্যা হয়েছে কি হয়নি, তা আগামিদিনে আর স্পষ্ট হবে। তবে অশ্বিনকে নিয়ে খুব একটা অসুবিধা নেই ভারতের। ইংল্যান্ডের মাঠে স্পিনাররা তৃতীয় দিনের লাঞ্চ পর্যন্ত বিরাট কিছু করতে পারেননি। খেলায় লড়াই চলছে ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে পেসারদের। বুমরা উইকেট না পেলেও প্রসিদ্ধ ও সিরাজ উইকেট পেয়েছেন। তবে উইকেট নিতে গিয়ে তাঁরা এত রান খরচ করে ফেলছে যা ভারতকে দ্বিতীয় ইনিংসে কতটা সুবিধা দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। দলে তিনজন ডানহাতি বোলার। কেউ বল বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ বা আবার বল ভিতরে নিয়ে আসছেন। একজন বাঁহাতি বোলার দলে থকলে যে সুবিধা পাওয়া যায়, সেটা হচ্ছে না। ইংল্যান্ডে দলের সঙ্গে সফর করছেন অর্শদীপ সিং। প্রথম টেস্টে তাঁকে ১১ জনের থেকে বাইরে রাখা হয়েছে। কেন! বাঁহাতি পেসার থাকলে ডা হাতি ব্যাটসম্যানদের কাছে একটা অ্যাঙ্গেল করে বল আসে। এখানে অসুবিধায় পড় ব্যাটসম্যানরা। সেকথা কি ম্যানেজমেন্টের মাথায় চিল না। ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, হেডিংলেতে নামার আগে উইকেট নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের কি ভাবনা ছিল জানা নেই। তবে আমার মনে হয়, এই টেস্টে অর্শদীপকে দলে নেওয়া উচিত ছিল। তিন পেসারের মধ্যে একজন বাঁহাতি থাকলে সুবিধা পাওয়া যায়। একথা ভেবে ওকে দলে নেওয়া হয়েছে। তা হলে কেন প্রথম টেস্টে অর্শদীপকে নিয়ে ভাবল না ম্যানেজমেন্ট। আসলে গম্ভীর এখানেই চালে ভুল করে ফেলেছেন। জাহির ও নেহরা চলে যাওয়ার পর মাঝে মধ্যে কোনও বাঁহাতি পেসারকে জাতীয় দলে দেখতে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু তাঁরা কেউ জায়গা সিমেন্ট করতে পারেননি। সাদা বলের ক্রিকেটে অর্শদীপ নিজেকে প্রমান করেছে। তাই এবার লাল বলের ক্রিকেটে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এত কিছু করে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার পর কেন মাঠের বাইরে বসিয়ে রাখা হল। সৌরভ বলছেন, হয়তো পরের টেস্টে ওকে দেখতে পাওয়া য়াবে। কিন্তু হেডিংলেতে থাকলে কাজে দিত।
বিশ্বকাপে রোহিত-বিরাটের কাজ সহজ হবে না
২০২৭ ওয়ান ডে বিশ্বকাপে রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে কি খেলতে দেখা যাবে! এ নিয়ে প্রশ্ন অনেক আগে থেকে উঠে গিয়েছে। টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে যে কথাটি উঠে এসেছে, তা আবার সৌরভের সামনে এল। তিনি বলছেন, ওয়ান ডে ক্রিকেটের বাইরে ওরা আর কোনও ক্রিকেট খেলবে না। তাই ফিট থাকতে নিজেকে আলাদা উদ্যোগ নিতে হবে। য মোটেও সহজ নয়। অনেকে ফিটনেস ফ্যানাটিক। যে তালিকায় বিরাটের নাম সকলের আগে উঠে আসে। কিন্তু এমন কজন ক্রিকেটার থাকে, যারা ট্রেনিং করে নিজেকে ফিট রাখতে পারে। তার উপর আগামি দুবছর ভারতীয় দল ২৭ থেকে ৩০টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলবে। যার অর্থ বছরে রোহিত ও বিরাটকে ১৪ থেকে ১৫টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলতে হবে। তারপর বিশ্বকাপের জন্য মাঠে নামা। এই কাজটা কঠিন। তাই বিশ্বকাপে ওদের খেলা মোটেও সহজ হবে না। দেখতে হবে, আগামি দুবছর ওরা কেমন কন্ডিশনে থাকে। তার উপর ওদের ওয়ান ডে ক্রিকেটের ভবিষ্যত নির্ভর করবে।
আবার কোচের চেয়ারে…
একসময় জাতীয় দলের কোচের চেয়ারে বসার ব্যাপারে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম উঠে এসেছিল। সেবার লড়াইয়ে ছিলেন রবি শাস্ত্রী। কলকাতায় কোচ বাছাইয়ের লড়াইয়ে সেবার বাজি জিতে যান রবি শাস্ত্রী। তারপর থেকে সৌরভের নাম জাতীয় দলের কোচের জন্য ওঠেনি। তবে আইপিএলে তিনি দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে মেন্টরের কাজ করেছেন। সেই দলের ছেলে ও মেয়েদের ক্রিকেটের দেখভালের দায়িত্ব ছিল সৌরভের কাঁধে। এবার আবার তাঁর নাম উঠে আসছে। না, বোর্ড থেকে এ ব্যাপারে নাম ওঠেনি। এক সাক্ষাৎকারে সৌরভ বলেন, আমি সবে পঞ্চাশ পার করেছি। এখনও আমার হাত অনেক সময় আছে। তবে এই মুহূর্তে নানা কাজ নিয়ে ব্যস্ত। দেখা যাক, এরপর সময় এলে করা যেতে পারে।
কথা শুনে মনে হল, সুযোগ এলে সৌরভ জাতীয় দল নিয়ে চলতে রাজি। তবে এখনই নয়। গম্ভীর ২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত কোচের দায়িত্বে আছেন। বলা যায় ন তারপর সৌরভরে কাছে সুযোগ এলেও আসতে পারে। তিনি তখন কি করেন, সেটাই দেখার। তবে ইচ্ছে যে আছে তা কথাতেই পরিস্কার হয়ে উঠেছে।