ঋষভ পন্থ কাজ কিছুটা সহজ করে দিলেও ভারত-ইংল্যান্ডের প্রথম টেস্টের আগে অনেক কিছু জটিল হয়ে রইল। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে এসে ঋষভ জানিয়ে দেন অধিনায়ক শুভমান গিল ও তাঁর ব্যাটিং অর্ডার কেমন হতে পারে। এর মধ্যে জটিল কিছু ছিল না। সকলে আন্দাজ করে নিয়েছিলেন. হেডিংলে টেস্টে শুভমান কোথায় ব্যাটি করবেন। আর ঋষভই বা কত নম্বরে আসবেন। এর বাইরেও তো অনেক কিছু আছে। সেটা কে বলবে। না, এ নিয়ে নাকি আলোচনা চলছে। পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।
ঋষভের এই কথা শোনার পর অনেক কিছু জটিল হয়ে রইল। প্রথমেই প্রশ্ন উঠছে, ওপেন করবেন কে! যশ্বসীর জায়গা পাকা। তাঁকে নিয়ে কথা উঠতে পারে না। তাঁর পার্টনার কে হবেন! কে এল রাহুল! অস্ট্রেলিয়ার মাঠে রোহিতের অনুপস্থিতিতে পারথ টেস্টে যশ্বসীর সঙ্গে ওপেন করেছিলেন রাহুল। তাঁদের পারফরম্যান্সের কথা সকলেই জানেন। ইংল্যান্ডে রোহিত নেই। তা হলে কি পুরনো জুটিকে হেডিংলে টেস্টেও খেলতে দেখা যাবে! এই ছবিটা টেস্টের আগেরদিন জানার খুব দরকার ছিল। ঋষভ এর উপর আলোকপাত করেননি। কিন্তু ভারতীয় দলের নেট প্র্যাকটিসে একটা ছবি পরিস্কার যে সাই সুদর্শনের টেস্ট অভিষেক হচ্ছে। এবং সেটা প্রথম টেস্টেই। তা হোক, সবাই ধরে নিয়েছিলেন সুদর্শন মাঠের বাইরে বসে থাকবেন না। দারুন ফর্মে থাকা তামিলনাড়ুর ক্রিকেটারটির মাঠে নামা শুধু সময়ের অপেক্ষা। তো তিনি কত নম্বরে ব্যাট করবেন! আর রাহুলের জায়গা কোথায় হবে!
জাতীয় দের দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার সুনীল গাভাসকর ও রবি শাস্ত্রী বলেছেন, যশ্বসী ও রাহুলকে ওপেনে দেখতে চাই। তিনে আসতে পারে সুদর্শন। অভিষেক হতে যাওয়া ক্রিকেটারকে আগে থেকে বলে দিলে মানসিক দিক থেকে প্রস্তুতি সে ভালভাবে নিতে পারে। কোচ গৌতম গম্ভীর ক্রিকেট জীবনে রাজ্য বা জাতীয় দলের হয়ে ওপেন করতেন। একজন নতুন ক্রিকেটারের মানসিকতা কেমন হতে পারে তা তিনি ভালই বোঝেন। তিনি কি সুদর্শনকে আগে থেকে জানিয়ে দেননি। নিশ্চয় ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেই ইঙ্গিত কি বলছে!
হেডিংলেতে টেস্টের আগে কোচ গম্ভীরের সঙ্গে অধিনায়ক শুভমান গিল অঙ্ক কষা শুরু করে দিলেন।
টেস্টের আগে সবাই ভারতীয় দলের নেটের দিকে তাকিয়ে থাকেন। সেই নেট প্র্যকটিস কিছুটা হলেও আভাস দেয়। সেখান থেকে ধরা পড়ছে যে যশ্বসীর সঙ্গে সাই সুদর্শন সম্ভবত প্রথম টেস্টে ওপেন করতে পারেন। সুদর্শনের টেকনিক ভাল। সামনে বা পিছনের পায়ে ভাল খেলতে পারেন। ইংল্যান্ডে কাউন্টি ক্রিকেটে তাঁর এই খেলা খুব কাছ থেকে দেখেছেন সারে দলের অন্যতম কর্তা অ্যালেক্স স্টুয়ার্ট। তিনি বলেছেন, অনেক দেরিতে খেলে বলে পিছনের পায়ে স্ট্রোক খেলতে অসুবিধা হয় না সুদর্শনের। কাট বা পুল ভাল মারতে পারে। আবার সামনে পায়ে গিয়ে ড্রাইভও ভাল মারেন। তিনি মনে করছেন, ইংল্যান্ড সিরিজে শুধু ভাল খেলাই নয়, রানও পাবে সুদর্শন। তাই হয়তো গম্ভীরের পছন্দ তামিলনাড়ুর বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে। সেই কারনে তিনি যশ্বসীর সঙ্গে ওপেন করতে পারেন।
অনেকেই বলেন, দলে ডান বা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পার্টনারশিপ করলে প্রতিপক্ষ বোলাররা চাপে পরে যান। তাঁদের লেংথে গরমিল হয়। সেই সুযোগ হাতে কাছে থাকলে তা কেন ব্যবহার করা হবে না। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মতো রাহুলকে শুরুতে আনাই যেত। কেন সেটা ভাবছে না টিম ম্যানেজমেন্ট! না, বৃহস্পতিবার লিডসের সকালের ছবি রাহুলকে তিন নম্বরে নিয়ে আসা হবে। টেস্ট ক্রিকেটে রাহুলকে সব অর্ডারে খেলতে দেখা গিয়েছে। ওপেন থেকে শুরু করে পাঁচ নম্বর জায়গা পর্যন্ত তিনি খেলেছেন। তাই হয়তো আবার তিনে রাহুলকে ভাবা হচ্ছে। এই জায়গাটি যে কোনও দলের পক্ষে কঠিন। ভেবে দেখুন, একসময় রাহুল দ্রাবিড় তিনে খেলে কত কিছু করেছেন। সৌরভও টেস্টের শুরুর দিকে তিনে এসেছেন। এই পজিসনে যে কোনও ক্রিকেটারের দায়িত্ব বড় ইনিংস খেলে দলকে ভাল জায়গায় নিয়ে যাওয়া। রাহুল অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তিনি সামলাতে পারবেন। ওপেন নেমে শুরুতে আউট হয়ে গেলে দলের ব্যাটিংয়ে চাপ পড়তে পারে। তার থেকে তিনে নেমে দলের হাল ধরুক রাহুল। তারপর শুভমান ও ঋষভ পন্থ আছেন। ছয় নম্বরে ভাবা হয়েছে করুন নায়ারকে নিয়ে আসা হবে। বড় ইনিংস খেলতে পারেন। লোয়ার মিডল অর্ডারে এসে তিনি দলকে টেনে নিয়ে যাবেন। এমন ছক এঁকে রেখেছেন গম্ভীর। নতুন দল। নতুন অধিনায়ক। তাই তিনে ও ছয়ে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে রেখে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়া। এখন দেখার অপেক্ষা, খেলা শুরুর আগে ভারতীয় দলের প্রথম একাদশের ছবি কেমন হতে পারে।