পারেননি হ্যারি কেইন। কিন্তু পারলেন সন হিউং মিন। বিশ্বের অন্যতম স্ট্রাইকার হতে পারেন কেইন। তবু ১৪ বছরে ট্রফি খরার মধ্যে রেখে ক্লাব ছেড়ে তিনি চলে গিয়েছেন। অথচ দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যতম ফুটবলার সন হিউং মিন দেখিয়ে দিলেন, ১০ বছর আগে স্পার্শদের শিবিরে যোগ দিয়ে তিনি যা পেরেছেন, অন্যরা তা করে দেখাতে পারেনি। ১৭ বছর পর ক্লাবের ক্যাবিনেটে সুজ্জিত রাখার মতো ট্রফি এল সনের অধিনায়কত্বে। ইউরোপা লিগের ফাইনালে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল টটেনহ্যাম। একমাত্র গোলটি করেন ব্রেনান জনসন।
শেষবার ট্রফি এসেছিল ২০০৮ সালে। লিগ কাপ জয়ের মাধ্যমে। তারপর থেকে চলছিল ট্রফি খরা। আবার ইউরোপ মঞ্চ ধরলে চলে যেতে হবে ৪১ বছর আগে। ১৯৮৪ সালে উয়েফা কাপ জিতেছিল টটেনহ্যাম। উয়েফা কাপকে বর্তমান ইউরোপা লিগ বলা হয়। সুতরাং টটেনহ্যাম এক ঢিলে বহু পাখি মেরে ফেলেছে। তবে এই ঢিল মারার প্রধান কারিগর ছিলেন ব্রেনান জনসন। বিলবাওয়ের সান মামেসে ইউরোপা লিগের ফাইনালে একমাত্র গোলটি হয় ৪২ মিনিটে। খেলার শেষে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তুলে ধরার সময় সনকে দেখা যায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তে। যতই হোক তিনিও তো এই প্রথম ক্লাবের জার্সিতে কোনও ট্রফি পেলেন। একই ছবি ফুটে ওঠে স্টেডিয়াম জুড়ে। সমর্থকরা বিজয় উল্লাসে ফেটে পড়েন।
তবে এই ট্রফি শুধু টটেনহ্যামের ট্রফি খরা কাটাল তাই নয়, বাঁচিয়ে দিল পোস্তেকোগলুর চাকরিও। যতই হোক প্রিমিয়ার লিগ টেবিলে দল রয়েছে ১৭তম স্থানে। এবার লিগে ৩৭টা ম্যাচের মধ্যে ২১টাতে হেরেছে দল। সেই দলের কোচ পোস্তেকোগলুকে রেখে দিতে কোন ক্লাব চাইতো। কিন্তু ইউরোপা লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় মনে হয়না তঁার চাকরি যাবে। সেইজন্য বোধহয় ম্যাচের শেষে আবেগের বশে বলে ফেলেছেন, “সেল্টিক, ইয়োকোহামা এফ, মেরিনোস, অস্ট্রেলিয়া ও ব্রিসবেন রোয়ার্সে প্রথম বছর আমি কখনও সফল হতে পারিনি। সবকিছু ঘটেছে দ্বিতীয় বছরের পর থেকে। শিরোপা জিতে আগের ক্লাবগুলোতে বুঝিয়ে দিতে পেরেছিলাম আমি মোটেই ব্যর্থ কোচ নই। এখানেও আশাকরি তা প্রমাণ দিতে পারলাম। এটুকু বলতে পারি, আমার জীবন পাল্টায়নি। অতীতের মতোই এখনও বিনয়ী কোচ হয়ে থাকতে চাই। লক্ষ্য থাকে দলকে জেতানো। তাই অন্যকোনও দিকে নজর দিতে চাইনা।” অন্যদিকে ক্লাব ক্যারিয়ারে প্রথম শিরোপা জেতা সন মরশুম শুরুর আগে জানিয়ে ছিলেন, “আমি টটেনহ্যামের কিংবদন্তী হয়ে থাকতে চাই।” হয়তো সেদিন আবেগের বশে কথাগুলো বলেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ান ফুটবলারটি। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে হারানোর পর কথাগুলো মনে করাতেই সন বলে উঠলেন, “আমি যা মরশুমের আগে বলেছিলাম তা নিশ্চয় রাখতে পেরেছি। এখন তো আমি নিজেকে বলতেই পারি, টটেনহ্যামের আমি একজন কিংবদন্তী।” পরমুহূর্তে নিজেকে প্রশ্ন করে সন বলতে থাকেন, “কেন নয় বলুন? সত্যি কি আমি একজন কিংবদন্তী নই? ১৭ বছর ধরে যে ক্লাবের হয়ে কোনও ট্রফি আনতে পারেনি। শূন্যতার মধ্যে ক্লাব বিরাজ করেছে। সেই জায়গায় কিছু অসাধারণ ফুটবলারের সাহায্য নিয়ে সেই দিনটা ক্লাবে ফিরে এসেছে। সেই কারণে বলতেই পারি, আমি একজন কিংবদন্তী।”
ট্রফি খরা থেকে তবু মুক্ত হতে পারল টটেনহ্যাম। কিন্তু সেই তিমিরে রয়ে গেল ম্যান. ইউ.। প্রিমিয়ার লিগ টেবিলে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড এই মুহূর্তে রয়েছে ১৬তম স্থানে। ১৯৭৩-৭৪ মরশুমের পর কখনও ইউনাইটেডের এত খারাপ দশা হয়নি। ফুটবল মহলের আশা ছিল, ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিশ্চয় ইউনাইটেড পরের মরশুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। অথচ সেই ক্লাবকে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় দেখাই যাবে না। ১৯৯০ সালের পর এমন দুর্দশার সামনে এসে পড়ল ইউনাইটেড। তাই ম্যাচের পর হতাশার সুরে কোচ রুবেন আমোরিমকে বলতে শোনা যায়, “এখন ক্লাব ম্যানেজমেন্ট যদি চায়, আমাকে সরিয়ে দিলে ক্লাবের মঙ্গল হবে তাহলে সরে যেতে আমি বিন্দুমাত্র দ্বিধা করব না। যেদিন বলবে তারপরের দিন চলে যাব। চুক্তির দিকে একবারও ফিরে তাকাব না। ক্ষতিপূরণ নিয়ে কোনও কথাই বলব না।”

ইংল্যান্ড সিরিজে কে এল রাহুলকে অধিনায়ক করা যেতে পারতঃ মঞ্জরেকর
সঞ্জয় মঞ্জরেকর এমনই। কোন কথায় বিতর্ক দানা বাঁধবে, সবসময় সেটাই তিনি খোঁজেন। এবং তাঁকে ঘিরেই বিতর্ক বেড়ে ওঠে। এই