লামিনে ইয়ামাল না লিয়নেল মেসি কে এগিয়ে, এই নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। গত কয়েকমাস ধরেই তুলনা চলছিল। কিন্তু ইন্টার মিলানের সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনা ৩-৩ গোলে ড্র করার পর থেকে সেই তুলনার মাত্রা অতিরিক্ত হারে বেড়ে গিয়েছে। বার্সেলোনার হয়ে ১০০ ম্যাচ খেলে ফেললেন ইয়ামাল। তারচেয়ে বড় কথা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে মেসির চেয়ে কম বয়সে গোল করেছেন তিনি। তারউপর তিনি দুরন্ত পারফরম্যান্স সকলের সামনে তুলে ধরেছেন। সব মিলিয়ে ইয়ামাল আর মেসি এখন এক পংক্তিতে।
বার্সা-মিলান ম্যাচের শেষে ইন্টার মিলানের ম্যানেজার সিমোন ইনজাঘি প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন ইয়ামালকে। বুঝিয়ে দিয়েছেন, বার্সার সুপারস্টার ইয়ামাল থাকায় তঁাদের পক্ষে জেতা কঠিন হয়ে দঁাড়ায়। শুধু এখানেই থেমে থাকেননি, তিনি এও বলেছেন ৫০ বছরে এমন এক একজন ফুটবলার বিশ্ব ফুটবলে জন্ম নেয়। ঠিক এইভাবে ২০০৪ সালে আর একজন ইতালিয় কোচ মেসির প্রতিভা দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন। তখনকার জুভেন্তাসের ম্যানেজার ফ্যাবিও কাপেলো আর্জেন্টিনার এই ফুটবলারকে লিয়েনে নেওয়ার জন্য ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের কাছে অনুরোধ করেছিলেন। তখন চলছিল গোয়ান গ্যাম্পার ট্রফি। মেসি সম্পর্কে তখন কাপেলো বলেছিলেন, “অনেকদিন হয়ে গেল এত কম বয়সে এমন ফুটবলার দেখিনি। কী ব্যক্তিত্ব, দুরন্ত গতি। আমি তার খেলা দেখে মুগ্ধ। ইতিমধ্যে আর্জেন্টিনা যুব দলের সঙ্গে তাকে খেলতে দেখেছি। কিন্তু এই স্টেডিয়ামে, এত মানুষের সামনে তার খেলা দেখা অন্যরকম।”
ইয়ামাল ও মেসির ১০০ ম্যাচের পরিসংখ্যানগত তুলনা করলে দঁাড়াচ্ছে–মেসি ৪১টা গোল করেছেন। সহায়তা করেছেন ২২। ইয়ামাল করেছেন সরাসরি গোল ১৫। ৩৩টা গোল করার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছেন। মেসি ম্যাচ জিতেছেন ৬৭টি। অন্যদিকে ইয়ামাল জিতেছেন ৭৭টি ম্যাচ। তবে দুজনে এই সময়ের মধ্যে তিনটে টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। এই একটি ক্ষেত্রে এক পংক্তিতে দুজনে দঁাড়িয়ে। সুতরাং মেসি যেখানে সব মিলিয়ে ৫৬টি গোল করার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। ইয়ামালের সেখানে অবদান ৫৫টি। এই জায়গায় মেসি সামান্য এগিয়ে থাকলেও, ইয়ামাল আবার মেসিকে অতিক্রম করে গিয়েছেন ম্যাচ জেতার দৌড়ে। তবে দুটো প্রতিযোগিতায় এখনও টিকে বার্সা। এক, লা লিগা ও দুই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। যদি দুটো ট্রফি তুলে নিতে পারে বার্সা তাহলে মেসিকে এই জায়গা তেও অতিক্রম করে চলে যাবেন ইয়ামাল।
ইয়ামাল সম্পর্কে কিছুদিন আগে মেসিকে জিগ্যেস করা হয়েছিল, তঁার অভিব্যক্তি কি। তার প্রত্যুত্তরে মেসি জানিয়ে ছিলেন, “ইয়ামাল ইতিমধ্যে যা দেখাচ্ছে, বা যা করছে তা নিঃসন্দেহে সকলের নজর কেড়ে নিয়েছে। তাছাড়া স্পেনের হয়ে খেলে ইতিমধ্যে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ইয়ামালের বয়স মাত্র ১৭। একজন ফুটবলার হিসেবে নিশ্চয় বড় হবে। আমার ধারণা, ফুটবল বিশ্বে তার অবদান রাখবে। যেমনটা আমি করতে পেরেছি। এটুকু বলতে পারি, তার খেলায় এমন কিছু স্কিল রয়েছে যা এককথায় অবিশ্বাস্য। বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের মধ্যে ইয়ামাল এই মুহূর্তে কিন্তু ঢুকে পড়েছে।”
উল্টোদিকে মেসির প্রসঙ্গে ইয়ামালের বক্তব্য ছিল খুব পরিষ্কার, “আমি কারও চেয়ে এগিয়ে না পিছিয়ে এসব নিয়ে ভাববার প্রয়োজন মনে করিনা। আমি সবসময় ভাবি নিজের সম্পর্কে। নিজে কী করলাম সেটাই হল বড় কথা। তারচেয়েও বড় বিষয় হল, দলের জন্য সেরাটা তুলে ধরা। পরিসংখ্যান নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যাথা নেই। সবসময় চেষ্টা করি খেলাকে উপভোগ করতে। আনন্দ দিতে চাই মানুষদের।” পরমুহূর্তে মেসি সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইয়ামাল জানিয়ে দেন, “মেসির সঙ্গে তুলনা করাটা আমার কাছে সম্মানের বিষয়। আমি চেষ্টা করি নিজে কী করলাম তার উপর নজর রাখা। লিও হলেন বিশ্বসেরা ফুটবলার। আমি সেই জায়গায় এই মুহূর্তে সবে মাত্র শুরু করেছি। তাই মেসির সঙ্গে তুলনা করাটা বোধহয় বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এই তুলনাগুলি অনেক সময় এক একজনকে কোনও সাহায্য করে না।” তবে বিশ্ব ফুটবল মহল মনে করছে, ইয়ামাল সবে শুরু করেছেন একটা অধ্যায়। মেসির মতো সেই অধ্যায় তিনি ধরে রাখতে সক্ষম হবেন কিনা সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন। তাই ইয়ামালকে নিয়ে এখনই অনেকে হইচই ফেলতে নারাজ।

ইংল্যান্ড সিরিজে কে এল রাহুলকে অধিনায়ক করা যেতে পারতঃ মঞ্জরেকর
সঞ্জয় মঞ্জরেকর এমনই। কোন কথায় বিতর্ক দানা বাঁধবে, সবসময় সেটাই তিনি খোঁজেন। এবং তাঁকে ঘিরেই বিতর্ক বেড়ে ওঠে। এই